আত্মপ্রকাশ আইফোন ৪এস-এর
‘জাদুকর’ নেই, পুরনো মঞ্চে মিলল না নয়া চমক
ঞ্চটা ছিল। উৎসাহী জনতা তা-ও ছিল। তবে ‘জাদুকর’ ছাড়া কিছুটা ফিকে হয়ে গেল সে সব কিছুই!
স্টিভ জোবস নামক ক্যারিশমার অনুপস্থিতিতে নিছকই একটা অনুষ্ঠান হয়ে রইল ‘আইফোন ৪এস’-এর আত্মপ্রকাশ। আরও একটা অ্যাপল-সুলভ চমকের অপেক্ষায় ছিলেন যে সব অনুরাগী, দিনের শেষে তাঁরা ফিরলেন খানিকটা হতাশ হয়েই।
কেন? অধিকাংশ আইফোন ভক্তের কথায়, নতুন আইফোন ৪এস হওয়া উচিত ছিল আরও পাতলা। স্ক্রিনটাও হতে পারত আরও একটু বড়। তা ছাড়া ভক্তরাই বলছেন, নতুনত্ব বলতে কিছুই নেই আইফোন ৪এস-এ। দেখতেও পুরনো আইফোন ৪-এর মতোই। যা দেখে এক অনুরাগীর টুইট, “সস্তায় কিছু ‘এস’ স্টিকার কিনে পুরনো আইফোন৪-এর গায়ে লাগিয়ে নিলেই আইফোন ৪এস তৈরি।” ভক্তদের এই ‘অসন্তোষের’ ছায়া পড়ল অ্যাপলের শেয়ারেও। আইফোন ৪এস-এর আত্মপ্রকাশের পরই যার দাম পড়ে গেল অন্তত পাঁচ শতাংশ।
স্টিভ জোবস সিইও-র পদ থেকে অব্যাহতি নেওয়ার পরে এই প্রথম কোনও নতুন গ্যাজেট বাজারে আনতে চলেছে অ্যাপল। কিন্তু সেই আবির্ভাবের জৌলুস এতটা কম মনে হওয়ার কারণ কি শুধুই প্রযুক্তিগত ‘নতুনত্বে’র অভাব? নিন্দুকেরা কিন্তু অন্য একটা ব্যাখ্যাও দিচ্ছেন। যার কেন্দ্রে অ্যাপলের নয়া সিইও টিম কুক। তাঁর পূর্বসূরি প্রতিটা নতুন যন্ত্র হাতে নিয়ে মঞ্চে উঠে খুঁটিনাটি বুঝিয়ে দিতেন। কিন্তু আইফোন ৪এসের আবির্ভাব ঘোষণার সময়ে মঞ্চেই এলেন না নয়া সিইও কুক। বরং আইফোন ৪এস-এর সঙ্গে দর্শকদের পরিচয় করান সংস্থার অন্য এক এগজিকিউটিভ।
এই অ্যাপলের সঙ্গেই কিছুতে মেলানো যাচ্ছে না জোবসের তৈরি করে যাওয়া অ্যাপল-কে। কারণ, কোনও পণ্যের ‘ডেমো’ দেওয়ার সময় যে ‘ক্রেজ’ তৈরি করে দিতেন তিনি নিজে, সেটাই প্রতিযোগীদের বেশ কয়েক কদম পিছনে ফেলে দেওয়ার পক্ষে ছিল যথেষ্ট। কিন্তু নিজের প্রথম ‘পরীক্ষা’য় পূর্বসুরির তৈরি করে যাওয়া ‘মিথ’-এর ধারেকাছেও পৌঁছতে পারলেন না কুক। অ্যাপলের নবতম পণ্যটির জৌলুসহীন আবির্ভাবের জন্য কুকের এই ‘আড়ালে থাকা’কেই অন্যতম কারণ হিসেবে দেখছেন অধিকাংশ বিশেষজ্ঞ। এমনকী, জোবসের হাতে তৈরি অ্যাপলের নেতৃত্ব দেওয়ার মতো ক্ষমতা আদৌ কুকের আছে কি না, প্রশ্ন উঠে গিয়েছে তা নিয়েও।
জোবস-ম্যাজিক ছড়াতে পারলেন না নতুন সিইও টিম কুক। ছবি: এ পি।
তবে বিশেষজ্ঞদেরই আর এক পক্ষ কিন্তু এখনই কুককে এতখানি তাচ্ছিল্য করতে নারাজ। বিশেষজ্ঞ ফ্রাঙ্ক জিলেট যেমন বললেন, “এটা টিম কুকের নিজস্ব স্টাইল। আর আমার মনে হয়, সেটা যথেষ্টই ইতিবাচক। এতে প্রমাণ হয়, সংস্থার রিজার্ভ বেঞ্চ কতটা শক্তিশালী। কোনও এক জনের ক্ষমতার উপরেই তা নির্ভরশীল নয়।” প্রযুক্তিগত দিক থেকেও আইফোন ৪এস-কে খুব একটা পিছিয়ে রাখতে রাজি নন বিশেষজ্ঞ কলিন গিলস। জানালেন, ‘সিরি’ নামে একটি প্রযুক্তি রয়েছে আইফোন ৪এস-এ। আগে বেশ কিছু অ্যান্ড্রয়েড ফোনে এই প্রযুক্তি ব্যবহার করা হলেও অ্যাপল এই প্রথম বার সেটি ব্যবহার করেছে এবং আইফোন ৪এস-এর ‘সিরি’ অনেক উন্নত। এতে ফোন ব্যবহারও হয়ে উঠবে বেশ মজাদার। যেমন, ব্যবহারকারী হয়তো আইফোনটি ‘সিরি’ অনেক উন্নত। এতে ফোন ব্যবহারও হয়ে উঠবে বেশ মজাদার। যেমন, গ্রাহক হয়তো আইফোনটি মুখের সামনে ধরে বললেন, “এ শহরে ভাল রেস্তোরাঁ কোথায় পাব?” ফোনও তৎক্ষণাৎ যান্ত্রিক কণ্ঠে জানিয়ে দিল রেস্তোরার হদিস। এ ভাবেই মিলবে আরও নানান নির্দেশিকা। তা ছাড়া, নতুন ফোনের প্রসেসরটিও অনেক দ্রুত। ইন্টারনেটে আইফোন ৪এস-এর বুকিং শুরু হয়ে যাচ্ছে আগামী শুক্রবার থেকেই।
বিদেশের অ্যাপল-বিপণিতে তা চলে আসছে ১৪ অক্টোবর।
তবে এই মুহূর্তে চুলচেরা বিশ্লেষণকে ঢেকে দিচ্ছে কালো গোলগলা টি-শার্ট আর নীল জিন্স পরা শীর্ণকায় মানুষটির ছায়া। আর কি কখনও ফিরবে জোবস-জাদু? আইফোন ৪এস নিয়ে জল্পনার মাঝেই সেই প্রশ্নের উত্তর হাতড়ে বেড়ালেন তামাম দুনিয়ার আইফোন অনুরাগী।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.