রাজ্যের রেশন ব্যবস্থায় আমূল সংস্কার আনতে একটি বিশেষজ্ঞ কমিটি গড়ছে রাজ্য সরকার। ভুয়ো রেশন কার্ড বাতিল করার পাশাপাশি আধুনিক পরিকাঠামো এবং স্বচ্ছ ব্যবস্থার মাধ্যমে গরিব, মধ্যবিত্ত মানুষের কাছে খাদ্যপণ্য বণ্টনের নতুন ‘মডেল’ গড়ে তোলাই হবে ওই কমিটির কাজ। যা আবার খতিয়ে দেখে চূড়ান্ত মতামত জানাবে সাত সদস্যের পৃথক একটি কমিটি।
রাজ্যের খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক বলেন, “গণবণ্টন ব্যবস্থায় রাজ্য সরকার কোটি কোটি টাকা ভর্তুকি হিসেবে ব্যয় করলেও, বহু ক্ষেত্রেই দেখা যাচ্ছে সঠিক মানুষের কাছে খাদ্যশস্য পৌঁছাচ্ছে না। রয়েছে লক্ষ-লক্ষ ভুয়ো রেশন কার্ড। এই ব্যবস্থা সম্পূর্ণ ভেঙে ফেলে যাতে স্বচ্ছ গণবণ্টন ব্যবস্থা গড়ে তোলা যায়, তার জন্যই কমিটি গঠনের সিদ্ধান্ত।”
রাজ্য সরকার যে কমিটি গঠন করছে, তাতে চেয়ারম্যান হচ্ছেন মুখ্যসচিব সমর ঘোষ। এ ছাড়াও রাজ্যের খাদ্য, অর্থ, পূর্ত, তথ্যপ্রযুক্তি-সহ অন্যান্য দফতরের সচিব পর্যায়ের কর্তাদেরও কমিটিতে রাখা হয়েছে। এই কমিটির সুপারিশগুলিকে আবার খতিয়ে দেখবেন খাদ্যমন্ত্রীর তত্ত্ববধানে পৃথক একটি কমিটি।
রাজ্যের রেশন ব্যবস্থায় এই মুহূর্তে বছরে ২,৪৪০ কোটি টাকা ভর্তুকি দেওয়া হয়। এর মধ্যে কেন্দ্রের ভর্তুকির পাশাপাশি রাজ্যকেও একটা বড় অংশ ব্যয় করতে হয়। কিন্তু খাদ্য দফতর দেখেছে, বহু ক্ষেত্রেই গরিব, দুঃস্থ মানুষের কাছে সরকারি বরাদ্দের খাদ্যশস্য পৌঁছাচ্ছে না। রয়েছে লক্ষ-লক্ষ ভুয়ো রেশন কার্ড। কোথাও আবার মাঝপথে উধাও হয়ে যাচ্ছে চাল, ডাল, চিনি। এই রেশন ব্যবস্থাকেই ঢেলে সাজতে চাইছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার।
মূলত তথ্যপ্রযুক্তি পরিষেবাকে কাজে লাগিয়েই গণবণ্টন ব্যবস্থায় আমূল সংস্কার আনার কথা ভাবা হচ্ছে। যার অন্যতম একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হচ্ছে, প্রতিটি রেশন কার্ড সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য-সহ একটি আধুনিক তথ্যভাণ্ডার গড়ে তোলা। যাতে এক নজরেই রাজ্যের গণবণ্টন ব্যবস্থার সামগ্রিক চিত্রটা চোখের সামনে ফুটে ওঠে। এ ছাড়াও কাদের, কী পদ্ধতিতে নতুন রেশন কার্ড দেওয়া হবে, তার একটি আধুনিক ব্যবস্থা গড়ে তোলার পাশাপাশি ভুয়ো রেশন কার্ড চিহ্নিতকরণ হবে রাজ্যের প্রধান লক্ষ্য। নতুন ব্যবস্থায় খাদ্য দফতর অন্য যে দু’টি উপর জোর দিচ্ছে সেগুলি হল প্রতিটি রেশন দোকানের বণ্টন এলাকা কমিয়ে আনা, যাতে মানুষ এক কিলোমিটারের মধ্যেই পরিষেবা পেতে পারেন। এবং পাঁচ দিন রেশন দোকান খুলে রাখা। |