ঘরছাড়া সিপিএম কর্মীদের ফেরার ডাক তৃণমূল বিধায়কের
হাষষ্ঠীর সকালে এলাকার ঘরছাড়া সিপিএম কর্মী-সমর্থকদের ফেরার আহ্বান জানিয়ে মাইক-প্রচার চালালেন পুড়শুড়ার তৃণমূল বিধায়ক পারভেজ রহমান। শুধু তা-ই নয়, দলের কেউ জুলুম করলে গ্রামবাসীদের রুখে দাঁড়ানোর পরামর্শও দেন তিনি।
বিধানসভা নির্বাচনের পর থেকে হুগলির পুড়শুড়ায় রাজনৈতিক অশান্তি অব্যাহত। সিপিএমের দাবি, তৃণমূলের হাতে মার খেয়ে তাদের অন্তত ১৫১ জন ঘরছাড়া। তাঁদের ফেরাতে গত চার মাসে একাধিক বার প্রশাসনিক বৈঠক হয়েছে। কিন্তু সমস্যা মেটেনি।
এই পরিস্থিতিতে রবিবার পারভেজ একটি গাড়িতে দলীয় কর্মী-সমর্থকদের নিয়ে চব্বিশপুর, জাঁকরি, পাঁচুইখানা, জগন্নাথপুর, বড়দিগরুই, কাবলে-সহ বিভিন্ন গ্রামে মাইকে প্রচার করেন “সবাই বাড়ি ফিরে আসুন। আমাদের দলের কেউ জুলুম করলে গ্রামবাসীরা রুখে দাঁড়ান। মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে আমি আপনাদের পাশে আছি। সন্ত্রাসবাদীরা যে দলেরই হোক, তাদের প্রশ্রয় দেওয়া হবে না।”
সিপিএম সূত্রের খবর, পুজোর সময়ে তাদের ঘরছাড়া কর্মী-সমর্থকদের অনেকেই ফিরতে চান। অভিযোগ, তৃণমূলের ‘সন্ত্রাস’-এর ভয়ে তাঁরা ফিরতে পারছেন না। গত চার মাসে বিক্ষিপ্ত ভাবে বিভিন্ন সময়ে যে জনাকয়েক কর্মী-সমর্থক ফিরেছিলেন, তাঁরাও ফের মার খেয়ে ঘরছাড়া হন।
সিপিএমের পুড়শুড়া জোনাল কমিটির সম্পাদক সুখেন্দু অধিকারী বলেন, “আমরা ঘরছাড়া ১৫১ জন কর্মী-সমর্থকের নামের তালিকা প্রশাসনের কাছে দিয়েছি। তাঁদের মধ্যে ১৪টি শিশুও রয়েছে। প্রশাসন মাঝেমধ্যে সর্বদলীয় বৈঠক করছে ঠিকই। কিন্তু কাজের কাজ কিছু হচ্ছে না।” এ দিন বিধায়কের প্রচারকে তিনি খুব একটা গুরুত্ব দিতে রাজি নন। সুখেন্দুবাবুর কথায়, “উদ্যোগ ভাল। কিন্তু এর আগেও আমাদের ঘরছাড়া কর্মী-সমর্থকেরা বাড়ি ফিরে ফের মার খেয়েছেন এবং আবার ঘর ছেড়ে চলে যেতে বাধ্য হয়েছেন।”
বিধায়কের ওই ঘোষণার পরে কী করণীয়, তা নিয়ে দ্বিধায় রয়েছেন ঘরছাড়া সিপিএম কর্মী-সমর্থকেরা। যেমন, বড়দিগরুই গ্রামের ঘরছাড়া সিপিএম কর্মী কাশেম আলি বলেন, “দুর্বিষহ অবস্থায় দিন কাটছে। প্রশাসন ঘরে ফেরানোর কোনও ব্যবস্থা করছে না। বিধায়কের ডাকে ফেরা ঝুঁকি হয়ে যাবে কি না, বুঝতে পারছি না। ওদের দলে কোনও অনুশাসন নেই।” ঘোলদিগরুইয়ের ঘরছাড়া সিপিএম কর্মী শেখ নজরুল বলেন, “বিধায়কের উপরে ভরসা রেখে বাড়ি ফিরতে চাই। প্রশাসন আমাদের ফেরানোর ব্যবস্থা করুক।” একই বক্তব্য শোনা গিয়েছে আরও কিছু ঘরছাড়া সিপিএম কর্মী-সমর্থকের মুখেও। তবে রবিবার রাত পর্যন্ত ঘরছাড়াদের কেউই প্রায় ফেরেননি।
এ দিন কেন এমন ঘোষণা করলেন পারভেজ?
বিধায়কের জবাব, “প্রশাসন তাদের মতো করে ঘরছাড়া সিপিএম কর্মী-সমর্থকদের ফেরানোর চেষ্টা করছে। বিধায়ক হিসাবে আমারও একটা দায়িত্ব রয়েছে। এলাকায় সম্পূর্ণ শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য পুজোই সেরা সময়। আমি চাই, ঘরছাড়ারা ফিরুন।”
ঘরছাড়া সিপিএম কর্মী-সমর্থকদের ফেরানো নিয়ে শেষ বার আরামবাগে মহকুমাশাসকের দফতরে সর্বদলীয় বৈঠক হয় গত ২৩ সেপ্টেম্বর। সেখানে এসডিপিও এবং মহকুমার চারটি থানার ওসি-রাও ছিলেন। প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই বৈঠকে ঠিক হয়, পুজোর আগেই কিছু ঘরছাড়াকে ফেরানো হবে। পরে দফায় দফায় ফেরানোর প্রক্রিয়া চলবে। যদিও এ পর্যন্ত কাউকে ফেরানো হয়নি। এ ব্যাপারে মহকুমাশাসক অরিন্দম নিয়োগী বলেন, “ঘরছাড়াদের ফেরানোর প্রশাসনিক প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। পুলিশ বিষয়টি দেখছে।” এসডিপিও (আরামবাগ) আকাশ মাগারিয়া জানান, ঘরছাড়াদের তালিকা নিয়ে প্রতিটি থানা ধরে সর্বদলীয় বৈঠক চলছে। প্রথম দফায় কাদের ফেরানো হবে, তা নিয়ে আলোচনা চলছে। শীঘ্রই তাঁদের ফেরানো হবে।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.