মগজ ধোলাই করে রোবট বানানো হয়েছিল তাকে। আর তাই তাকে দিয়ে ঈশ্বরের নামে এত ভয়ঙ্কর অপকর্ম করিয়ে নেওয়া হয়েছিল। সুপ্রিম কোর্টে আজ এই ভাবেই নিজের সাফাই দিল আজমল আমির কাসভ। যার শেষে তার আর্জি, এ সব বিবেচনা করে এবং তার অল্প বয়সের কথা মাথায় রেখে আদালত যেন তার ফাঁসি মুকুব করে দেয়।
কাসভের এই আর্জি নিয়ে শুনানির নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত তার ফাঁসি স্থগিত রাখার নির্দেশ দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। নিম্ন আদালত ও বম্বে হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে শীর্ষ আদালতে আবেদন জানিয়েছিল ২০০৮ সালের মুম্বই হামলায় একমাত্র ধৃত জঙ্গি।
শীর্ষ আদালতে বিচারপতি আফতাব আলম এবং সি কে প্রসাদের বিশেষ বেঞ্চ আজ বলেছে, “দেশের অনেকেই চান কাসভের আবেদন এখনই নাকচ করে দেওয়া হোক। কিন্তু, আইনের শাসনের উপরে অন্য কোনও বিষয়কে স্থান দেওয়া যায় না। তাই কাসভের পক্ষে পেশ করা সব যুক্তিই শুনতে হবে।” তবে একই সঙ্গে বলা হয়েছে, দ্রুত এই মামলার শুনানি শেষ করা হবে।
সেই শুনানির সময়েই কাসভ নিজেকে নির্দোষ দাবি করে। সঙ্গে সঙ্গে এ-ও বলে, যদি ধরে নেওয়া যায় যে সে সত্যিই দোষী, তা হলেও তাকে ফাঁসির সাজা দেওয়া উচিত নয়। কারণ, তার তো মগজ ধোলাই করা হয়েছিল। সে রোবটে পরিণত হয়েছিল।
এর আগে মামলার আগের পর্যায়েও কাসভ মগজ ধোলাইয়ের যুক্তি দেখিয়েছিল। তবে সেখানে তা কাজে দেয়নি। ২০১০ সালের মে মাসে কাসভের মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দেয় নিম্ন আদালত। পরে সেই আদেশ বহাল রেখেছে বম্বে হাইকোর্ট। আর্থার রোড জেলে এখন বন্দি রয়েছে কাসভ। হাইকোর্টের আদেশের বিরুদ্ধে আইনজীবী গৌরব অগ্রবালের মাধ্যমে সুপ্রিম কোর্টে আবেদন জানিয়েছিল সে। কাসভ মামলায় আদালত-বান্ধব হিসেবে কাজ করবেন আইনজীবী রাজু রামচন্দ্রন। এই ভূমিকা পালন করতে রাজি হওয়ায় তাঁর প্রশংসা করেছে সুপ্রিম কোর্ট।
তিন-চার মাস আগে প্রথম কাসভ মামলার শুনানি হয় সুপ্রিম কোর্টে। তখন মামলার নথিপত্র বেশির ভাগই ছিল মরাঠিতে। মহারাষ্ট্র সরকারকে ওই নথিপত্র ইংরেজিতে অনুবাদ করে পাঠানোর নির্দেশ দেয় শীর্ষ আদালত। মহারাষ্ট্র সরকারের আইনজীবী গোপাল সুব্রহ্মণ্যম জানিয়েছেন, মামলার নথিপত্র অনুবাদের কাজ শেষ হয়ে গিয়েছে। তাই এই মামলার শুনানি সুপ্রিম কোর্ট শুরু করতেই পারে। তবে এই মামলার নিষ্পত্তি হতে কত সময় লাগবে, তা নিয়ে কোনও ভবিষ্যদ্বাণী করতে রাজি নন বিশেষজ্ঞরাও। কাসভ মামলায় মহারাষ্ট্র সরকারের হয়ে সওয়াল করেছিলেন উজ্জ্বল নিকম। তিনি বলেছেন, “আইনি প্রক্রিয়ায় কত সময় লাগবে তা বলা সম্ভব নয়।” |