ব্যক্তিগত আক্রমণের ফল ভাল হয়নি এর আগে। কৌশল পাল্টে কংগ্রেস এ বার অণ্ণা হজারে ও তাঁর সহযোগীদের ‘বিজেপি তথা আরএসএসের মুখোশ’ বলে ধারাবাহিক প্রচারে নেমেছে।
আগামী রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে অণ্ণাই বিজেপির প্রার্থী বলে কাল কটাক্ষ করেছিলেন কংগ্রেসের দিগ্বিজয় সিংহ। এর পর আজ আবার কংগ্রেস মুখপাত্র মণীশ তিওয়ারি বলেন, “বিজেপি ধোয়া তুলসী পাতা নয়। কিন্তু হিসারে উপনির্বাচনে যে ভাবে অণ্ণা ও তাঁর সহযোগীরা বেছে বেছে কংগ্রেসের বিরুদ্ধে প্রচারে নেমেছে, তাতে তাঁদের উদ্দেশ্য নিয়ে সন্দেহ তৈরি হয়েছে।” অণ্ণা নিজে অবশ্য সঙ্ঘ-ঘনিষ্ঠতার অভিযোগ খারিজ করে দিয়েছেন। যদিও সরাসরি কংগ্রেসের বিরোধিতা করা নিয়ে মতবিরোধ তৈরি হয়েছে খোদ অণ্ণা শিবিরেই।
উত্তরাখণ্ডে ভজন লালের মৃত্যুতে শূন্য হওয়া হিসার লোকসভা কেন্দ্রের উপনির্বাচনে এখন কংগ্রেসের বিরুদ্ধে সরাসরি প্রচারে নেমেছেন অণ্ণা ও তাঁর সহযোগীরা। কংগ্রেসকে মাঠে নেমে মোকাবিলা করতে হচ্ছে এর। কংগ্রেস শীর্ষ সূত্রে বলা হচ্ছে, কংগ্রেসের এখন মূল কৌশলই হল, অণ্ণার সঙ্গে বিজেপি ও আরএস এসের ঘনিষ্ঠতা নিয়ে নিয়মিত ভাবে প্রশ্ন তোলা। সেই অবস্থায় নিরাপদ দূরত্ব রাখতে অণ্ণা ও তাঁর সমর্থকরা যেমন বিজেপির সমালোচনা করতে বাধ্য হবেন। তেমনই বিতর্কে জড়িয়ে অণ্ণা বেফাঁস মন্তব্য করে বসলে ফায়দা কংগ্রেসেরই। অণ্ণা রাজনৈতিক বিতর্কে জড়ালে তাঁর বিশ্বাসযোগ্যতা নিয়েও প্রশ্ন উঠবে। কংগ্রেস সূত্রের খবর, অণ্ণাকে বিতর্কে জড়াতে কাল বা পরশু তাঁকে একটি খোলা চিঠিও লিখবেন দিগ্বিজয় সিংহ।
ভোট রাজনীতির ময়দানে নেমে এ ভাবে কোনও দলের বিরোধিতা করা নিয়ে মতান্তর দেখা দিয়েছে খোদ অণ্ণা শিবিরেই। অণ্ণার সহযোগী তথা সুপ্রিম কোর্টের প্রাক্তন বিচারপতি সন্তোষ হেগড়ে আজ বলেন, “কোনও একটি রাজনৈতিক দলের বিরুদ্ধে প্রচারে নামা অণ্ণা শিবিরের উচিত হয়নি। সব দলেই ভাল ও সৎ মানুষ আছেন। তাই কোনও রাজনৈতিক দলকে আক্রমণ করাটা ঠিক নয়। কংগ্রেস শব্দটা ব্যবহার করাও উচিত নয়। আমি এর বিরুদ্ধে।” হিসারের উপনির্বাচনের আগে অণ্ণা এক ভিডিও বার্তায় কংগ্রেসকে পরাস্ত করতে চেয়ে ভোটারদের আবেদন জানান। সে প্রসঙ্গেই কর্নাটকের প্রাক্তন লোকায়ুক্ত হেগড়ে বলেন, “এ ভাবে হিসারের রাজনীতিতে অংশ নেওয়ার ফলে দুর্নীতির বিরুদ্ধে অণ্ণার লড়াই নিয়েও প্রশ্ন উঠতে পারে।”
এরই মধ্যে অণ্ণা আজ জানান যে, তাঁদের আন্দোলন কোনও ভাবেই কোনও রাজনৈতিক দলের মদতপুষ্ট নয়। তাঁর কথায়, “এই সব অভিযোগের কোনও সত্যতা নেই। আমাদের লড়াই দুর্নীতির বিরুদ্ধে। জনগণের জন্য আমাদের আন্দোলন। জন লোকপাল বিল পাশ করানোই আমাদের প্রধান লক্ষ্য। কোনও রাজনৈতিক দলের সঙ্গে আমাদের কোনও সম্পর্ক নেই।” দিগ্বিজয় সিংহ কাল অণ্ণাদের ‘কংগ্রেস-বিরোধী দলগুলির মুখোশ’ আখ্যা দিয়েছিলেন। আজ হিসারে এক জনসভায় সেই দাবি উড়িয়ে দিয়ে অণ্ণার সহযোগী অরবিন্দ কেজরিওয়াল জানান, ভোটের জন্য নয়, তাঁরা সাধারণ মানুষের জন্য রাজনীতি করছেন। |