|
|
|
|
ভোগান্তির ভয়ে এসি রেক প্রায় চললই না পুজোয় |
গৌতম গুপ্ত |
ভিড় বেশি হলে আর এসি রেক চালানোর ভরসা পাচ্ছেন না মেট্রো-কর্তৃপক্ষ। তাই পুজোর সময়ে যান্ত্রিক গোলযোগের আশঙ্কায় চারটি এসি রেক প্রায় লাইনে নামালই না মেট্রো।
বছরখানেক আগে প্রথম দু’টি এসি রেক চালানো শুরু করে মেট্রো। কয়েক লক্ষ টাকা ব্যয়ে গত ১ অক্টোবর উদ্বোধনী অনুষ্ঠান করে লাইনে নামানো হয় আরও দু’টি এসি রেক। কিন্তু তার পরেই পুজোর ভিড়ের ভয়ে লাইন থেকে প্রায় সব ক’টি এসি রেকই তুলে নেওয়া হয়। মেট্রোর ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার প্রত্যুষ ঘোষ শুক্রবার বলেন, “আমরা যে এসি রেক একেবারে চালাইনি, তা নয়। তবে খুব কম চালিয়েছি।” এর কারণ হিসেবে তিনি জানান, গাড়িতে অতিরিক্ত ভিড় হলে ব্রেক নিয়ে সমস্যা দেখা দিতে পারে। আর নিয়মিত মেট্রোয় যাতায়াতে অনভ্যস্ত যাত্রীরাই পুজোয় বেশি সংখ্যায় মেট্রোয় চাপলে দরজা বন্ধ করা নিয়ে সমস্যার আশঙ্কা থেকে যায়। তাই অষ্টমী ও নবমীতে বিকেল চারটে থেকে রাত আটটা পর্যন্ত তিনটি এসি রেক এক ট্রিপ করে পরিষেবা দিয়েছে।
মেট্রো সূত্রের খবর, আগের ১৮টি রেকের মধ্যে ১১টি রেক অত্যন্ত পুরনো হয়ে গিয়েছে। তাই ধীরে ধীরে সব পুরনো রেকই বাতিল করে শুধু আধুনিক প্রযুক্তির এসি রেকই চালানো হবে। কিন্তু ভিড়ের সময়ে এখনও মেট্রোর ভরসা বাতিলের খাতায় চলে যাওয়া পুরনো রেকগুলিই। |
|
মেট্রোর পরিসংখ্যান অবশ্য বলছে, ২০১০ সালে ষষ্ঠী থেকে নবমী পর্যন্ত চার দিনে এ বছরের চেয়েও বেশি যাত্রী মেট্রোয় চেপেছিলেন। সংখ্যাটা ছিল ১৯ লক্ষ ১৩ হাজার। এ বছরে ষষ্ঠী থেকে নবমী পুজোর এই চার দিনে মেট্রোয় ঘুরে ঘুরে প্রতিমা দর্শনে বেরিয়েছিলেন ১৮ লক্ষ ৯১ হাজার যাত্রী। যে কোনও পুজোর দিনের হিসেবে রেকর্ড ভিড় হয় নবমীর দিন পাঁচ লক্ষ ৬৩ হাজার।
কাজের দিনে মেট্রোয় যাত্রী-সংখ্যা থাকে প্রায় সাড়ে পাঁচ লক্ষ এবং মেট্রো ২৩৬টি গাড়ি চালায়। অর্থাৎ, প্রতি ট্রেনে গড়ে ২৩৩০ জন যাত্রী থাকেন। এ বার পুজোয় চার দিনে মোট ৬২২টি ট্রেনে উঠেছেন ১৮ লক্ষ ৯১ হাজার যাত্রী। অর্থাৎ, প্রতি ট্রেনে গড়ে ৩০৪০ জন যাত্রী ছিলেন। নবমীর দিন ১৮৩টি ট্রেনে চেপেছিলেন পাঁচ লক্ষ ৬৩ হাজার যাত্রী, গড়ে প্রতি ট্রেনে ৩০৭৬ জন। সুতরাং কাজের দিনের তুলনায় পুজোয় প্রতি ট্রেনে প্রায় ৭০০ বাড়তি যাত্রী চড়েছেন।
পুজোর সময়ে ট্রেন চলাচলে সব চেয়ে কম ব্যবধান ছিল আট মিনিট। এই ব্যবধানে গাড়ি চালাতে হলে মোট ১৪টি রেক দরকার। মেট্রো রেলের হাতে পুরনো রেক এখন রয়েছে ১৮টি। তাই সে অর্থে এসি রেকের উপরে নির্ভর করার দরকার পড়েনি। কিন্তু অনেক যাত্রীরই বক্তব্য, পুজোয় দমবন্ধ ভিড়ের চাপ থেকে স্বস্তি দিতে আরও কম ব্যবধানে গাড়ি চালানোর দরকার ছিল। সেই সঙ্গে অনেকেই পুজোর সময়ে এসি রেকে চড়ার আশায় ছিলেন। তাই পুজোয় গরমের মধ্যেও এসি রেক প্রায় না চলায় কিছুটা হতাশ হয়েছেন তাঁরা। |
|
|
|
|
|