থিমে মাত করেছে বিষ্ণুপুর, সোনামুখী
লোকমুখে ইতিহাসের পাতায় পাতায় বিষ্ণুপুরের নাম বহুকালই টেরাকোটার শহর হিসেবে পরিচিত।
এই শহরের ছিন্নমস্তা রোড সর্বজনীন পুজো কমিটির এ বারের থিম সেই টেরাকোটা। মণ্ডপ থেকে মূর্তি- শুধুই টেরাকোটা। পুজো কমিটির সম্পাদক প্রদীপ কুমার পণ্ডিত বলেন, “বিষ্ণুপুরের ঐতিহ্যকে আমরা তুলে এনেছি। মণ্ডপে টেরাকোটার অলঙ্করণের পাশাপাশি টেরাকোটার নানা মূর্তির প্রদর্শনী থাকছে।”
বাঁকুড়ার বিখ্যাত পোড়ামাটি শিল্পের গ্রাম পাঁচমুড়ার ভাটিশালে তৈরি হচ্ছে মূর্তিগুলি। তৈরি হচ্ছে মণ্ডপ শৈলির চিত্রকলাও। দুর্গা মূর্তি তৈরি থেকে অন্যৈন্য শিল্প সৃষ্টি- সবেতেই হাত লাগিয়েছেন কাঞ্চন কর্মকার। তিনি জানান, তিন মাসের বেশি সময় ধরে মণ্ডপ তৈরি করেছি। তার উপর বৃষ্টির জন্য মাঝে মধ্যে কাজে বাধা পেয়েছি। এখন দর্শকদের ভাল লাগলে আমাদের পরিশ্রম সার্থক।” মণ্ডপের কাজ চলাকালীনই বহু দর্শক ভিড় জমিয়েছিলেন। সপ্তমী ও অষ্টমীর সন্ধ্যায় কার্যত জনজোয়ার। ময়রাপুকুর সর্বজনীন এ বছর ২৫ বছর পূর্তি উপলক্ষে চন্দনগরের আলোকসজ্জায় সাজিয়েছে মণ্ডপ। কুমোরটুলি থেকে প্রতিমা এসেছে। স্থানীয় হস্ত শিল্পের নিদর্শন হিসেবে খড়ের নানা কারুকার্যের মণ্ডপ তৈরি করা হয়েছে। অন্য দিকে সোনামুখী সর্বজনীনের এ বারের থিম- মন্দিরে রাজপ্রাসাদ। বাইরে থেকে দেখলে মনে হবে পুরনো মন্দির। সেই মন্দির পেরোলেই ভুল ভাঙবে। মন্দিরের ভিতরে ঝকঝকে রাজপ্রাসাদ। বাইরে মন্দির। ভিতরে রাজপ্রাসাদ। এই দুইয়ের সংমিশ্রণে এখানে মণ্ডপ তৈরি হয়েছে। মণ্ডপের ভিতরে সপরিবারে দুর্গা।
সোনামুখী সর্বজনীনের প্রতিমা। ছবি: শুভ্র মিত্র।
সোনামুখী শহরের দেওয়ান বাজারে। বাঁকুড়া-বর্ধমান রাস্তার পাশে এই দৃষ্টি নন্দনীয় মণ্ডপ তৈরি হয়েছে। উদ্যোক্তরা জানিয়েছেন, এক হাজার বাঁশ, মাদুর কাঠি, কয়েক ক্যুইন্ট্যাল কাঠগুড়ি, কাপড় দিয়ে তৈরি হয়েছে ওঅ সুদৃশ্য মণ্ডপ। প্রায় ১৭০০ বর্গফুট এলাকা জুড়ে তৈরি হওয়া এই মণ্ডপের ভিতরে বিভিন্ন শিল্পকলার রেখাচিত্র ফুটে উঠেছে। ঝা চকচকে রাজপ্রাসাদকে আলোকিত করেছে রং-বেরংয়ের নানা মাপের ঝাড়বাতি। মণ্ডপের চারপাশে, গেটে ঝলমল করছে আলোর মালা।
কেন এই থিম ভাবনা?
সোনামুখী সর্বজনীন পুজো কমিটির সভাপতি তথা সোনামুখী পুরসভার ভাইস চেয়ারম্যান তপন দত্তের কথায়, “পুরনো মন্দির আর রাজপ্রাসাদের ঐতিহ্যকে সামনে রেখেই এই থিম বেছে নেওয়া হয়েছে।” পুজোর কয়েক দিন ধরে মণ্ডপ চত্বরে নানা সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান হচ্ছে। মণ্ডপ শিল্পী বৃন্দাবন রুদ্র বলেন, “মন্দির ও রাজপ্রাসাদের সংমিশ্রণের মধ্যেও নতুনত্ব নিয়ে আসা হয়েছে।” আবার মনোহরতলা সর্বজনীনের থিম- ‘ডিঙা ভাসাও’। সময়ের তালে তাল মিলিয়ে ডিঙির উত্তরণ হয়েছে জাহাজে। বিবর্তনের এই ধারাপাতকে নিয়েই এ বার মণ্ডপ তৈরি করেছে সোনামুখী মনোহরতলা সর্বজনীন। প্রায় ৫০ বর্গ মিটার এলাকা জুড়ে সুদৃষ্য মণ্ডপ। চট, প্লাস্টার অফ প্যারিস, কাঠের গুঁড়ো, থার্মোকল, বাঁশ ও নারেকল দড়ি গিয়ে তৈরি হয়েছে ময়ূরপঙ্খী নৌকা ও জাহাজ। মণ্ডপে দেবী মূর্তির সামনে রয়েছে নানা আকারের রঙবেরঙের ডিঙি। মাঝখানে ময়ূরপঙ্খী নৌকা। সামনে রয়েছে বিশালাকার জাহাজ। মণ্ডপের ভিতরে ঝোলান কথা মালার গাঁথা নানা বার্তার ব্যানার। সোনামুখীর শিল্পী জয়দেব চন্দ্র মণ্ডপ তৈরি করেছেন। পুজো কমিটির অন্যতম সদস্য সেবাব্রত চট্টোপাধ্যায় বলেন, “যুগের সঙ্গে তাল মিলিয়ে আদ্যিকালের ডিঙি কীভাবে নৌকা থেকে জাহাজ হয়ে উঠল তা আমাদের ডিঙা ভাসাও ছ্মের মধ্যে ফুটে উঠেছে। পাশাপাশি দেবীর কাছে বেঁচে বর্তে দুধে ভাতে থাকার জন্য বিশ্বজনীন আর্তি জানান হয়েছে।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.