বৃহস্পতিবার দশমীর সন্ধ্যায় ঘরে ফিরবেন দেবী। ঘরে ফেরার সময়ে বংশপরম্পরা মেনে আজও হ্যারিকেন জ্বেলে দেবীকে আলো দেখাতে নদীর পাড়ে দাঁড়িয়ে থাকেন নুরজাহান বিবি, জয়গুন বিবি, শেখ আসিরুদ্দিন ও ইলিয়াস আলিরা। ভিন্ন সম্প্রদায়ের ওই বাসিন্দাদের প্রত্যেকেই মালদহের চাঁচলের শাওরগাছির বাসিন্দা। গত ৩০০ বছরেরও বেশি সময় ধরে এ ভাবেই চলে আসছে। প্রথা মেনে চললেও, কেন ওই আলো দেখানো হয় তা জানেন না শাওরগাছির বাসিন্দারা! শুধু জানেন, দেবীর ঘরে ফেরার সময় আলো না দেখালে তাদের অনিষ্ট হবে। বিসর্জনের সন্ধ্যার আগেই তাই হাত, পা ধুয়ে আলো জ্বেলে নেন ওঁরা। পাহাড়পুরের ওই দেবী প্রতিমা ঠিক সন্ধ্যাতেই বিসর্জন দেওয়াই রীতি। কেননা রাজবাড়ির ওই দেবী প্রতিমার না হওয়া পর্য়ন্ত চাঁচলের অন্য প্রতিমার বিসর্জন হয় না। ফলে সন্ধ্যার মুহূর্তে নদীর পাড়ে পাহাড়পুরের সিংহবাহিনী হাজির হওয়ার আগেই হ্যারিকেন জ্বেলে তা হাতে নিয়ে একে একে হাজির হন নূরজাহান বিবি, শেখ মোমিরুদ্দিনরা। হ্যারিকেন উঁচু করে ধরে তা নেড়ে আলো দেখাতে শুরু করেন। বিসর্জনের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত একই ভাবে আলো দেখাতে থাকেন। তারপর রীতি মেনেই এক বারের জন্যও পিছনে না তাকিয়ে ঘরে ফেরেন ওই বাসিন্দারা। বুধবার নবমীর দুপুরে ওই এলাকায় গিয়ে দেখা যায় ঘরে ঘরে চলছে হ্যারিকেন সাফসুতরো করার প্রস্তুতি। অধিকাংশ বাসিন্দার বাড়িতেই অবশ্য বিদ্যুতের আলো রয়েছে। রয়েছে একটি করে হ্যারিকেনও! বছরভর ওই হ্যারিকেনের ব্যবহার হয় না বললেই চলে। নবমীর দিনই হ্যারিকেন ঝেড়ে মুছে তেল ভরে প্রস্তুত করে রাখেন বাসিন্দারা। শেখ আসিরুদ্দিন বলেন, “বাবা মাকেও দেখেছি বিসর্জনের সময় আলো হাতে নদীর পাড়ে হাজির হতে। মৃত্যুর আগে মা বারবার করে বলে গিয়েছিলেন ওই আলো দেখানোর কথা। শুধু আমি নই, গ্রামের কোনও বাসিন্দা এর কারণ জানেন না।”
|
পুজোয় জনসংযোগ
নিজস্ব সংবাদদাতা • কোচবিহার |
কেউ গ্যাস সিলিন্ডার সরবরাহের কাজ তদারকিতে ব্যস্ত। কেউ নির্বাচনী এলাকা ঘুরে দলীয় কর্মীদের সঙ্গে দেখা করার ফাঁকে মুখপত্র বিলি করলেন। আড্ডা দিলেন। শারদ উৎসবের সুযোগে এ ভাবে হরের ডান ও বাম দুই শিবিরের নেতৃত্ব জনসংযোগ বাড়ানোর কাজ করলেন। নাটাবাড়ি কেন্দ্রের তৃণমূল বিধায়ক রবীন্দ্রনাথ ঘোষ এ বার অন্তত ১০টি পুজো উদ্বোধন করেন। দিনহাটার ফরওয়ার্ড ব্লক বিধায়ক উদয়ন গুহ বাসিন্দাদের দৈনন্দিন সমস্যা মেটানোর ফাঁকে জনসংযোগ বাড়ানোর কাজ করলেন। বুধবার তিনি দিনহাটার সংহতি ময়দানে দাঁড়িয়ে রান্নার গ্যাস সরবরাহের কাজ তদারকিও করলেন। সন্ধ্যায় দিনহাটা মেইন রোডে বিভিন্ন মণ্ডপে আড্ডায় মাতলেন। বিজেপির জেলা সম্পাদক নিখিলরঞ্জন দে বিভিন্ন মণ্ডপে ঘুরেছেন। তিনি একাধিক বস্ত্র বিতরণ অনুষ্ঠানে যোগ দিয়েছেন।
|
দর্শনার্থীর ঢল মণ্ডপে
নিজস্ব সংবাদদাতা • বেলাকোবা |
নবমীর বিকেল থেকেই দর্শনার্থীদের ঢল নেমেছে বেলাকোবার প্রতিটি পুজো মণ্ডপে। সবচেয়ে ভিড় উপচে পড়েছে বাবুপাড়া, মুনলাইট, কলেজ পাড়া, আদর্শপাড়া, হাসপাতাল মোড় ও নবজীবন সঙ্ঘের পুজো মণ্ডপে। একইভাবে ভিড় উপছে পড়ছে স্থানীয় শিকারপুর চা বাগানের পুজো মণ্ডপে। দশক টানতে বেলাকোবার প্রায় সব পুজো কমিটিই নানা থিম নিয়ে আসরে নেমেছে। বাবুপাড়া পুজো কমিটি এবারে কুলো দিয়ে মণ্ডপ তৈরি করেছে। মুনলাইট করেছে বাঁশের প্রতিমা। পুজো মণ্ডপও করা হয়েছে বাঁশ দিয়ে। বাঁশের মণ্ডপ তৈরি করে দর্শনার্থী টেনেছে নবজীবন সঙ্ঘ। আদর্শ পাড়ার এবার পুজোর থিম বন্যপ্রাণী নিয়ে মানুষের মধ্যে সচেতনতা। মাটির মডেলে সচেতনতার প্রচার। |