অসমে পুলিশের গুলিতে হত চার পাটচাষি
পাটের ন্যূনতম সহায়ক মূল্যের দাবিতে দরং জেলার দলগাঁওয়ে ৫২ নম্বর জাতীয় সড়ক অবরোধ করেছিলেন পাটচাষিরা। অবরোধের জেরে আজ সকালে বেসিমারি এলাকায় যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে যায় দীর্ঘক্ষণের জন্য। পুলিশ লাঠি চালিয়ে অবরোধ হটাতে গেলে ক্ষিপ্ত পাটচাষিরা পুলিশের উপরে চড়াও হন বলে অভিযোগ। পুলিশ গুলি চালালে মারা যান চার জন পাটচাষি। দু’ তরফে খণ্ডযুদ্ধে জখম হন অন্তত ১৫ জন। পুলিশের দাবি, বিক্ষোভকারীদের বাঁশ ও ইটের ঘায়ে জখম হয়েছেন একজন ম্যাজিস্ট্রেট এবং ডিএসপি-সহ আট পুলিশকর্মী। অতিরিক্ত পুলিশ ও আধা-সামরিক বাহিনীকেও বেসিমারি পাঠানো হয়। জখমদের মঙ্গলদই হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। পরিস্থিতি আপাতত নিয়ন্ত্রণে। এলাকায় আধা-সামরিক বাহিনী টহল দিচ্ছে। চারটি প্রাণের বিনিময় অবশেষে, পাট ও ধানের ন্যায্য বিক্রয় মূল্য নির্ধারণে সরকারি আশ্বাসটুকু এ দিন মিলেছে।
ঘটনার সূত্রপাত আজ সকালে। পাটের বর্ধিত ক্রয়মূলের দাবিতে জাতীয় সড়ক অবরোধ করেন প্রায় পাঁচশো পাটচাষি। পাটচাষিদের দাবি, পশ্চিমবঙ্গের পরেঅসমেই, দেশের মধ্যে সবচেয়ে বেশি পাট উৎপাদন নয়। অথচ পাট কেনার সরকারি ব্যবস্থা না থাকায় জলের দরে পাট বিক্রি করতে হচ্ছে তাঁদের। নগাঁও, গোয়ালপাড়া, বরপেটা এবং দরংয়ে পাট উৎপাদনের পরিমাণ সর্বাধিক। এই বছর পাটের উৎপাদনও হয়েছে অন্যান্য বারের তুলনায় বেশি। পাট কেনার সরকারি মূল্য বেঁধে দেওয়া ও সরকারের তরফে পাট ক্রয় করার দাবিতে দীর্ঘদিন আবেদন জানিয়েও লাভ হয়নি। তাই, আজ রাস্তায় নামেন পাটচাষিরা।
দরংয়ের এসপি বিবেক রাজ সিংহ বলেন, “প্রথমে কৃষকদের অবরোধ হঠাতে অনুরোধ করা হয়েছিল। তাঁরা উল্টে আমাদের উপরে চড়াও হন। কর্তব্যরত ম্যাজিস্ট্রেট ও বেশ কিছু পুলিশকর্মী জখম হওয়ার পরে পুলিশ কাঁদানে গ্যাস ছোড়ে, শূন্যে গুলি চালানো হয়। তাতেও আক্রমণ অব্যাহত থাকায় আমরা বাধ্য হয়ে গুলি চালাই।”
ঘটনায় দুঃখপ্রকাশ করে মুখ্যমন্ত্রী তরুণ গগৈ জানান, নিহতদের নিকটাত্মীয়দের তিন লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে। ঘটনার বিচারবিভাগীয় তদন্তেরও নির্দেশ দেন তিনি। পরিস্থিতি সরেজমিনে খতিয়ে দেখতে এলাকায় গিয়েছেন কৃষিমন্ত্রী নীলমণিসেন ডেকা। গগৈ জানান, পাট ও ধানের উপযুক্ত বিক্রয় মূল্য নির্ধারণে সরকার দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।
গুলি চালনার নিন্দা করে অগপ মুখপাত্র ও সাধারণ সম্পাদক অপূর্ব ভট্টাচার্য বলেন, “এটা বর্বরোচিত ঘটনা। দশ বছর ধরে মুখ্যমন্ত্রী তরুণ গগৈ নিজেকে কৃষকদরদি বলে দাবি করে আসছেন। কৃষকদের স্বার্থ যদি সুরক্ষিত হয়েই থাকে, তা হলে আজ পথে নেমে তাঁদের প্রাণ দিতে হল কেন? এই সরকারের ক্ষমতায় থাকার নৈতিক অধিকার নেই।” পাশাপাশি, বিজেপির সাংসদ বিজয়া চক্রবর্তী বলেন, “গগৈয়ের নেতৃত্বে কংগ্রেস একনায়কতন্ত্র প্রতিষ্ঠার চেষ্টা চালাচ্ছে রাজ্যে। প্রতিবাদ করার সাহস দেখালেই সরকারি বাহিনীর গুলির নিশানা হতে হচ্ছে রাজ্যবাসীকে। গগৈ সরকারের পদত্যাগ দাবি করছি আমরা।”
কৃষক মুক্তি সংগ্রাম সমিতির প্রচার সচিব কমলকুমার মেধি বলেন, “দীর্ঘদিন ধরে অসমের কৃষকদের জন্য ন্যূনতম সহায়ক মূল্য ঘোষণা করার জন্য দাবি জানাচ্ছি আমরা। গগৈ সরকার যে কৃষক-বিরোধী, এ দিনের ঘটনায় তা প্রমাণিত হল।”


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.