নামী পুজো কমিটির কর্তারা যখন ঠিক করেন পরের বছরের থিম, তাঁরা তখন ভাবতে শুরু করেন আগামী পুজোয় কোন নাটক করাবেন আবাসনে।
ছোটবেলায় পাড়ার পুজোয় সকাল থেকে মা-কাকিমাদের ব্যস্ততা আর সেই সুযোগে বন্ধুদের সঙ্গে একটু বেশি দুষ্টুমি, এখন শুধুই স্মৃতি। একটু বড় হয়ে বন্ধুরা মিলে মণ্ডপ সাজানোর গুরুদায়িত্ব পাওয়ার দিনও কলকাতা থেকে প্রায় হারিয়ে গিয়েছে থিমের জোয়ারে। শিল্পীর সাজানো মণ্ডপে দর্শনার্থীর ভিড় সামলাতে গিয়ে পাড়ার বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডার সময়ও এখন প্রায় নেই।
আর এই ‘হারিয়ে যাওয়া’ বিষয়গুলিই ফিরিয়ে দিতে চান আবাসনের পুজোর কাণ্ডারীরা। সবাই মিলে পুজোর আয়োজন তাই এখন বিভিন্ন আবাসনের দুর্গোৎসবের বৈশিষ্ট্য। উৎসবের দিনগুলোয় একসঙ্গে খাওয়াদাওয়া, শঙ্খ বাজানো আর ধুনুচি নাচের মতো প্রতিযোগিতাও এখন দেখা যায় সে সব জায়গাতেই। সেই সঙ্গে চলে জমিয়ে আড্ডা। মাস খানেক আগে থেকেই ঘরে ঘরে পড়াশোনা আর অফিসের ব্যবস্ততার ফাঁকে শুরু হয়ে যায় নাচ-গান-নাটকের মহড়া।
পঞ্চমী থেকে নবমী এ রকমই নানা অনুষ্ঠানে মেতে থাকার পরিকল্পনা রয়েছে সল্টলেকের ‘দত্তাবাদ অঙ্কুরশিখা সঙ্গতি’র আবাসিকদের। ছোটদের নাচ-গান, ম্যাজিক শো-এর পাশাপাশি এখানে আয়োজন করা হয়েছে বড়দের ফুচকা খাওয়া আর মোমবাতি জ্বালানোর প্রতিযোগিতাও।
ওই অঞ্চলেরই আর এক আবাসন ‘দ্য জেনিথ্ কো-অপারেটিভ সোসাইটি’র পুজোয় আবার আনন্দের কেন্দ্রে থাকে পাঁচটা দিন একসঙ্গে খাওয়াদাওয়ার আয়োজন। পুজোর ক’টা দিন বাড়ির গিন্নিরা যাতে হেঁসেল ভুলে মন দিতে পারেন পুজোর কাজে, সে কারণেই এই ভাবনা। সঙ্গে থাকে আবাসিকদের নিয়ে নানা সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।
গড়িয়ার ‘ভিক্টোরিয়া গ্রিনস্’ আবাসনের পুজোয় বিশেষ নজর থাকছে প্রতিমা আর মণ্ডপসজ্জাতে। রং-বেরঙের মণ্ডপে বসছে তিনচালার প্রতিমা। পাশাপাশি পুজোর চার দিন নানা সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে পুজো মণ্ডপ মাতিয়ে রাখতে প্রস্তুত হচ্ছেন সব আবাসিকেরাই।
বৈষ্ণবঘাটা পাটুলির আবাসন ‘দক্ষিণী’-তে এ বছরেই প্রথম পুজো হচ্ছে। মণ্ডপ সাজানো থেকে সান্ধ্য আড্ডা, সবেতেই তাই সমান উৎসাহ আবাসিকদের। উৎসবের চারটে দিন আবাসনকে জমজমাট রাখার ব্যস্ততায় কয়েক মাস ধরেই সেখানে জাঁকিয়ে বসেছে পুজোর মেজাজ।
প্রথম পুজো হলেও কোনও বিষয়ে পিছিয়ে থাকতে নারাজ এই আবাসন। |