রমনাবাগান থেকে সরানো হতে পারে মোহনার কুমির ‘রাজা’কে। বাগান কর্তৃপক্ষের কাছে কুমিরটি সম্পর্কে রিপোর্ট চেয়েছে রাজ্যের বন দফতর। বর্ধমান বন বিভাগের সহকারী বনাধিকারিক প্রশান্তকুমার রায় বলেন, “ওই রিপোর্ট পেয়ে সেন্ট্রাল জু অথরিটি ঠিক করবে, কুমিরটিকে এখানে আর রাখা হবে কি না। আমরা যত দূর জানি, কুমিরটিকে অন্যত্র পাঠিয়ে দেওয়া হতে পারে।”
বর্ধমানের রমনাবাগান ‘ক্রোকোডাইল এনক্লোজারে’ থাকা রাজা নামে ওই কুমিরের দুরাবস্থা সম্পর্কে গত ৪ জুন আনন্দবাজার পত্রিকায় একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। সেই প্রতিবেদন দেখে চেন্নাইয়ের মামাল্লাপুরমের ক্রোকোডাইল ব্যাঙ্ক ট্রাস্টের প্রাক্তন অধিকর্তা সুব্রত ঘোষ কুমিরটির শারীরিক অবস্থা সম্পর্কে সেন্ট্রাল জু অথরিটি-র কাছে ই-মেল পাঠান। তা পাওয়ার পরেই সেন্ট্রাল জু অথরিটি রাজ্যের বন দফতরকে চিঠি লিখে রাজার সম্পর্কে রিপোর্ট চায়। |
প্রশান্তবাবু বলেন, “কুমিরটির স্বাস্থ্য, শারীরিক গঠন ইত্যাদি সম্পর্কে আমরা রিপোর্ট তৈরি করছি। রমনাবাগানের রেঞ্জ অফিসারকে তা প্রাথমিক ভাবে তৈরি করতে বলা হয়েছে। তবে যেহেতু কুমিরটি জলে থাকে, তাই মাপজোক করতে সমস্যা হচ্ছে। ফলে রিপোর্ট তৈরিতেও দেরি হচ্ছে।’’ কুমিরটি কী সুস্থ না কী অসুস্থ? প্রশান্তবাবুর বক্তব্য, “আমরা পশু চিকিৎসককে দিয়ে রমনাবাগানের সমস্ত পশুর স্বাস্থ্যপরীক্ষা করাই। সংশ্লিষ্ট চিকিৎসককেও কুমিরটি সম্পর্কে রিপোর্ট দিতে বলা হয়েছে। সমস্ত রিপোর্টই রাজ্যের বিশেষ মুখ্য বনপাল এস বি মণ্ডলের কাছে পাঠিয়ে দেব।”
বেশ কিছু ধরেই রমনাবাগানের ক্ষুদ্র চিড়িয়াখানায় একের পর এক পশুপাখির মৃত্য হচ্ছে। চিতার জায়গা শূন্য। এক জোড়া কুমির জলাশয়ে ছাড়া হয়েছিল। কিন্তু সেগুলি মূলত নোনা জলের বাসিন্দা চিড়িয়াখানা সূত্রের খবর। রমনাবাগানের মিঠে জলে থাকতে থাকতে স্ত্রী কুমির ‘রানি’র মৃত্যু হয়। প্রকৃত পরিবেশের অভাবে বেশ কয়েক বার তার ডিমও নষ্ট হয়ে যায়। ভালুককে খাঁচায় বন্দি রাখা যাবে না বলে সেন্ট্রাল জু অথরিটির নির্দেশ থাকলেও রমনাবাগানে এখনও ভালুকের জন্য উন্মুক্ত প্রান্তর তৈরির কাজ শেষ হয়নি। কর্তৃপক্ষের দাবি, অর্থভাবেই সম্প্রসারণের কাজ করা যাচ্ছে না। ফলে ভালুক খাঁচাবন্দিই রয়েছে।
প্রশ্ন হল, নোনাজলের কুমিরদের কেন মিঠে জলে রাখা হয়েছিল? প্রশান্তবাবুর বক্তব্য, “ওই কুমিরগুলি আসলে মোহনায় থাকে। তাই ওদের পক্ষে মিঠে জলেও বেঁচে থাকা সম্ভব, এই চিন্তা থেকেই আমরা পরীক্ষামূলক ভাবে ওই কুমির জোড়াকে মিঠে জলে রেখেছিলাম। তাতে ওরা ভাল রয়েছে কি না, তা বুঝতে পারছি না। এ বার বন বিভাগই ওদের থাকার ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেবে।” |