|
|
|
|
উত্তরাখণ্ডে বাস দুর্ঘটনায় মৃত্যু রাজ্যের পর্যটকের |
নিজস্ব সংবাদদাতা • ডায়মন্ড হারবার |
উত্তরাখণ্ডে বেড়াতে গিয়ে বাস দুর্ঘটনায় মারা গেলেন এ রাজ্যের এক পর্যটক। গুরুতর আহত অবস্থায় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন মৃতের দুই প্রতিবেশী।
সোমবার দুপুরে দুর্ঘটনাটি ঘটে উত্তরাকাশী থেকে গঙ্গোত্রী যাওয়ার রাস্তায় হরশিল জঙ্গলের কাছে। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, মৃতের নাম সুরজিৎ ঘোষ (৪০)। আহতেরা হলেন শৌভিক ভট্টাচার্য ও অমিতাভ বন্দ্যোপাধ্যায়। তিন জনেরই বাড়ি দক্ষিণ ২৪ পরগনার ডায়মন্ড হারবারের রায়নগর গ্রামে। রাজ্যের সুন্দরবন উন্নয়ন দফতরের প্রতিমন্ত্রী শ্যামল মণ্ডল বলেন, “সুরজিতের মৃতদেহ ফিরিয়ে আনা এবং আহত দুই পর্যটকের চিকিৎসার ব্যপারে ওই রাজ্য সরকারের সঙ্গে সব রকম যোগাযোগ রাখা হচ্ছে।” উত্তরাখণ্ডের তফসিলি জাতি ও উপজাতি উন্নয়ন দফতরের প্রতিমন্ত্রী বিজয় মণ্ডল বলেন, “সুরজিৎবাবুর দেহ যত দ্রুত সম্ভব কলকাতায় ফেরত পাঠানোর চেষ্টা করা হচ্ছে।” |
সুরজিৎ ঘোষ |
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, গত শুক্রবার, ৭ অক্টোবর, একাদশীর দিন সকালে কেদারতালে ট্রেকিংয়ের উদ্দেশে বাড়ি থেকে রওনা হন সুরজিৎ, শৌভিক ও অমিতাভ। ১০ অক্টোবর সকালে তাঁরা উত্তরকাশী থেকে বাসে গঙ্গোত্রী যাচ্ছিলেন। দুপুর নাগাদ হরশিল জঙ্গলের কাছে বাসটি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে প্রায় ৭০ ফুট নীচে খাদে পড়ে যায়। স্থানীয় বাসিন্দারাই আহত যাত্রীদের উদ্ধার করে কাছেই সেনাশিবিরে নিয়ে যান। সুরজিৎবাবুর অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় তাঁকে প্রথমে উত্তরকাশীর একটি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। পরে সেখান থেকে দেরাদুন হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে চিকিৎসকেরা তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। |
|
এ দিন ফোনে যোগাযোগ করা হলে শৌভিক বলেন, “বাসে জনা পঞ্চাশ যাত্রী ছিলেন। আমরা পিছন দিকের একটি সিটে বসেছিলাম। গঙ্গোত্রী পৌঁছনোর প্রায় ২৫ কিলোমিটার আগে একটা জায়গায় রাস্তার উপরে রাবিশ ফেলা ছিল। আমাদের বাস সেটা পাশ কাটাতে গিয়ে খাদে উল্টে যায়। আমার বাঁ পায়ে মারাত্মক চোট লাগে। অমিতাভেরও কোমরে চোট লাগে। কিন্তু সুরজিতের আঘাত ছিল গুরুতর। হাসপাতালে নিয়ে গেলেও ওকে বাঁচানো যায়নি।” শৌভিককে প্রাথমিক চিকিৎসার পরে ছেড়ে দেওয়া হলেও অমিতাভ এখনও দেরাদুন হাসপাতালে ভর্তি আছেন।
সুরজিতের মৃত্যুর খবর ডায়মন্ড হারবারের রায়নগরে তাঁর বাড়িতে পৌঁছয় সোমবার সন্ধ্যা নাগাদ। মা, ভাই, স্ত্রী ও ছেলেকে নিয়ে রায়নগরে থাকতেন পেশায় প্রাথমিক শিক্ষক সুরজিৎ। মঙ্গলবার বাড়িতে গিয়ে দেখা গেল, ছেলের শোকে কান্নায় ভেঙে পড়েছেন মা সুলেখাদেবী। ছেলে বিশ্বজিৎকে কোলে নিয়ে স্ত্রী শান্তাদেবীও শোকে পাথর। সুলেখাদেবীর আক্ষেপ, “বলেছিল, কালীপুজোর পরে ফিরবে। কিন্তু আমার ছেলে তো আর ফিরবে না!” |
|
|
|
|
|