দশমীতে উত্তর ২৪ পরগনার টাকির ইছামতীতে বিসর্জন দেখতে গিয়ে দুর্ঘটনায় প্রাণ হারালেন দু’জন। নৌকা উল্টে নিখোঁজ এক গবেষক।
মৃতদের নাম মানস হালদার (১৯) ও পরিতোষ মুন্ডা (২৫)। প্রথম জনের বাড়ি বাদুড়িয়ার উত্তর চাতরা গ্রামে। দ্বিতীয় জন গাইঘাটার বাসিন্দা। সুজয় দাস নামে বছর তিরিশের নিখোঁজ ওই গবেষক কলকাতার টালিগঞ্জ এলাকায় থাকেন। যাদবপুরে ‘ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অব কেমিক্যাল বায়োলজি’-তে গবেষণা করেন। তাঁর আদি বাড়ি বহরমপুরে। |
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, মানস টাকিতে মামারবাড়ি এসেছিলেন। বৃহস্পতিবার সকালে বন্ধুদের সঙ্গে নৌকায় ওঠেন বিসর্জন দেখতে। টাকি গেস্ট হাউসের কাছে বাংলাদেশ থেকে আসা একটি নৌকার সঙ্গে তাঁদের নৌকার ধাক্কা লাগে। মানস-সহ কয়েক জন নদীতে পড়ে যান। আশপাশের নৌকার লোকজন বাকিদের উদ্ধার করলেও মানস তলিয়ে যান। দুপুর নাগাদ হাসনাবাদের কাছে নদীর চর থেকে তাঁর দেহ উদ্ধার হয়।
পরিতোষ বিসর্জন দেখে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা নাগাদ বাড়ি ফেরার জন্য টাকি স্টেশন থেকে ট্রেন ধরেন। ট্রেনটি ছিল ভিড়ে ঠাসা। ভ্যাবলা স্টেশনের কাছে ভিড়ের চাপে ট্রেন থেকে পড়ে গিয়ে তাঁর মৃত্যু হয় বলে প্রাথমিক তদন্তের পরে রেল পুলিশ জানিয়েছে। |
কলকাতা থেকে স্ত্রী ও আত্মীয়দের নিয়ে টাকিতে বিসর্জন দেখতে এসেছিলেন সুজয়বাবু। তাঁর স্ত্রী অর্পিতাদেবী পুলিশকে জানান, বিকেল ৪টে নাগাদ তাঁরা একটি নৌকা ভাড়া করেন। নৌকায় তাঁরা ৬ জন ছিলেন। হঠাৎ বাংলাদেশের দিক থেকে আসা একটি বড় যাত্রীবোঝাই নৌকা (বজরা) ধাক্কা মারে তাঁদের নৌকায়। মুহূর্তে নৌকা ভেঙে যায়। সবাই জলে পড়ে যান। আশপাশের টহলদারি নৌকা অন্যদের উদ্ধার করলেও সুজয়বাবুর খোঁজ পাওয়া যায়নি। দুর্ঘটনার পরে দু’দেশের সীমান্ত রক্ষী বাহিনী এবং পুলিশ তল্লাশিতে নামে। কিন্তু শুক্রবার রাত পর্যন্ত তাঁর খোঁজ মেলেনি।
এ বারের বিসর্জনকে ঘিরে বিশৃঙ্খলা মোকাবিলায় পুলিশের উদাসীনতার যে অভিযোগ সাধারণ মানুষ তুলেছেন, সে প্রসঙ্গে এসডিপিও (বসিরহাট) আনন্দ সরকার বলেন, “আমরা সাধ্যমতো চেষ্টা করেছি। ভবিষ্যতে এমন ঘটনা যাতে আর না ঘটে, তা দেখা হবে।”
|