|
|
|
|
উৎসবে রং ফিরেছে জঙ্গলমহলে |
বরুণ দে • শালবনি |
আগে দশমীতে রাবণ পোড়া হত। হু মানুষ আসতেন। চলত হইহুল্লোড়। পুলিশ অনুমতি না দেওয়ায় দু’বছর আগে সে সবে দাঁড়ি পড়ে যায়। বলা হয়, গ্রামে এমন কোনও উৎসব করা যাবে না। ফাটানো যাবে না শব্দবাজি।
জঙ্গলমহল জুড়ে তখন যৌথ বাহিনীর অভিযান চলছে। সকাল হলেই ভারী বুটের শব্দ। বারুদের গন্ধ আর রক্ত হয়ে গিয়েছিল জীবনের অঙ্গ। দিন পাল্টেছে। ছন্দে ফিরেছে দুর্গোৎসব। শালবনির গ্রামে ফের শুরু হয়েছে রাবণ-পোড়ার তোড়জোড়। |
|
সাতপাটির পুজোয় খুদেরা। নিজস্ব চিত্র |
শালবনির সাতপাটির পুজো বহু পুরনো। সংলগ্ন পিরাকাটা, মৌপালের মতো এলাকায় যখন পুজো শুরু হয়নি, তখন থেকেই এ পুজোর চল। স্বভাবতই একে ঘিরে থাকে বাড়তি উৎসাহ। প্রত্যন্ত গ্রাম থেকেও অনেকে আসেন। মন্দিরেই প্রতিমা তৈরি হয়। গত ক’দিন ধরে উদ্যোক্তাদের দম ফেলার ফুরসত নেই। কেউ যাত্রাদলের সঙ্গে যোগাযোগ করছেন, কেউ বা মণ্ডপের কাজ দেখভাল করছেন। পুজোর ক’দিন রয়েছে নানা সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানও। সাতপাটির এক যুবক বলেন, “আগে মানুষ মাওবাদীদের ভয়ে কাঁটা হয়ে থাকত। পরে অত্যাচার শুরু করে হার্মাদ বাহিনী। তবে এখন গ্রামে মাওবাদীও নেই, হার্মাদও নেই।” এ বার তাই পুরনো ছন্দে ফিরেছে সাতপাটির পুজো। সাতপাটি সর্বজনীন পুজো কমিটির সদস্য বাবলু সাউয়ের কথায়, “রাবণ পোড়ার প্রস্তুতি হচ্ছে। তেমন হলে শব্দবাজি ফাটানো হবে না। তবে আলোর রোশনাই হবেই।”
উৎসবে মেতেছে পিরাকাটাও। স্থানীয় স্কুল-চত্বরেই হয়েছে পুজোর আয়োজন। পিরাকাটা সর্বজনীনের এ বার ৫৮ তম বর্ষ। এখানেও ২০০৯ সাল থেকে দশমীতে রাবণ-পোড়া বন্ধ রয়েছে। পুজো কমিটির এক সদস্য বলেন, “তখন যৌথ বাহিনীর অভিযান চলছে। পুজোর অনুমতি দেওয়ার সময়ই পুলিশ বলেছিল, রাবণ-পোড়া করা যাবে না।” এ বার অবশ্য রাবণ-পোড়ায় আলোর রোশনাই থাকথে। পুজো-কমিটির অন্যতম স্বপন ঘোষ বলেন, “এই সময়টার দিকে চেয়েই তো বছরভর অপেক্ষা।” থাকছে নানা সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। এলাকার ছেলেমেয়েরাও তাতে যোগ দেয়। পুজো কমিটির সদস্য ধনঞ্জয় রায়, দেবাশিস ঘোষদের কথায়, “এ বার বাউল গানের আসরও থাকছে।”
মৌপাল, জলহরি, জাড়া, পেঁচাপাড়া সর্বত্রই এ বার দুর্গোৎসব রঙিন। |
|
|
|
|
|