রাজ্যে রেশনে খাদ্যপণ্য সরবরাহের ক্ষেত্রে দুর্নীতির অভিযোগ দীর্ঘদিনের। ক্ষমতায় এসেই খাদ্য দফতরের ‘বাস্তুঘুঘুর বাসা’ ভাঙতে হবে বলে জানান মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এই অবস্থায় রেশন ব্যবস্থা ঢেলে সাজতে বেসরকারি হোলসেলার নিয়োগ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে রাজ্য। নির্দিষ্ট কমিশনের বিনিময়ে হোলসেলারেরাই রেশন দোকানে রেশন-সামগ্রী পৌঁছে দেবেন। খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক শুক্রবার জানান, রেশনে খাদ্য সরবরাহ নিয়ে অনিয়মের অভিযোগ নতুন ব্যবস্থায় অনেকটাই কাটানো সম্ভব হবে।
প্রথম দফায় কলকাতা ও হাওড়ার জন্য মোট ১৪ জন হোলসেলার নিয়োগ করা হবে। উত্তর-দক্ষিণ কলকাতার জন্য ১১ জন এবং হাওড়ায় তিন জনকে নিয়োগ করা হচ্ছে। এর জন্য খাদ্য দফতরের খরচ হবে মাসে এক কোটি ১৪ লক্ষ টাকা। এই খরচ নিয়ে খাদ্যমন্ত্রীর কাছে আপত্তির কথা জানিয়েছে কংগ্রেসের শ্রমিক সংগঠন ইসিএসসি এমপ্লয়িজ অ্যান্ড ওয়ার্কার্স ইউনিয়ন। সংগঠনের সভাপতি অসিত মিত্রের বক্তব্য, যে-কাজ এত দিন খাদ্য দফতরই করত, তার দায়িত্ব বেসরকারি হাতে তুলে দেওয়ার পিছনে স্বার্থান্বেষী আমলাদের খেলা রয়েছে। খাদ্য দফতরের ‘নোডাল এজেন্সি’ ইসিএসসি-কে দিয়ে এই কাজ করালে সংস্থার আর্থিক বুনিয়াদই মজবুত হত। হোলসেলারদের হাতে রেশনের চাল, ডাল ইত্যাদি সরবরাহের দায়িত্ব ছেড়ে দেওয়া নিয়ে আপত্তির কথা জানিয়েছে রাজ্য রেশন ডিলার সংগঠনও। তাদের বক্তব্য, খাদ্য নিরাপত্তা আইনে গরিবদের জন্য খাদ্য সংরক্ষণের উপরে যখন জোর দেওয়া হচ্ছে, তখন ‘হ্যান্ডলিং লস’ বাবদ হোলসেলারদের চাল ও গমে প্রতি কুইন্টালে ৩১২ গ্রাম এবং চিনিতে ৩৯০ গ্রাম করে ছাড় দেওয়া হচ্ছে। এতে বিপুল অপচয় হবে। সংগঠনের নেতা বিশ্বম্ভর বসু বলেন, ‘‘বাম আমলে এই ধরনের নির্দেশ জারি হয়। আমাদের আপত্তিতে তা কার্যকর করা যায়নি। ফের সেই চেষ্টা শুরু হয়েছে।’’ |