এ বার আর্থিক অনিয়মের অভিযোগ উঠল ধনলক্ষ্মী ব্যাঙ্কের বিরুদ্ধে। কেরল ভিত্তিক এই বেসরকারি ব্যাঙ্কের হিসাবের খাতায় গরমিল রয়েছে বলে অভিযোগ আনা হয়েছে ইউনিয়নের তরফ থেকেই। যদিও ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষ এক বিবৃতিতে এই অভিযোপ পুরোপুরি উড়িয়ে দিয়ে বলেছেন, তাঁদের দাখিল করা পরিসংখ্যানের ভিত্তি কী, সংস্থার কাছে তা স্পষ্ট নয়। ব্যাঙ্কের চিফ ফিনান্সিয়াল অফিসার বিপিন কাবরা বলেন, “অভিযোগ সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন।” তবে অল ইন্ডিয়া ব্যাঙ্ক অফিসার্স কনফেডারেশন (এআইবিওসি)-এর আনা এই অভিযোগের জেরে মঙ্গলবার বাজার খোলার পরেই ধনলক্ষ্মী ব্যাঙ্কের শেয়ার দর পড়ে যায় প্রায় ২৪%। এক সময়ে দর নেমে যায় ৫৪.৩০ টাকায়। কিন্তু ব্যাঙ্ক এই গরমিল অস্বীকার করায় দিনের শেষে অবশ্য কিছুটা ওঠে শেয়ার দর। কিন্তু তাও সোমবারের তুলনায় ছিল প্রায় ১০% কম। বাজার বন্ধের সময়ে বম্বে স্টক এক্সচেঞ্জে ধনলক্ষ্মী ব্যাঙ্ক শেয়ারের দাম ছিল ৬৪.৪৫ টাকা। প্রসঙ্গত, ব্যাঙ্কটি দেউলিয়াও হয়ে যেতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছে এআইবিওসি।
রিজার্ভ ব্যাঙ্ককেও সতর্ক করেছে এআইবিওসি। গত তিন বছর যাবৎ কর্তৃপক্ষের কাজকর্ম এবং ব্যাঙ্কটির পরিচালনা নিয়ে পূর্ণাঙ্গ তদন্তের দাবি তুলেছে এআইবিওসি-র কেরল রাজ্য কমিটি। ত্রিশূর ভিত্তিক ব্যাঙ্কটির পরিচালনায় অদক্ষতা ও বেহিসেবি খরচের অভিযোগ এনেছে তারা। যেমন, এআইবিওসি জানিয়েছে, কেরলে গ্রামোন্নয়ন, কৃষি ও ক্ষুদ্রশিল্পের উন্নয়ন খাতে ঋণ দিতে বরাদ্দ টাকা ঋণ হিসাবে বণ্টন করা হয়েছে অন্য রাজ্যের বৃহৎ সংস্থাকে, যাদের বেশির ভাগই একচেটিয়া কারবারি। ম্যানেজারদের হাত থেকে ঋণ বণ্টনের অধিকার কেড়ে নেওয়া হয়েছে বলেও অভিযোগ ইউনিয়নের। এমনকী অগ্রাধিকার ক্ষেত্রে ঋণদানও বন্ধ।
এআইবিওসি একটি হিসাব দাখিল করে জানিয়েছে, ব্যাঙ্কের ঋণ-আমানতের অনুপাত নেমেছে ৩৬ শতাংশে, যেখানে জাতীয় গড় ৭৭%। এআইবিওসি-র সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট পিভি ম্যাথু ও রাজ্য সভাপতি পিভি শিবশঙ্কর পিল্লাইয়ের অভিযোগ, ব্যাঙ্কের উন্নতি নিয়ে কর্তৃপক্ষ মিথ্যা দাবি করছেন। ২০১১-’১২-এর প্রথম ত্রৈমাসিকে সংস্থার মুনাফা মাত্র ৩ কোটি টাকা বলে জানান তিনি।
ইউনিয়নের অভিযোগ বেআইনি লেনদেনের লক্ষ্যে ব্যাঙ্ক ইস্যু করেছে ২৫০০ কোটি টাকার সার্টিফিকেট অফ ডিপোজিট। ১৫০০ কোটি টাকার আন্তঃ-ব্যাঙ্ক আমানতও ইস্যু করা হয় একই উদ্দেশ্যে। কাবরা অবশ্য এই অভিযোগ অস্বীকার করে জানান, তাঁদের সার্টিফিকেট অফ ডিপোজিট মাত্র ১২০০ কোটি টাকার, আন্তঃ-ব্যাঙ্ক আমানত ১১০০ কোটি।
সেনসেক্সও মঙ্গলবার ২০.৭৬ পয়েন্ট পড়ে থেমেছে ১৬,৫৩৬.৪৭ অঙ্কে। ডলারে টাকা পড়েছে ৩৫ পয়সা। |