চিলাপাতার জঙ্গলে কার সাফারিতে গাড়ির সংখ্যা বাড়ানোর দাবি জানালেন স্থানীয় লজ মালিক ও ট্যুর অপারেটররা। তাঁদের অভিযোগ, বন্যপ্রাণ-৩ বিভাগের চিলাপাতা ও মেন্দাবাড়ির জঙ্গলে পর্যটকের সংখ্যা বাড়লেও কার সাফারিতে প্রয়োজনের তুলনায় কম সংখ্যায় গাড়ি জঙ্গলে ঢোকার অনুমতি দেওয়া হচ্ছে। চিলাপাতা থেকে সকাল ও বিকেল মিলিয়ে মোট ৬টা গাড়ি চলে। প্রতিটি গাড়িতে ৬ জন করে পর্যটক বসতে পারেন। পুজোর সময়ে পর্যটকের ভিড় থাকায় ১০ অক্টোবর থেকে মেন্দাবাড়ি এলাকায় অতিরিক্ত ৩টি গাড়ি চালানোর অনুমতি মিলেছে। সেটাও চলবে ১৬ অক্টোবর পর্যন্ত। তার পরে ফের দিনে ৬টা গাড়িই জঙ্গলে ঢুকবে। বন দফতরের ওই সিদ্ধান্তেই আপত্তি লজ মালিক এবং ট্যুর অপারেটরদের। রাজ্য পর্যটন দফতরের সচিব রাঘবেন্দ্র সিংহও বিষয়টি নিয়ে বন দফতরের কর্তাদের সঙ্গে আলোচনা করবেন বলে জানিয়েছেন। তিনি বলেন, “আমরা হোম ট্যুরিজম ও ইকো ট্যুরিজম নিয়ে উত্তরবঙ্গে কাজ করছি। বিভিন্ন জায়গায় পযর্টক সংখ্যা বাড়ায় কার সাফারি নিয়ে কিছু সমস্যা দেখা দিয়েছে। বিষয়গুলি নিয়ে আমি বন দফতরের কর্তাদের সঙ্গে আলোচনা করব। বন্যপ্রাণি এবং পর্যটক উভয়ের কথা মাথায় রেখে সুষ্ঠু সমাধান বের করা হবে।” ওই বন বিভাগের ভারপ্রাপ্ত ডিএফও রাজেন্দ্র জাখর বলেন, “জঙ্গল বন্যপ্রাণিদের জন্য। সেখানে সারাদিন গাড়ি চলাচল করলে বন্যপ্রাণিদের সমস্যা হবে। সে কথা ভেবেই কার সাফারিতে গাড়ির সংখ্যা নিয়ন্ত্রণ করা রয়েছে। পরিবর্তে মাদারিহাট ও কুঞ্জনগরে পর্যটকদের বেড়ানোর ব্যবস্থা হয়েছে। সেদিক থেকে ভেবে দেখলে কারও অসুবিধে হওয়ার কথা নয়।” বন দফতরের ওই যুক্তিতে সন্তুষ্ট নন লজ মালিক এবং ট্যুর অপারেটররা। চিলাপাতার বেসরকারি লজের মালিক গণেশ সাউ বলেন, “চিলাপাতা এলাকায় পর্যটকের সংখ্যা বাড়ছে। অথচ প্রশাসনিক অসহযোগিতায় অনেক পর্যটক জঙ্গল সাফারি থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। বন দফতরের কর্তাদের অনুরোধ করেছি, চিলাপাতা ও সিসি লাইন এলাকায় দিনে কমপক্ষে ১০-১২টি গাড়ি প্রবেশের অনুমতি দেওয়া হোক।” ইস্টার্ন হিমালয়ান ট্র্যাভেল অ্যান্ড ট্যুর অপারেটর অ্যাসোসিয়েশনের চেয়ারম্যান রাজ বসু বলেন, “শীতের গোটা মরশুমে ডুয়ার্সে পযর্টকদের আনাগোনা বেড়ে যায়। এই সময় কিছু অতিরিক্ত গাড়ি ঢোকার অনুমতি দেওয়া হলে পযর্টকরা জঙ্গল দেখার সুযোগ পাবেন। পযর্টন দফতরকেও উত্তরবঙ্গের জঙ্গল এলাকার পর্যটন নিয়ে একটি পৃথক নীতি তৈরী করার জন্য অনুরোধ জানানো হয়েছে।” জলদাপাড়া লাগোয়া চিলাপাতার জঙ্গল বুনো জন্তুতে ভরা। জঙ্গলের ভিতরে নল রাজার দুর্গের ধংসস্তূপ রয়েছে। সিসি লাইনে গন্ডার, হাতি, বাইসন-সহ বিভিন্ন বন্যপ্রাণি দেখতে বহু পর্যটক সেখানে যান। বন দফতরের পক্ষ থেকেও পর্যটকদের জন্য সকালে ও বিকালে সাফারির ব্যবস্থা রয়েছে। তার বাইরে ৬টি করে গাড়ি ঢোকার অনুমতি রয়েছে। |