মণ্ডপে প্রৌঢ়াকে ধাক্কা,ধৃত তৃণমূল নেতা-সহ ২ |
নিজস্ব সংবাদদাতা • আরামবাগ |
কয়েক মাস ধরেই একটি পারিবারিক বিবাদকে কেন্দ্র করে গোলমাল চলছিল আরামবাগের নৈসরাই গ্রামে। ওই ঘটনার জেরে দলীয় সমর্থক একটি পরিবারকে পাড়ায় মিশতে না দেওয়ার ফতোয়া জারির অভিযোগ ওঠে স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্বের বিরুদ্ধে। মঙ্গলবার ওই পরিবারেরই প্রৌঢ়া সুষমা কোঙার গ্রামের পুজো মণ্ডপে গেলে তাঁকে তৃণমূলের লোকজন ধাক্কা দিয়ে বের করে দেন বলে অভিযোগ। পুলিশ অভিযুক্ত তৃণমূল নেতা-সহ দু’জনকে গ্রেফতার করেছে। তৃণমূল অভিযোগ মানেনি।
সুষমাদেবী পড়ে গিয়ে আহত হন। তাঁকে আরামবাগ মহকুমা হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে। বৃদ্ধা তাঁর প্রতিবেশী তৃণমূল নেতা দীপক গুপ্ত এবং দলেরই ৯ জন কর্মী-সমর্থকের বিরুদ্ধে এ ব্যাপারে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন। দীপকবাবু এবং বিকাশ গুপ্ত নামে এক তৃণমূল কর্মীকে পুলিশ গ্রেফতার করেছে। বাকিদের ধরার চেষ্টা চলছে বলে পুলিশ জানিয়েছে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, মাস ছয়েক আগে বাড়ি তৈরি করা নিয়ে লক্ষ্মীনারায়ণ কোঙারের সঙ্গে তাঁর জেঠতুতো ভাই প্রশান্ত কোঙারের বিবাদ বাধে। তাতে জড়িয়ে পড়েন দীপকবাবু ও তাঁর কয়েক জন অনুগামী। তাঁরা প্রশান্তবাবুর পক্ষ নেন। এর পরে লক্ষ্মীনারায়াণবাবুর স্ত্রী প্রীতিকাদেবী দীপকবাবু-সহ ১১ জন তৃণমূল কর্মী-সমর্থকের বিরুদ্ধে বাড়িতে হামলার লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন থানায়। পরে তাঁরা ফের অভিযোগ করেন, পুরনো অভিযোগ তুলে নেওয়ার জন্য চাপ সৃষ্টি করতে তাঁদের পাড়ায় মিশতে না দেওয়ার ফতোয়া জারি করেন দীপকবাবুরা। সেই সময়ে দীপকবাবু জানিয়েছিলেন, মিথ্যা অভিযোগ তোলা হয়েছে তাঁদের বিরুদ্ধে। প্রতিবেশীরা মিলিত ভাবে পরিবারটির সঙ্গে না মেশার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। প্রীতিকাদেবীর স্বামী সেনাকর্মী বলে নানা ভাবে ওঁরা পাড়ায় ভয় দেখানোর চেষ্টা করেন।
সুষমাদেবী প্রীতিকাদেবীর শাশুড়ি। তিনি এ দিন বলেন, “অষ্টমী পুজো দেখতে এ দিনই পুজো মণ্ডপে গিয়েছিলাম। হঠাৎ ভিড়ের মধ্যে থেকে আমাকে ধাক্কা দিয়ে বের করে দেওয়া হল। আমি পড়ে যাই। তৃণমূলের লোকজনই আমাকে ধাক্কা দিয়েছে।”
দীপকবাবু অভিযোগ মানতে চাননি। তিনি বলেন, “পুজোটা আমাদের পারিবারিক। কিন্তু ওই বৃদ্ধাকে ধাক্কা দেওয়ার প্রশ্নই নেই। চক্রান্ত করে পুজো পণ্ড করার চেষ্টা হচ্ছে।” আরামবাগের মহকুমাশাসক অরিন্দম নিয়োগী বলেন, “পুলিশ বিষয়টির তদন্ত করছে।” আরামবাগের তৃণমূল বিধায়ক কৃষ্ণচন্দ্র সাঁতরা বলেন, “পাড়াগত ঝগড়া। দলের সঙ্গে কোনও যোগ নেই। পাড়াগত ভাবেই মিটিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করা হবে।” |