আশা প্রকল্পের কর্মী নিয়োগের ইন্টারভিউয়ে বেনিয়ম হয়েছে, এই অভিযোগে হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন এক প্রার্থী। আদালত জেলাশাসককে অভিযোগ খতিয়ে দেখে তদন্তের নির্দেশ দেন। শুনানির পরে ওই প্যানেল বাতিল করার নির্দেশ দিলেন জেলাশাসক। বর্ধমানের সরাইটিকর পঞ্চায়েতের পালিতপুর সাবসেন্টার এলাকায় আশা প্রকল্পের কর্মী নিয়োগে এই ঘটনা ঘটেছে। নতুন প্যানেল তৈরির জন্য ফের ইন্টারভিউয়ের নির্দেশও দিয়েছেন জেলাশাসক ওঙ্কার সিংহ মিনা।
ফাল্গুনী বন্দ্যোপাধ্যায়, ময়না মোল্লা ও অর্চনা তাএই তিন প্রার্থীর ইন্টারভিউ নেওয়া হয়। তিন জনের মাধ্যমিকে প্রাপ্ত নম্বর ছিল শতকরা ৫০.৪৯, ৪১.৫০ ও ৩৮.৭৫। ইন্টারভিউতে তাঁরা ২০ নম্বরের মধ্যে পান যথাক্রমে ১০, ১৯.৭৫ ও ১৬.২৫। ময়না মোল্লাকে সফল প্রার্থী হিসেবে প্যানেল তৈরি হয়। তাঁকে ইন্টারভিউতে ইচ্ছাকৃত ভাবে কম নম্বর দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ করে হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন ফাল্গুনীদেবী। হাইকোর্টের থেকে অভিযোগ নিষ্পত্তির নির্দেশ পেয়ে জেলাশাসক দুই প্রার্থী ময়না মোল্লা, ফাল্গুনী বন্দ্যোপাধ্যায় এবং ইন্টারভিউ বোর্ডের সবাইকে ডেকে শুনানি করেন। চিঠি পেয়েও অবশ্য শুনানিতে উপস্থিত হননি সারইটিকর পঞ্চায়েতের প্রধান।
শুনানিতে ফাল্গুনীদেবী জানান, কথা ছিল ইন্টারভিউ বোর্ডের সদস্যেরা চারটি মৌখিক প্রশ্ন করবেন। কিন্তু তাঁকে পাঁচ থেকে ছ’টি প্রশ্নের উত্তর দিতে হয়। তাঁর দাবি, তিনি একটি ছাড়া প্রতিটি প্রশ্নের ঠিক উত্তর দিয়েছিলেন। ময়না মোল্লা জানান, তাঁকে দুই-তিনটি প্রশ্ন করা হয়েছিল। তিনি সব ক’টির উত্তর দেন। প্রশাসন সূত্রে খবর, শুনানিতে উপস্থিত কুড়মুন ব্লক স্বাস্থ্যকেন্দ্রের বিএমওএইচ ওই পদের জন্য তৈরি হওয়া প্যানেলের আসল নথি জমা দিতে পারেননি। তিনি একটি প্রতিলিপি জমা দেন। প্রার্থীদের প্রাপ্ত সমষ্টিগত নম্বরের তালিকাও তিনি জমা দিতে পারেননি। শুনানিতে জানা যায়, পালিতপুর সাব-সেন্টারের নার্সিং কর্মী ইন্টারভিউয়ের সময় উপস্থিত হলেও, দ্রুত বোর্ড ছেড়ে চলে যান। ফলে কোন প্রার্থী কত নম্বর পেয়েছেন, তা তিনি বলতে পারেননি। অথচ পালিতপুর সেন্টারের সরাইটিকর সাব-সেন্টারের নাসির্ং কর্মী অন্নপূর্ণা কর্মকার ওই ইন্টারভিউ বোর্ডের সদস্য হিসেবে মৌখিক পরীক্ষার সময়ে উপস্থিত ছিলেন।
জেলাশাসক জানান, এক কেন্দ্রের ইন্টারভিউ বোর্ডে অন্য কেন্দ্রের কর্মী থাকাটা নিয়ম বহির্ভূত। শুনানিতে বোঝা গিয়েছে, প্যানেল সংক্রান্ত নথি ব্লক স্তরে খতিয়ে দেখাও হয়নি। সমস্ত প্রার্থীদের ফের ইন্টারভিউ করে এক মাসের মধ্যে নতুন প্যানেল তৈরির নির্দেশ দিয়েছেন তিনি। তবে তিনি এ নিয়ে সরাসরি কোনও মন্তব্য করতে চাননি। এ প্রসঙ্গে কোনও কথা বলতে চাননি শুনানিতে উপস্থিত সদস্যেরাও। |