মণ্ডপ লাগোয়া মাঠ।
পুজোর দিন কয়েক আগে থেকেই সেখানে সরঞ্জাম নিয়ে হাজির হন বাজি প্রস্তুতকারকেরা। সেখানেই তাঁরা তৈরি করেন বাদাম গাছ, হাওয়াই, চড়কি, তুবড়ি-সহ বিভিন্ন ধরনের আতসবাজি। একাদশীর দিন ওই সব আতসবাজির রঙিন আলোয় উৎসব করেন গ্রামবাসীরা। পূর্বস্থলী ১ ব্লকের দক্ষিণ শ্রীরামপুর আমরা সবাই দুর্গামাতা পুজো কমিটির পুজোয় এই রেওয়াজ চলে আসছে বেশ কয়েক বছর ধরে।
দক্ষিণ শ্রীরামপুর এলাকার বেশিরভাগ মানুষ তাঁতশিল্পের সঙ্গে যুক্ত। কারও নিজস্ব তাঁত রয়েছে। কেউ আবার তাঁতশ্রমিকের কাজ করেন। পুজোর দিন সাতেক আগে থেকেই বন্ধ হয়ে যায় কাজ। ফের শুরু হয় লক্ষ্মীপুজোর পর থেকে। বাসিন্দারা জানান, দুর্গাপুজো এখানকার বড় উৎসব। গ্রামের অনেকেই কাজের তাগিদে মুম্বই-সহ রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় থাকেন। তাঁরাও এই সময়ে বাড়ি ফেরেন। |
এ বার পুজোর বাজেট সাড়ে তিন লক্ষ টাকা, জানান পুজোর উদ্যোক্তারা। তাঁদের দাবি, এলাকায় তাঁদের পুজোই সবথেকে বড় বাজেটের। টানা দশ দিনের বৃষ্টিতে এ বার এই পুজো ঘিরে চরম অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছিল। বানভাসি হয়ে গ্রাম ছেড়েছিলেন অনেকেই। তবে পরিস্থতি স্বাভাবিক হতেই গ্রামবাসীরা প্রস্তুতি শুরু করেন। বৌদ্ব মন্দিরের আদলে তৈরি হয়েছে মণ্ডপ। মণ্ডপের ভিতরেৃবাইরে রয়েছে বিভিন্ন কারুকার্য। রাস্তাঘাট ভরে গিয়েছে রঙিন আলোয়। পুজোর দিনগুলিতে এখানে মেলাও বসে। পঞ্চমীর সন্ধ্যায় স্থানীয় বিধায়ক স্বপন দেবনাথ পুজোর উদ্বোধন করেন।
পুজো মণ্ডপের পাশেই তৈরি হয়েছে মঞ্চ। সেখানে পুজোর দিনগুলিতে থাকছে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন। স্থানীয় শিল্পীদের পাশাপাশি থাকবেন কলকাতার শিল্পীরাও। এছাড়া ভ্রাম্যমান কুইজ প্রতিযোগিতাও আয়োজন করা হয়েছে। অষ্টমীর দিন নিদির্ষ্ট পরিমাণ অর্থের বিনিময়ে বাড়ি বাড়ি ভোগ বিতরণ করা হবে।
পুজো কমিটির সম্পাদক সুজিত দেবনাথ বলেন, “পুজোর মূল আকর্ষণ আতজবাজি। এলাকায় চাঁদা তুলে উৎসবের সমস্ত অর্থ আসে।” তাঁতশিল্পী জয়ন্ত দত্ত, বিকাশ সরকারের কথায়, “পুজোর জন্য অনেকেই সারা বছর ধরে টাকা জমায়। ভিন্ রাজ্যে যাঁরা থাকেন, তাঁরা আসতে না পারলেও চাঁদা পাঠিয়ে দেন।”
পুজোর ক’দিনের বাঁধনছাড়া আনন্দ শেষে চেনা ছকে ফেরে দক্ষিণ শ্রীরামপুর।
ফের শুরু হয় এক নতুন অধ্যায়। |