সোনার প্রতিমার টানে নবমীর রাতে জনজোয়ারে ভেসে গেল বহরমপুরের খাগড়া পাউন্ড রোড সর্বজনীন দুর্গোৎসব কমিটির মণ্ডপ চত্বর। পঞ্চমীর সন্ধ্যা থেকে নবমী--ভিড় সামাল দিতে পুলিশ থেকে পুজো কমিটি হিমসিম!
গত কয়েক বছর বহরমপুরের পুজোর আলোর রোশনাই খাগড়া এলাকার দিকে ফিকে হয়ে গিয়েছিল। সোনার প্রতিমার বৈভব এ বছর দর্শনার্থীদের ফের খাগড়ামুখী করে তুলেছে। আর হবে নাই বা কেন? মাটির প্রতিমা থেকে শোলা, কাঠ, মাছের আঁশ, বেত, বাঁশের খলপা, নারকোলের ছাল দিয়ে প্রতিমা নির্মাণের উত্তরণের ধাপকে কয়েক কদম এগিয়ে দিয়েছে খাগড়া পাউন্ড রোডের সুবর্ণজয়ন্তী বর্ষে আড়াই কিলো ওজনের সোনার প্রতিমা। এক চালায় দেবীদুর্গা-সহ লক্ষ্মী, সরস্বতী, কার্তিক, গণেশ, অসুর, মহিষের পাশাপাশি বাহন হিসেবে সিংহ, পেঁচা, হাঁস, ইঁদুর, ময়ূর রয়েছেসবই সোনার। এমনকী দশভূজার দশ রকম অস্ত্রও সোনার। অসুরের তরোয়ালও সোনার। প্রতিমা শিল্পী সঞ্জিত ধর বলেন, “সোনাকে ডাস্ট করাকে বলে ‘সোনার ছিল’। ওই সোনার ছিল দিয়ে দেবী দুর্গা, লক্ষ্মী, সরস্বতী, কার্তিক, গণেশ, অসুর, মহিষের পাশাপাশি বাহনদেরও তৈরি করা হয়। এর পরে দেবীদুর্গার মুকুট থেকে সোনার অলঙ্কার দিয়ে মূর্তি সাজানো হয়েছে। দেবীদুর্গার পিছনের যে চালা, তাতেও সোনার কাজ রয়েছে। প্রতিমা ও মূর্তির পরনের সিল্কের কাপড়ের উপরেও সোনার সূক্ষ্ম কারুকাজ রয়েছে।”
মণ্ডপে লাগানো হয়েছে সিসি টিভি আর সুরক্ষায় সাদা পোশাকের পুলিশ। দূর-দুরান্ত থেকে আসছেন লোকজন। খাগড়া ফাঁড়ির অফিসার সম্রাট ফণী বলেন, “প্রতিমার সুরক্ষায় ৬ জন পুলিশকর্মী সর্ব ক্ষণের জন্য মণ্ডপ চত্বরে মোতায়েন রয়েছেন। দর্শনার্থীদের ভিড় সামলাতে রয়েছেন ট্র্যাফিক পুলিশ ও পুজো কমিটির সদস্যেরা।” সোনার প্রতিমা কেন? কমিটির সদস্য বাবলা ধর বলেন, “পুজো কমিটির ৫০ তম সুবর্ণজয়ন্তী বর্ষে সোনার প্রতিমা তৈরির পরিকল্পনা গত বছরই করি। পুজো কমিটির ৯০ সদস্য নিজেদের সামর্থ্য অনুযায়ী যেমন পেরেছেন সোনা দিয়েছেন।” আড়াই কিলো ওজনের সোনা লেগেছে বলে বাবলাবাবু জানান।কিন্তু বাবলাবাবু বলেন, “নিরাপত্তার স্বার্থেই ওই প্রতিমা সংরক্ষণ করা সম্ভব নয়। তবে কোনও সহৃদয় ব্যক্তি বা সংস্থা যদি সংরক্ষণের জন্য প্রতিমা কিনে নেন, তাহলে আলাদা কথা। নয়তো পুজোর পরেই ভেঙে ফেলে সদস্যরা যেমন সোনা দিয়েছিলেন, তাঁদের সেই পরিমাণ সোনা ফিরিয়ে দেওয়া হবে।” |