|
|
|
|
প্রবন্ধ ১... |
শুধু প্রণিপাতে নয়, পরিপ্রশ্নেও উদ্ধার আছে |
স্বামী বিবেকানন্দের (১৮৬৩ - ১৯০২) দেড়শোতম জন্মবার্ষিকীর
আয়োজন শুরু হয়েছে। বিদ্বৎসমাজে তাঁকে নিয়ে যে বিদগ্ধ আলোচনা,
তার সঙ্গে আমাদের আর একটু
ভাল করে পরিচিত হওয়া জরুরি নয় কি? আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায় |
স্বামী বিবেকানন্দের দেড়শোতম জন্মবার্ষিকী পালনের আয়োজন শুরু হয়েছে। সরকারি স্তরে এবং রামকৃষ্ণ মিশনের পরিসরে ইতিমধ্যেই এই প্রসঙ্গে কিছু কর্মসূচির খসড়া দেখা যাচ্ছে। তবে বৃহত্তম নাগরিক সমাজ বা বুধমণ্ডলী ও মিডিয়া এই উপলক্ষে ঠিক কী ভাবে ভাববেন, তা স্বভাবতই এখনও স্পষ্ট নয়। এটা প্রত্যাশিত ও সঙ্গত, কারণ সমাজ ও বিপ্রগণ বহু স্বরেই কথা বলেন, কোনও বিশেষ সূত্রে তাঁরা সহসা একটি পরিকল্পিত প্রকল্পে সমবেত হবেন, এমনটি ভাবা উচিত হবে না।
তবুও এই প্রাথমিক স্তরেই একটি উদ্বেগের কারণ দেখা দিয়েছে। মিডিয়ায়, বিশেষত ইলেকট্রনিক সংবাদমাধ্যমে, ইতস্তত যে আলোচনার সূত্রপাত হয়েছে, তাতে যেন একটু অচিন্তিত মুগ্ধতার সুর বেশি দেখছি। চতুর্দিকে দুর্বিপাক, তার মধ্যে অমলিন দাঁড়িয়ে আছেন এক সনাতন সন্ন্যাসী এই মূর্তি নির্মিত হচ্ছে। সন্দেহ করি, এই একমাত্রিক নির্মিতিতে একটু উদাসীনতা আছে। একস্বর মোহ যেন বহুস্বর বিভঙ্গকে না হারিয়ে দেয়, সেই মনোযোগী সতর্কতা দাবি করব। বিশ্ববিদ্যালয়ের সিলেবাসে, পত্র-পত্রিকার পর্যালোচনায়, টিভি পর্দার বৈঠকে সর্বত্র চাইব আর একটু বেশি ঐতিহাসিকতা, ভাঙাভাঙি, পরিপ্রশ্ন। মনে রাখা দরকার, শুধু প্রণিপাতে ও সেবায় নয়, পরিপ্রশ্নেও উদ্ধার আছে।
লক্ষণীয় ব্যাপার হল, গত দুই দশকে শ্রীরামকৃষ্ণ-বিবেকানন্দ আন্দোলন নিয়ে অ্যাকাডেমিক মহলে কিন্তু অভিনব লেখালেখি হয়েছে। আগে মেনস্ট্রিম পণ্ডিতরা স্বামীজির যে ছবি আঁকতেন, সে ছবি এক জাতীয়তাবাদী বীর সন্ন্যাসীর। অকুতোভয়, তেজস্বী, দেশপ্রেমী, অটল ও ধীরোদাত্ত, সর্বজীবে তাঁর সমানুকম্পা। নিটোল সে ছবি, জনজীবনে সেই ছবিরই নিঃসপত্ন প্রভাব, কিন্তু পুনরাবৃত্ত বিগ্রহ হয়তো বা কুলুঙ্গিতেই তোলা থাকত। আমরা যারা রামকৃষ্ণ মিশনের ছাত্র, তাদের মনের মধ্যে বোধহয় দুটো খোপ হয়ে গিয়েছিল। একটা খোপে বাইরের রাজনৈতিক-সামাজিক বারমহল, সেখানে তুমুল আন্দোলন চলে। আর একটা খোপে অন্দরের নিভৃত স্বামীজি। তাঁকে পূজার ছলে বুঝি বা ভুলেই ছিলাম। নব্বইয়ের দশকের গোড়া থেকে নানা রকম অন্য ঘরানার ঐতিহাসিক এসে পুরাতন বিগ্রহকে অনেক ভাবে গড়াপেটা করলেন। আমাদের অনেকের মনে হয়েছে, তাতে মূর্তি আরও নতুন রং পেয়েছে। কিন্তু এই নবকলেবর দেবতা এখনও পর্যন্ত পপুলার ডিসকোর্সে তেমন জায়গা পাননি। সার্ধশতবর্ষে জনজীবনে এই সব নবীনতাকে আহ্বান করা হোক। ভক্তি আবার পরীক্ষা দিক। |
|
যে প্রবন্ধটি পড়ে রামকৃষ্ণ-বিবেকানন্দ আন্দোলনের সমকালীন রাজনৈতিক তাৎপর্য সহসা অনেকটা উন্মুক্ত লেগেছিল, সেটি লিখেছিলেন পার্থ চট্টোপাধ্যায় (সাবঅলটার্ন স্টাডিজ, সপ্তম খণ্ড, ১৯৯২)। উনিশ শতকের দ্বিতীয়ার্ধে ক্রমশ-হারতে-থাকা-বাঙালির কাছে যুক্তি হয়ে উঠেছিল কারাগার, বাহির হয়ে দাঁড়াচ্ছিল বধ্যভূমি, কর্মের প্রতিশব্দ ছিল পরাধীনতা এবং জ্ঞানচর্চাকে মনে হচ্ছিল উত্তরোত্তর বন্ধ্যা। যেহেতু বৈষয়িক কারণেই ক্লেশ, অতএব কামিনী-কাঞ্চন যেন পরিহার্য। গ্লানির বাহির থেকে আধ্যাত্মিক অন্দরে সেঁধিয়ে যাওয়ার তাড়নাতেই কথামৃতর নির্মিতি ও জনপ্রিয়তা। দক্ষিণেশ্বরে যে নরেন্দ্র ছুটে যেতেন, তিনি আমাদেরই এক কাতর পূর্বজ, যিনি তাঁর সমকালীন সামূহিক আত্মধিক্কারকে একটা পৌরুষের পোশাক পরিয়ে, জাতিকে উদ্বুদ্ধ করতে চেয়েছিলেন। উপনিবেশের বাঙালি ভদ্রলোক আপিসে নিম্নবর্গীয়, অন্দরে উচ্চতাভিলাষী কথামৃত তাঁর সত্তাসংকটের সমাধান।
১৯৯২ সালেই বেরিয়েছিল সুমিত সরকারের প্রবন্ধ, ‘কলিযুগ, চাকরি অ্যান্ড ভক্তি’। তাতেও শ্রীরামকৃষ্ণ ও কথামৃত। ভারতে বিশ্বায়নের তথা নতুন উদারীকরণের প্রথম বছরেই কেন পার্থ-সুমিতদের এই সব প্রসঙ্গ বার বার মনে পড়েছিল, সে একটা কৌতূহলোদ্দীপক বিষয় হতে পারে। হয়তো হিন্দুত্বের ক্রমিক উত্থানও একটা প্রেক্ষাপট ছিল। তবে, কেন জানি না, কথামৃতর শৈলী পরীক্ষা করতে গিয়ে পার্থ-সুমিতরা দক্ষিণ এশিয়ার অগ্রজ সুফি সন্তদের কথা-পরম্পরার উল্লেখ করেননি। গুরুর পদপ্রান্তে বসে শিষ্য হুবহু লিপিবদ্ধ করে যাবে গুরুর বাণী, লীলা ও রঙ্গের কথা ইসলাম ও ফার্সি সংস্কৃতির সূত্রে আমরা এই ঘরানার সঙ্গে পরিচিত ছিলাম। শ্রীম-র প্রেক্ষিতে জনসন-বসওয়েলের কথা বলা হয়, অথচ দেশজ এই গুরু-শিষ্য সম্বাদের ঐতিহ্য অনুল্লিখিত থাকে। ইসলাম থেকে বৈষ্ণব চরিতামৃতগুলি হয়ে রামকৃষ্ণ কথামৃতের ধারা এই ভাবে দেখলে মহেন্দ্রনাথ গুপ্ত আগামী প্রজন্মের ছাত্রদের কাছে আরেকটু প্রাসঙ্গিক হবেন না? আবার ইসলাম তার উত্তরাধিকার পেয়েছিল শেষ পর্যন্ত খানিকটা প্লেটো থেকে, যিনি নির্মাণ করেছিলেন সক্রেটিসকে। হিন্দুত্বের অ-হিন্দু পূর্বকথা স্মর্তব্য।
সুমিত-পার্থদের পর দ্বিতীয় যে আর একটি ধারার গবেষকরা রামকৃষ্ণ-বিবেকানন্দে নতুন করে আগ্রহ দেখাচ্ছেন, তাঁদের আমরা মোটের ওপর নারীবাদী বলতে পারি। রজোগুণের ওপর গুরুত্ব দেওয়া, বীর্যধারণ ও ব্রহ্মচর্য অনুশীলনে ঝোঁক এবং এক ধরনের শৌর্য-অভিমান, স্বামীজির লেখায় এই সব উপাদান লক্ষ করে এঁরা বলছেন, আক্রমণাত্মক বৈরাগ্য আসলে একটা পৌরুষ-প্রকল্প। সাহেবরা বাঙালি বাবুদের মেয়েলি বলে উপহাস করত, অভীমন্দ্রে বঙ্গীয় যুবার পুরুষালি উত্তর। জ্ঞান, ক্ষমতা ও পৌরুষের সমীকরণ একটি বিশেষ রাজনৈতিক নির্মিতি, সংগঠিত সন্ন্যাসও তা-ই। ‘দি ফ্রেল হিরো অ্যান্ড ভিরাইল হিস্ট্রি’ বইয়ে ইন্দিরা চৌধুরির বক্তব্য হল, বঙ্কিমের সন্তানদল এবং বিবেকানন্দের সংঘে একই গল্প: সে গল্প প্রতিঘাতী পুরুষের আধ্যাত্মিক রাজনীতির গল্প। ১৯৯৮ সালে প্রকাশিত এই বইটিও থিসিস হিসেবে লন্ডন বিশ্ববিদ্যালয়ে জমা পড়েছিল ১৯৯২ সালে। পরে ২০০৪ সালে কানাডায় ইয়র্ক বিশ্ববিদ্যালয়ে চন্দ্রিমা চক্রবর্তী তাঁর গবেষণাপত্রে বৈরাগ্যবাদী পুরুষ জাতীয়তাবাদের পরম্পরায় রবীন্দ্রনাথের গোরাকেও বিশ্লেষণে এনেছেন। ২০০৬ সালে ডিউক বিশ্ববিদ্যালয়ের জার্নালে দুই গবেষক, শুভ বসু ও সিকতা ব্যানার্জি দেখিয়েছেন, পরাজিত জাতির আহত পৌরুষ নির্মাণ প্রকল্প জারি ছিল আয়ার্ল্যান্ড, প্যালেস্তাইন এবং সাম্রাজ্যের অন্যত্রও। বস্তুত, যেহেতু ব্রিটিশ সাম্রাজ্যবাদ নিজেকে জ্ঞান-ক্ষমতা-পৌরুষের অক্ষরেখায় সাজিয়েছিল, সেহেতু প্রতিবাদী জাতীয়তাবাদও অনেক দূর পর্যন্ত তৈরি হয়ে যায় সেই অক্ষেরই সমান্তরালে।
বীর্যবান হওয়া, ব্রহ্মচারী হওয়া, নির্ভীক হওয়া, দেশপ্রেমী হওয়া ও প্রকৃত পুরুষ হওয়া তা হলে ধীরে ধীরে পদানত জাতির কাছে সমার্থক হয়ে ওঠে। আধ্যাত্মিক আত্ম-অনুশীলন থেকেই সার্থক পৌরুষের জন্ম, আবার সার্থক পৌরুষই পারে নৈতিক প্রতিবাদে সফল হতে। তা হলে তো গাঁধীজিও এই একই ব্রহ্মচর্য-প্রকল্পের ফসল? ১৯৯২ সালে এক মার্কিন বিশ্ববিদ্যালয়ে দক্ষিণ এশিয়া সংক্রান্ত আলোচনাসভায় অন্তত এই রকমই যুক্তি সাজিয়েছেন জোসেফ অলটার। তাঁকে অনুসরণ করে বোধহয় বলা যেতে পারে, বিবেকানন্দই গাঁধীর প্রকৃত পূর্বসূরি। এত কাল পাঠ্যপুস্তকে পড়েছি, ‘মডারেট’দের লক্ষ্য (সীমিত স্বরাজ) ও ‘এক্সট্রিমিস্ট’দের উপায় (অসহযোগ) মিলিয়ে গাঁধীর পথ চলা শুরু। সার্ধশতবর্ষে কি স্বামীজিকে গাঁধীর আসল রাজনৈতিক অগ্রজ বলে দেখব? না কি, গাঁধীর মধ্যে দেখব শ্রীরামকৃষ্ণকে, কস্তুরবার মধ্যে শ্রীমা’কে এবং নেহরুর মধ্যে বিবেকানন্দকে?
এই বহুচর্চিত পৌরুষ বা পুরুষত্ব আবার খুবই গোলমেলে বিষয় বলে ইদানীং দেখা যাচ্ছে। যে দেশে অর্ধনারীশ্বর খুব পরিচিত ধারণা, সে দেশে লিঙ্গ-পরিচিতির বহুমাত্রিক যোজনাও কিছু অজ্ঞাতপূর্ব তত্ত্ব নয়। গাঁধীর ব্যক্তিগত জীবনচর্যা নিয়ে যেমন হরেক চর্চা আছে, শ্রীরামকৃষ্ণের তন্ত্রসাধনা নিয়েও তেমনই সাম্প্রতিক বছরগুলিতে অনেক সমাজতাত্ত্বিক-মনোবৈজ্ঞানিক লেখালেখি হয়েছে। নিম্নবর্গীয় ও নারীবাদী লেখালিখির পাশাপাশি এই তৃতীয় জাতের লেখারও কিছু পাঠক আছে। জেফ্রি কৃপালের বিতর্কিত বই ‘কালী’জ চাইল্ড’ (শিকাগো বিশ্ববিদ্যালয়, ১৯৯৫) এবং নরসিংহ শীলের এই ঘরানার লেখাপত্র নিয়ে ইংরেজি সংবাদপত্রে তুমুল লড়াইয়ের সাক্ষ্য দেখি, কিন্তু বঙ্গভাষী জনপ্রিয় মাধ্যমগুলিতে এই সব প্রসঙ্গে হিরণ্ময় নীরবতা। ভুললে চলবে না, এমনকি শ্রীরামকৃষ্ণপন্থী সন্ন্যাসীরাও (স্বামী আত্মজ্ঞানানন্দ, প্রব্রাজিকা বজ্রপ্রাণা প্রমুখ) মাঝে মাঝে এই সব বিতর্কে যোগ দিয়েছেন, আলোচনাকে সমৃদ্ধ করেছেন। তন্ত্রের নিভৃত ব্যক্তিচর্যার অনুপুঙ্খে যাওয়ার সংস্কার আমাদের নেই, কিন্তু ব্রায়ান হ্যাচার-এর মতো মধ্যপন্থী বিদগ্ধরাও বলছেন যে, শ্রীরামকৃষ্ণ-বিবেকানন্দকে নতুন করে পাওয়ার জন্য কোথাও কোথাও এই সব দৃষ্টিভঙ্গি কাজে লেগে যায় (দ্রষ্টব্য: হ্যাচারের ‘কালী’জ প্রবলেম চাইল্ড’, ১৯৯৯)।
ইতিমধ্যে শ্রীমা সম্পর্কেও অচিন্ত্যপূর্ব আলোচনা শুরু হয়েছে। বিতর্কিত নরসিংহ শীল তাঁর ‘ডিভাইন ডাওএজার’ (লন্ডন, ২০০৩) বইয়ে সারদামণি চট্টোপাধ্যায়ের মানবিক মূর্তিটির পুনঃপ্রতিষ্ঠায় আগ্রহী। মায়ের ওপর যে দেবীত্ব ‘আরোপ’ করা হয়েছিল, তার আড়াল থেকে বের করে আনা সম্ভব এক জন সমকালীন নারীর করুণ মুখ, শীলের প্রতিপাদ্য খানিকটা এই রকম। ত্রিশিয়া নিকোলে গুলে-র গবেষণায় (২০০৯) সিদ্ধান্ত হল, মা সারদার সংঘজননী হয়ে ওঠাও একটি সুচিন্তিত উদ্যোগ। ক্রিশ্চিয়ান মিশনারি বা পণ্ডিতা রমাবাইদের লেখায় যখন ভারতীয় বিধবাদের দুর্গতির ছবি ফুটে উঠছিল, তখন পশ্চিমের (বিশেষত বিদুষী মেমসাহেব ভক্তদের) কাছে শ্রীমা’কে ক্রমশ সচেতন ভাবে উপস্থাপিত করা হয়েছিল একটি ভারতমাতা প্রকল্প হিসেবে। নারীদৃষ্টি যত প্রবল হচ্ছে, মায়ের উপর গবেষকদের দৃষ্টি-সন্নিপাত তত বাড়বে বলে মনে হয়। মীরা খাণ্ডেলওয়াল (উইমেন ইন অকার রোবস, নিউ ইয়র্ক, ২০০৪) প্রমুখ গবেষিকারা ইতিমধ্যেই গৈরিকবসনা সন্ন্যাসিনীদের নিয়ে মনোযোগী অধ্যয়ন শুরু করেছেন।
সার্ধশতবর্ষে স্বামীজিকে স্মরণ করে ভারতীয় পুরুষ ও নারীদের বৈরাগ্য প্রকল্পের একটি সামূহিক ইতিহাস প্রয়োজন। ইউরোপে মনস্বী দার্শনিক মিশেল ফুকোর বড় কাজ রয়েছে এই প্রসঙ্গে। ভারতে নেই। এই দেশে সন্ন্যাস ও কৌমার্যের চিরকালীন আবেদন কোথায়, প্রাক্-আধুনিক বৌদ্ধ সংঘ থেকে আধুনিক ‘অনুশীলন’ ছুঁয়ে উত্তর-আধুনিক বিবাগীপনা পর্যন্ত ধারাবাহিক বিভিন্ন বৈরাগ্য-প্রকল্পের উপাদান ও শক্তিগুলি কী, তা এখনও সবটা ধরা যায়নি। হাল আমলের নানা লেখা থেকে তিল-তিল করে সূত্র সংগ্রহ করে, গ্রহণ-বর্জনের মধ্য দিয়ে সেই বড় ছবিটার বিভিন্ন ব্যঞ্জনাকে বুঝতে হবে। নইলে শ্রীরামকৃষ্ণ-শ্রীমা-বিবেকানন্দ হয়তো ভক্তের অন্দরমহলেই থেকে যাবেন, বাইরের সমাজে তাঁদের সমগ্র বর্ণময়তায় ও সম্পূর্ণ তাৎপর্যে পাব না।
সার কথা, শ্রীরামকৃষ্ণ-শ্রীমা-বিবেকানন্দ আন্দোলনের ক্ষেত্রে বিশেষজ্ঞ পাণ্ডিত্যের সঙ্গে বৃহত্তর জনজীবনের পুনরায় সংযোগসাধন প্রয়োজন। মনে হতে পারে, হালের গবেষকরা অনেক সময় অতি-সরলীকরণ ও অতিকথনের আশ্রয় নিচ্ছেন। তবুও বহুস্বর স্বাগত। যত মত, তত পথ।
|
ঋণসূত্র: মিলিন্দ বন্দ্যোপাধ্যায়, হাইডেলবার্গ বিশ্ববিদ্যালয় |
|
|
|
|
|