টু-জি কেলেঙ্কারিতে নাম জড়ানোয় কেন্দ্রীয় বস্ত্রমন্ত্রীর পদ থেকে ইস্তফা দিতে হয়েছিল আগেই। এ বার ডিএমকের প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী দয়ানিধি মারানের বিরুদ্ধে ফৌজদারি ষড়যন্ত্রের অভিযোগ এনে এফআইআর করল সিবিআই। এফআইআর হয়েছে সান টিভির কর্তা, দয়ানিধির দাদা কলানিধির বিরুদ্ধেও। আজ সকালে চেন্নাই ও দিল্লিতে দুই ভাইয়ের বাড়ি এবং অফিসে তল্লাশিও চালিয়েছে সিবিআই। টু-জি কেলেঙ্কারিতে ইতিমধ্যেই জেলে যেতে হয়েছে ডিএমকেরই প্রাক্তন টেলিকমমন্ত্রী এ রাজা এবং করুণানিধি-কন্যা কানিমোঝিকে।
রাজনৈতিক ভাবে এই পরিস্থিতিতে মূল প্রশ্নটিই হল, কংগ্রেসের সঙ্গে জোট বজায় রাখার প্রশ্নে এর পর কী অবস্থান নেবেন করুণানিধি? মেয়ের পর দুই নাতিও যদি গ্রেফতার হয়, তবে কি জোট ছিন্ন করবেন অশীতিপর ডিএমকে-প্রধান?
|
|
|
দয়ানিধি মারান
|
কলানিধি মারান |
|
বস্তুত, দয়ানিধি ও কলানিধি মারানের বাড়ি ও অফিসে সিবিআইয়ের তল্লাশি এবং এফআইআর দায়েরের পরেও ডিএমকে নেতৃত্ব যে রকম নীরব, তাতে এর মধ্যে বিশেষ রাজনৈতিক বার্তা নিহিত আছে বলে মনে করা হচ্ছে। ডিএমকে সূত্রের মতে, করুণা- কন্যা কানিমোঝি যতক্ষণ না জামিনে মুক্ত হচ্ছেন, ততক্ষণ ‘কলাইনার’ কংগ্রেসের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করার কথা বিবেচনাও করবেন না। তা ছাড়া, তামিলনাড়ুতে জয়ললিতা সরকার যে ভাবে ডিএমকে-র বিরুদ্ধে খড়্গহস্ত, তাতে কেন্দ্র থেকে সমর্থন প্রত্যাহার বিচক্ষণতা হবে না বলেই মনে করেন ডিএমকের অধিকাংশ নেতা। তাৎপর্যপূর্ণ হল, আজ দয়ানিধি ও কলানিধির বাড়িতে ও অফিসে এক দিকে যেমন তল্লাশি চলেছে, তেমনই সিবিআই সূত্রে এ-ও বলা হচ্ছে যে, কানিমোঝিকে জামিনে মুক্তি দেওয়া হলে এখন আর তারা আপত্তি করবে না। একের পর এক বিপর্যয়ের মধ্যে অনেক দিন পরে ডিএমকের কাছে এটাই একমাত্র সুখবর।
টেলিকম সংস্থা এয়ারসেলের প্রাক্তন প্রধান সি শিবশঙ্করন অভিযোগ করেছিলেন, তৎকালীন কেন্দ্রীয় টেলিকমমন্ত্রী দয়ানিধি মালয়েশিয়ার সংস্থা ম্যাক্সিসের কাছে তাঁর সংস্থা বেচে দেওয়ার জন্য চাপ দিয়েছিলেন এবং তার বিনিময়ে ম্যাক্সিস মারানদের টেলিভিশন চ্যানেল সান টিভিতে প্রচুর লগ্নি করে অ্যাস্ট্রো নেটওয়ার্কের মাধ্যমে। এরই তদন্তে নেমে সিবিআই ম্যাক্সিসের মালিক টি আনন্দ কৃষ্ণন, উচ্চপদস্থ কর্তা র্যালফ মার্শালের পাশাপাশি ম্যাক্সিস, অ্যাস্ট্রো এবং সান টিভির নামেও এফআইআর দায়ের করেছে সিবিআই। |
চেন্নাইয়ে দয়ানিধি মারানের বাড়িতে সিবিআই তল্লাশি। ছবি: পি টি আই। |
শিবশঙ্করনের অভিযোগ ছিল, ২০০৬ সালে দয়ানিধি মন্ত্রী থাকাকালীন তাঁর সংস্থার ব্যবসার জন্য প্রয়োজনীয় অনেকগুলি লাইসেন্সের আবেদন খারিজ হয়ে যায়। তার পরেই দয়ানিধির তরফে তাঁকে ম্যাক্সিসের কাছে তাঁর সংস্থাটি বেচতে চাপ দেওয়া হয়। হাত বদলের পরে ডিশনেট ওয়্যারলেস (এয়ারসেল) ১৪টি লাইসেন্স পেয়েছিল বলে অভিযোগ। সিবিআই সুপ্রিম কোর্টে তদন্ত রিপোর্টে জানিয়েছিল, মারানের সময়ে শিবশঙ্করনকে ‘লেটার অফ ইনটেন্ট’ দিতে ইচ্ছা করে দেরি করা হয়েছিল। এবং এয়ারসেল কেনার পরে মারানদের ব্যবসায় প্রচুর লগ্নি করে ম্যাক্সিস।
সিবিআই-এর দাবি, দয়ানিধির প্রাক্তন সহকারীরা তদন্ত সংস্থাকে জানিয়েছে, খোদ মন্ত্রীর নির্দেশেই শিবশঙ্করনদের আবেদন নিয়ে ইচ্ছাকৃত টালবাহানা করা হয়েছিল। এ-ও অভিযোগ, ২০০৫ থেকে ২০০৬ সালের মধ্যে ম্যাক্সিস কর্তা মার্শাল দয়ানিধির সঙ্গে বেশ কয়েক বার বৈঠকও করেছিলেন। |