নিজস্ব সংবাদদাতা • রঘুনাথগঞ্জ |
সিপিএমের দুই সদস্যের দলত্যাগের জেরে রঘুনাথগঞ্জ ২ ব্লকের তেঘরি গ্রাম পঞ্চায়েতে অনাস্থায় অপসারিত হলেন দলেরই প্রধান কোরবান আলি। সোমবার ১৩ সদস্যের ওই পঞ্চায়েতে ৭-০ ভোটে অপসারিত হলেন সিপিএমের ওই প্রধান। বামফ্রন্টের কোনও সদস্যই অবশ্য এই দিন অনাস্থা সভায় উপস্থিত ছিলেন না। কংগ্রেস এই অনাস্থা এনেছিল গত ২০ সেপ্টেম্বর। তার ভিত্তিতেই সোমবার এই অনাস্থা সভা ডাকেন বিডিও পার্থপ্রতিম সাধুখাঁ। তিনি বলেন, “অনাস্থা সভা নির্বিঘ্নেই সম্পন্ন হয়েছে। পঞ্চায়েত বিধি অনুযায়ী ৫ দিনের মধ্যেই পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
২০০৮ সালে তেঘরি গ্রাম পঞ্চায়েতে সিপিএম ৭টি ও সিপিআই ১টি আসনে জয়ী হয়। কংগ্রেস পাট ৫টি আসন। গঠিত হয় বামফ্রন্টের বোর্ড। প্রধান হন কোরবান আলি। কিন্তু সেপ্টেম্বরে সিপিএম ছেড়ে কংগ্রেসে যোগ দেন মসিউর রহমান ও মহম্মদ জাকারিয়া শেখ। এরপরেই কোরবান আলির বিরুদ্ধে অনাস্থা আনা হয়। মসিউর রহমানের দাবি, “পঞ্চায়েতে স্বেচ্ছাচারিতা চলছিল। সদস্যদের কোনও মর্যাদা ছিল না। দলের নেতাদের সে কথা বহু বার বলেছি। তবু কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। তাই আমরা দল ছেড়ে দিলাম। কংগ্রেসে যোগ দিয়েছি।”
অপসারিত প্রধান কোরবান আলি বলেন, “দুর্নীতিমুক্ত ও স্বচ্ছ ভাবে প্রশাসন চালাতে গিয়ে বাধা আসছিল। অন্যায়ের সঙ্গে আপোস করতে চাইনি। তাই এই দলত্যাগ ও অপসারণ।”
পঞ্চায়েত বিধি অনুযায়ী দলবদলের ক্ষেত্রে এক তৃতীয়াংশ সদস্যের সমর্থন থাকতেই হবে দল বদলে। কিন্তু এ ক্ষেত্রে সাত জনের মধ্যে ২ জন সদস্য সিপিএমের প্রতীকে জয়ী হয়েও কংগ্রেসে যোগ দেওয়ায় তাঁদের সদস্যপদ বহাল থাকা নিয়েও সংশয় শুরু হয়েছে। সিপিএমের জেলা কমিটির সদস্য সোমনাথ সিংহরায় বলেন, “দু’দিনের মধ্যেই ওই দলত্যাগী দুই সদস্য মসিউর রহমান ও মহম্মদ জাকারিয়া শেখের সদস্যপদ খারিজ করার জন্য নিয়ম মেনে বিডিও-র কাছে আবেদন করবে দল।” তবে কংগ্রেসের বিধায়ক ও ব্লক কংগ্রেসের সভাপতি আখরুজ্জামান বলেন, “পঞ্চায়েত বিধি নিয়ম মেনেই দলত্যাগ করেছেন ওই দুই সদস্য। এই ব্যাপারে তাঁদের দলত্যাগের কথা বিডিওকে জানানোও হয়েছে। আসলে ক্ষমতাচ্যুত হয়ে এখন ঘুর পথে পঞ্চায়েত দখল করতে চাইছে সিপিএম।” বিডিও-র বক্তব্য, “এই নিয়ে কোনও অভিযোগ জমা পড়েনি। পড়লে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।” জেলা পঞ্চায়েত দফতরের এক কর্তা কিন্তু জানান, ৭ জনের মধ্যে কমপক্ষে তিন জনকে দলত্যাগ করতে হত। এক্ষেত্রে তা হয়নি যখন তখন বিডিও আইন মেনেই ব্যবস্থা নেবেন। |