|
|
|
|
রাজ্য নেতাদের সতর্ক করলেন জেটলি |
আডবাণীর রথ নিয়ে বিতর্ক এড়াতে মরিয়া সঙ্ঘ |
নিজস্ব সংবাদদাতা • নয়াদিল্লি |
লালকৃষ্ণ আডবাণীর রথযাত্রাকে ‘বিতর্কমুক্ত’ করতে এ বারে আসরে নামলেন সঙ্ঘ ও বিজেপি নেতৃত্ব।
সঙ্ঘ পরিবার মনে করছে, নেতৃত্ব নিয়ে বিজেপির মধ্যে বিতর্ক ফের দানা বাঁধছে। দিল্লিতে সদ্য সমাপ্ত জাতীয় কর্মসমিতির বৈঠকে নরেন্দ্র মোদী না আসায় ক্ষুব্ধ আরএসএস নেতৃত্ব। এই বৈঠক চলাকালীন আডবাণী বনাম মোদীর লড়াইয়ের প্রচারটিও ভালো চোখে দেখছেন না তাঁরা। তার মধ্যেই আডবাণীর দুর্নীতি-বিরোধী রথের চাকা গড়ানোর আগেই তার খরচ নিয়ে বিতর্ক শুরু হয়ে গিয়েছে। এই অবস্থায় সঙ্ঘ নেতৃত্ব চাইছেন, রথযাত্রা চলাকালীন আর কোনও বিতর্ক যাতে মাথাচাড়া দিয়ে না ওঠে, আডবাণীর প্রধানমন্ত্রিত্ব-বিতর্ক যাতে ফের উস্কে না ওঠে, তা নিশ্চিত করতে। সঙ্ঘ নেতৃত্বের বক্তব্য, মোদী-আডবাণী বিতর্কের ধাক্কায় জাতীয় কর্মসমিতির মূল উদ্দেশ্যই ভন্ডুল হয়ে গিয়েছে। এ বারে যেন আর সে রকম কিছু না হয়।
সঙ্ঘের নির্দেশ মেনেই আজ দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা দলের নেতাদের সঙ্গে দিল্লিতে বৈঠক করেন বিজেপি নেতা অরুণ জেটলি। সেখানে তিনি বলেন, “রথযাত্রার সময়ে কোনও বিতর্ক যাতে তৈরি না হয়, সে ব্যাপারে সকলকে সতর্ক থাকতে হবে। দল যে এজেন্ডা স্থির করে দেবে, তার বাইরে একটি শব্দও বলার দরকার নেই। অনেক সময় স্থানীয় নেতারা মূল সভার আগে বক্তব্য রাখতে গিয়ে অনেক অপ্রাসঙ্গিক কথা বলেন। সেগুলিও থামাতে হবে। স্লোগান, পোস্টার, ব্যানার লাগানোর সময়ও এই সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে। দেশের রাজনৈতিক গতিবিধি যে দিকেই গড়াক, দলের নেতা-কর্মীদের লক্ষ্যভ্রষ্ট হওয়া চলবে না।”
দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা নেতাদের এই হুঁশিয়ারি দেওয়ার সময় সংবাদমাধ্যমকেও উপস্থিত থাকার আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন বিজেপি নেতৃত্ব। সেটা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে, কেন এমন করলেন তাঁরা?
দলের এক শীর্ষ নেতার ব্যাখ্যা, সঙ্ঘ নেতৃত্ব চান না, এই সফরের সময় কেউ আডবাণীকে প্রধানমন্ত্রী পদে তুলে ধরার দাবি করে বসলেন। তা নিয়ে স্লোগান, পোস্টার, ব্যানার সাঁটা হল! অথবা একেবারে অপ্রাসঙ্গিক কোনও ঘটনা বা মন্তব্য থেকে এমন বিতর্ক তৈরি হল, যে গোটা রথযাত্রার উদ্দেশ্যটাই ব্যর্থ হল। তাঁর কথায়, “জাতীয় কর্মসমিতির বৈঠকের সময় যেমন হয়েছিল। নরেন্দ্র মোদীর না আসাটাই খবর হল! মনমোহন সরকারের দুর্নীতি, মূল্যবৃদ্ধির মতো বিষয়গুলিকে নিয়ে বিজেপি যে ভাবে এগোতে চাইছে, সেটাই অনেকটা হারিয়ে গেল।” একই সঙ্গে সংবাদমাধ্যমকে সামনে রেখে বিজেপি নেতৃত্ব বোঝাতে চাইলেন, যদি কোনও নেতা বিতর্ক বাধান, তা হলে সেটাকে গুরুত্ব দেওয়ার প্রয়োজন নেই। বিজেপির এক শীর্ষ নেতার মন্তব্য, “এর মধ্যে আর একটি মমার্থও রয়েছে। সঙ্ঘ ও বিজেপি নেতৃত্ব চাইছেন, আডবাণীর রথযাত্রার সময় এজেন্ডাগুলিই গুরুত্ব পাক, আডবাণী নয়।” আর জেটলির কথায়, “আডবাণীর নেতৃত্বে রথযাত্রার মাধ্যমে বিজেপির বক্তব্য নিয়ে আম-জনতার কাছে পৌঁছনোই দলের আসল লক্ষ্য। অহেতুক বিতর্ক কোনও ভাবেই কাম্য নয়।” আডবাণীর রথ যখন উত্তরপ্রদেশে পৌঁছবে, ঠিক তখন ওই রাজ্যেরই গোরক্ষপুরে আরএসএসের শীর্ষ নেতারা বৈঠকে বসবেন। মোদীকে নিয়ে বিজেপিতে যে সঙ্কট তৈরি হয়েছে, তা নিয়ে আলোচনা হবে সেখানে। আজই নরেন্দ্র মোদী সরকারের দশ বছর পূর্ণ হয়েছে। তবে বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব এ নিয়ে খুব বেশি উৎসাহ দেখায়নি।
গত কাল, দশমীর দিন নাগপুরে সরসঙ্ঘচালক মোহন ভাগবত স্বীকার করেছিলেন, রামদেবের পাশাপাশি অণ্ণা হজারের লোকপাল নিয়ে আন্দোলনেও আরএসএস সামিল ছিল। আজ তা নিয়ে কটাক্ষ করে কংগ্রেস নেতা দিগ্বিজয় সিংহ বলেন, “আমরা তো গোড়া থেকেই বলে আসছি, আরএসএস এই আন্দোলনের পিছনে রয়েছে। আমি খুশি, ভাগবত সেটি স্বীকার করেছেন।” |
|
|
|
|
|