|
|
|
|
দশে মিলেই ওঁরা সামলান দশভুজার পুজো |
নিজস্ব সংবাদদাতা • মেদিনীপুর |
যাঁর পুজো, তিনি দশভুজা। আর যাঁরা উদ্যোক্তা, তাঁরাও দেখাচ্ছেনযিনি রাঁধেন তিনি দিব্যিই চুল বাঁধতেও পারেন!
মেদিনীপুরের অশোকনগরে শিব-ঘরণী, গণেশ-জননীর বাপের বাড়ি আসার যাবতীয় হ্যাপাই সামলাচ্ছেন ওঁরা। উমার জন্য বামারাই এখানে সর্বেসর্বা। ওঁদের কৃতিত্ব একটু বেশিই, কেননা ওঁদের কারও দশ হাত নেই। তা-ও বেশ সামলে যাচ্ছেন সব কর্মকাণ্ড।
অশোকনগর মাঙ্গলিকের পুজো আগাগোড়াই মহিলাদের পুজো। বাড়ি বাড়ি চাঁদা আদায় থেকে পুজোর বাজার করাকী করেন না ওঁরা! পুজোর ক’মাস আগে থেকেই শুরু হয় প্রস্তুতি। ছেলেদের মতো যখন-তখন ঘরের কাজ ফেলে যেহেতু বেরোতে পারেন না, তাই সকাল-দুপুর-রাত বাদে যত কাজ সারেন বিকেলেই। লোকে বলে মেয়েরা নাকি বড় বেশি ইগোর লড়াইয়ে জড়ান। মিলেমিশে কাজে নাকি ততটা দড় নন। দুর্জনের মুখে ছাই ঢেলে অশোকনগরের ওঁরা কিন্তু দেখাচ্ছেন দুর্জয় টিম-স্পিরিট। এক উদ্যোক্তা তো বলেই দিচ্ছেন, “আমাদের দশ হাত না থাকতে পারে। কিন্তু দশ জনে মিলে কাজ করি বলেই তো কাজটা কখনও কঠিন হয় না।”
এ তো শুধু এক বছরের শৌখিনতা নয়। অশোকনগর মাঙ্গলিকের পুজোর এ বার ৩২ তম বর্ষ। বছরের পর বছর সাফল্যের সাথেই ওঁরা শারদোৎসবের আয়োজন করে আসছেন। আর তো শুধু পুজো-লোকাচারেই সীমাবদ্ধ নন ওঁরা। সামাজিক দায়বদ্ধতা থেকে প্রতি বছরই নানা কাজ করেন। এ বারও যেমন রক্তদান শিবিরের আয়োজন করা হয়েছিল পঞ্চমীর দিন। দশমীতে রয়েছে বস্ত্রদান কর্মসূচি। অশোকনগর থেকে কিছু দূরেই কুষ্ঠ-কলোনি। দশমীতে সেখানকার ২৫ জনকেই নতুন বস্ত্র তুলে দেওয়া হবে। পুজো-কমিটির পক্ষে বীণাপাণি সমাজপতি জানাচ্ছেন, সব কাজেই পাড়ার সবার সহযোগিতা পান। পুজোর ক’দিন নানা সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানও হয়। এলাকার ছোট ছেলেমেয়েরা এই অনুষ্ঠানে অংশ নেয়।
মেদিনীপুরে বারোয়ারি দুর্গাপুজোর সংখ্যা শতাধিক। প্রায় সব পুজোরই উদ্যোক্তা ছেলের দল। অশোকনগর মাঙ্গলিক মহিলা সমিতিই প্রথম ব্যতিক্রম। তাঁদের দেখে এখন শহরের অন্য এলাকার মহিলারাও উৎসাহী হচ্ছেন। অশোকনগরের পুজো-উদ্যোক্তাদের অন্যতম তাপসী দে, রঞ্জনা পালিতদের কথায়, “এই সময়টার জন্যই সারা বছরের অপেক্ষা। যে যার কাজের ফাঁকে সময় বের করেই পুজো আয়োজন করি। সকলে আলোচনা করেই কাজ এগোয়।” |
|
|
|
|
|