পারিবারের গণ্ডি পেরিয়ে লক্ষ্মী পুজোও সর্বজনীন। পুজো ঘিরে কোথাও বসে মেলা, কোথাও বসে যাত্রাপালার আসর।
১৯৩৫ সালে শুরু হওয়া মাজি পরিবারের লক্ষ্মীপুজো জামুড়িয়ার বীজপুরের প্রধান সার্বজনীন উৎসব। ১৩ বছর ধরে এই উৎসব পরিচালনা করছে অগ্রণী সঙ্ঘ। উৎসব ঘিরে চার দিনের মেলা কার্যত মিলনক্ষেত্রে পরিণত হয়। লক্ষ্মী পুজোর পরের দিন পঙ্ক্তিভোজন, সন্ধ্যায় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। পরের দু’দিন যাত্রাপালার আসর বসে। মাজি পরিবারের সদস্য কুশ মাজি জানান, দুর্গাপুজোয় পাত্তা না পেয়ে মাজি সম্প্রদায় লক্ষ্মী পুজো শুরু করে। আজ তা গ্রাম ছাড়িয়ে কাঁটাগোড়িয়া, রানিসায়ের পর্যন্ত মানুষের ঢল নামে। সর্বজনীন মহোৎসবে পরিণত হয়।
বীরকুলটি গ্রামে সূত্রধর বাড়ির পুজো এ বার ২২০ বছরে পা দিল। প্রতি বছর লক্ষ্মী পুজোর দিনে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পুজোর অন্যতম আকর্ষণ। অন্ডালের দক্ষিণখণ্ড পল্লি উন্নয়ন সমিতির আয়োজিত লক্ষ্মীপুজোর বয়স ৪৩ বছর। এক সপ্তাহ ধরে মেলা বসে। শুক্রবার হাটবার হওয়ায় পংক্তিভোজনের দিন তার পরেই ঠিক হয়। গ্রামের বাসিন্দা সমাজসেবী অনন্ত ঘোষ জানান, পাত পেড়ে খান প্রায় ১৫ হাজার মানুষ। ১৯৪০ সালে রানিগঞ্জের প্রফুল্ল কুমার সিংহ হিলবস্তি এলাকায় পুজো শুরু করেন। এই পুজো এখন এলাকায় বহু চর্চিত। প্রফুল্লবাবু আদতে বাঁকুড়ার সোনামুখীর বাসিন্দা। সেখান থেকে রানিগঞ্জে আসার পর পারিবারিক ঐতিহ্য মেনেই লক্ষ্মী পুজোর প্রচলন করেছিলেন। অষ্টমী থেকে লক্ষ্মী পুজো পর্যন্ত বস্ত্র ব্যবসায়ী এই পরিবারের সমস্ত শরিকদের দোকানপাট বন্ধ থাকে। আগে কুমারটুলি থেকে শ্রীরাম পাল মন্দিরে এসে প্রতিমা তৈরি করতেন। এখন তাঁর ছেলে তাপস পালের কাছ থেকে প্রতিমা নিয়ে আসা হয়। এই পুজো সংলগ্ন এলাকায় মানুষের সমারোহে মিলন মেলার রূপ পায়। জামুড়িয়ার বাড়ুল গ্রামের লক্ষ্মীপুজোর ঐতিহ্য আজও অমলিন। |