চতুর্থীর সন্ধে থেকেই যেন পাল্টে গিয়েছে চেনা ছবি। ভাঙা রাস্তা, সরু গলি বা খোলা নর্দমা সব কিছুর মধ্যেও হাওড়া শহরটা হঠাৎ অন্য রকম।
কারণ একটাই। এ বারও পরিবর্তনের ধারার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে হাওড়ার বহু পুজো জিতে নিয়েছে সৃজনশীলতার ‘শিল্ড’। যে রাস্তাগুলো সকাল থেকে লেদ মেশিন আর ছাঁট লোহার কারখানার শব্দে মুখর থাকে, সেই সব রাস্তার বাঁকে-বাঁকে এখন মুগ্ধ জনতার ঢল। কয়েক বছর আগের পুজোতেও যে রাস্তায় রাত ১১টার পরে ভিড় কমে আসত, সেই সব রাস্তা এখন রাত দেড়টাতেও জমজমাট।
বাড়তে থাকা ভিড় স্পষ্ট আভাস দিচ্ছে, কলকাতার থিমশিল্পী বন্দন রাহা, রূপচাঁদ কুণ্ডু, অমর সরকারের মতো হাওড়াতেও আছেন শান্তনু ভট্টাচার্য, দীপঙ্কর ঘোষ, হরিসাধন দাসরা।
হাওড়ায় এ বার সর্বজনীন পুজো ৬১২টি, বাড়ির পুজো ১৮০টি এবং বড় বাজেটের পুজো ৬৯টি। বড় বাজেটের থিমে জঙ্গলমহল থেকে চা-বাগান, পরিবেশ থেকে নিরাপত্তা সবই হাজির। সঙ্গে বিভিন্ন মণ্ডপে বীরভূম বা পুরুলিয়ার প্রত্যন্ত গ্রাম থেকে আসা লোকশিল্পীদের অনুষ্ঠান। হাওড়ার অধিকাংশ পুজোর উদ্যোক্তাদের মতে, আগে হাওড়ার মানুষ কলকাতার পুজো দেখতেই উৎসাহী হতেন। এখন তাঁরা হাওড়ার পুজো দেখতেও যথেষ্ট আগ্রহী। ফলে ভিড়ও অনেক বেশি।
এমনই বক্তব্য শ্রেষ্ঠ পুজোর শিরোপা পাওয়া শিবপুর নবারুণ সঙ্ঘ এবং ইস্ট ইন্ডিয়া রকলাইন্স আ্যাসোসিয়েশন, কল্যাণপল্লি ইউথ ক্লাব, সালকিয়া আলাপনী, কল্পতরু স্পোর্টিং, সুবল স্মৃতি সঙ্ঘ, সহযাত্রী ও ব্যাঁটরা নবীন সঙ্ঘের পুজোর উদ্যোক্তাদের। নবারুণ সঙ্ঘের তরফে শোভন চট্টোপাধ্যায় ও আলাপনীর তরফে অনিরুদ্ধ চট্টোপাধ্যায় জানালেন, এমন ভিড় আগে চোখে পড়েনি। মানুষ প্রতি বারই নতুন কিছু চান। তা দিতে পারায় সকাল থেকে মাঝরাত পর্যন্ত ব্যাপক ভিড় হচ্ছে। অনিরুদ্ধবাবু বলেন, “১৯৭২-এ কলকাতার আগে আমরাই প্রথম থিমপুজো শুরু করি। এখন প্রচারে থিমপুজো আরও আর্কষণীয়।”
গত ৪ দিনে ভিড় সামলাতে কার্যত হিমশিম হাওড়ার নতুন পুলিশ কমিশনারেটও। অষ্টমী-নবমীতে ভিড় বাড়বে ভেবেই ট্রাফিক ব্যবস্থা আগাম ঢেলে সাজিয়েছেন কমিশনারেটের পদস্থ কর্তারা। শহর জুড়ে মোতায়েন ৩০০০ পুলিশ। এ বছর ভিড় অনেকটাই বেশি, তা মেনে নিয়ে বর্তমান ডেপুটি পুলিশ কমিশনার সুকেশকুমার জৈন বলেন, “গত পুজো নির্বিঘ্নে কেটেছে। তবে এ বার চতুর্থী থেকেই মানুষের ঢল দেখে মনে হচ্ছে নবমীতে ভিড় আরও বাড়বে। আরও কড়া হাতে সব সামলাতে হবে।”
|
মঙ্গলবার সকালে আরামবাগের সাতমাসা গ্রামে একটি খড়ের গাদা থেকে একটি রিভলভার উদ্ধার হল। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, স্থানীয় এক ব্যক্তি খড় বিক্রি করছিলেন। সেই সময়ে ক্রেতারা খড়ের গাদায় পলিথিনের ব্যাগে ভরা রিভলভারটি পান। সঙ্গে সঙ্গে খবর দেওয়া হয় পুলিশে। এক রাউন্ড গুলি-সহ রিভলভারটি বাজেয়াপ্ত করেছে পুলিশ। |