রাষ্ট্রীয় স্বাস্থ্য বিমা যোজনার কার্ড জমা রেখে টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ উঠল ঝালদার একটি নার্সিংহোম মালিকের বিরুদ্ধে। অভিযোগের তদন্তের দাবিতে ঝালদা ১ ব্লক অফিসের সামনে তৃণমূলের ওই ব্লকের কার্যকরী সভাপতি ভদ্রদুলাল মাহাতো ২৬ সেপ্টেম্বর থেকে অনশনে বসেছিলেন। জেলাশাসক তদন্তের আশ্বাস দেওয়ায় রবিবার সকালে তিনি অনশন ভাঙেন। পুরুলিয়ার জেলাশাসক অবনীন্দ্র সিংহ বলেন, “অভিযোগের তদন্ত করা হচ্ছে। পুলিশকেও পৃথকভাবে তদন্ত করতে বলা হয়েছে।”
দারিদ্র সীমার নীচে থাকা একটি পরিবার (সর্বাধিক পাঁচ জন) বছরে ৩০ টাকা ‘প্রিমিয়াম’ দিয়ে বছরে ৩০ হাজার টাকা পর্যন্ত চিকিৎসা করাতে পারবেন। ওই প্রকল্পের এটাই সুবিধা। এ জন্য উপভোক্তাদের স্বাস্থ্য বিমার কার্ড দেওয়া হয়েছে। সরকারের সঙ্গে চুক্তি-বদ্ধ নার্সিংহোমে ওই কার্ড দেখিয়ে চিকিৎসা পরিষেবা নেওয়া যায়। ঝালদার বাঘমুণ্ডি রোডের ওই নার্সিংহোম স্বাস্থ্য বিমা যোজনায় পরিষেবা দেওয়ার জন্য চুক্তিবদ্ধ।
ভদ্রদুলালবাবুর অভিযোগ, “ওই নার্সিংহোম কর্তৃপক্ষ এলাকার বাসিন্দাদের ভুল বুঝিয়ে তাঁদের কাছ থেকে স্বাস্থ্য বিমার কার্ড নিজেদের হেফাজতে রাখে। তারপর ওই উপভোক্তাদের নামে ভুয়ো চিকিৎসার খরচ দেখিয়ে লক্ষ লক্ষ টাকা আত্মসাৎ করে। দুর্নীতি নজরে আসার পরেই প্রশাসনের কাছে আমরা তদন্তের দাবি জানাই। কিন্তু, প্রশাসন কোনও ব্যবস্থা না নেওয়ায় বাধ্য হয়ে অনশনে বসেছিলাম।”
ঝালদা-১ ব্লকের মাড়ু-মসিনা পঞ্চায়েতের ব্যাঙো গ্রামের লক্ষণ পরামানিক, রিগিদ পঞ্চায়েতের কাঁড়িয়র গ্রামের শ্যামলী হাঁসদা, তহদ্দরি গ্রামের গুনাধর মাহাতোদের ক্ষোভ, “স্বাস্থ্য বিমার কার্ড পুর্ননবীকরণ করার জন্য ওই নার্সিংহোম কর্তৃপক্ষ গত বিধানসভা নির্বাচনের আগে মাইকে প্রচার করে কার্ডগুলি জমা করতে বলে। তা শুনে আমরা নার্সিংহোমে কার্ডগুলি জমা দিয়েছিলাম। পরে দেখি, আমাদের কার্ড ব্যবহার করে অস্ত্রোপচার, চিকিৎসা করার খরচ দেখানো হয়েছে।”
জেলা তৃণমূলের কার্যকরী সভাপতি সুজয় বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “মিথ্যা প্রচার করেই নার্সিংহোম কর্তৃপক্ষ দুর্নীতি করেছে।” ঝালদা ১ বিডিও সৌমিত্র হোড় বলেন, “কার্ড পুর্ননবীকরণের জন্য কোনও নার্সিংহোম মাইকে প্রচার করতে পারে না।” বাঘমুণ্ডির কংগ্রেস বিধায়ক নেপাল মাহাতো বলেন, “তদন্ত চেয়ে জেলা প্রশাসন ও রাজ্যের স্বাস্থ্য সচিবকে চিঠি দিয়েছি।” তবে ওই নার্সিংহোমে গিয়ে মালিককে পাওয়া যায় নি। তাঁর ফোন বন্ধ রয়েছে। কর্মীরাও মন্তব্য করতে চাননি। |