|
|
|
|
|
|
|
পুস্তক পরিচয় ৩... |
|
শারদ সাহিত্যের বড় বাজার |
বইপোকা |
আশ্বিনের মাঝামাঝি, পূজার বাজনা উঠিল বাজি। বৎসরের পর বৎসর দুর্গোৎসবের ঢাকে কাঠি পড়িতেছে, আকাশ-বাতাস ভরিয়া উঠিতেছে সেই একই বাজনায়। তাহাই স্বাভাবিক, বরং ওই বাজনাটি বদলাইয়া গেলেই আর মনে হইত না পূজা আসিতেছে। কারণ, ওই বাজনাটি ধুয়া, ঠিক যেমন নীল আকাশে সাদা মেঘের ভেলা। ওই ধ্রুবপদটিকে বাঁধিয়া রাখিয়াই নূতনের উৎসব দুর্গাপূজা আসিয়া থাকে। বিজ্ঞাপন তাই বলিয়া থাকে, পূজায় চাই নূতন...। নূতন চাই আমারও। তাই মহালয়ার দিন আফিঙের মাত্রা কিঞ্চিৎ বেশি চড়াইয়া হাজির হইয়াছিলাম বড় বাজারে। ভিড়াক্রান্ত নানা বাজার পার হইয়া পৌঁছিলাম সাহিত্যের বাজারে। কিন্তু কিমাশ্চর্যম্, অসংখ্য মাছিগণ ইহাতে ভিড় করিয়াছেন। জিজ্ঞাসা করিলাম, ‘এ কিসের দোকান?’ দোকানিরা বলিল ‘শারদীয়া সাহিত্য’। ‘বেচিতেছে কে?’ ‘আমরাই বেচি। দুই এক জন বড় মহাজনও আছেন। তদ্ভিন্ন বাজে দোকানদারের পরিচয় সাময়িকপত্রে পাইবেন।’ ‘কিনিতেছে কে?’ ‘আমরাই’। বিক্রেয় পদার্থ দেখিবার বাসনা হইল। দেখিলাম সিলকিংয়ে আবৃত কতকগুলি অপক্ব কদলী। বুঝিলাম অনন্ত, অকূল, অন্ধকারময়, নিস্তরঙ্গ এই বাজার বড় বাজার নহে, ছোট-র বাজার। বৃহতে ইহার রুচি নাই, ক্ষুদ্রে ক্ষুদ্রে বৎসরগত পাপক্ষয় করাতেই ইহার আনন্দ। অকস্মাৎ মার্জারী-র ফ্যাঁচ করিয়া হাসিতে ঘোর ভাঙিল। দেখিলাম প্রসন্নও আসিয়াছে, এক হাঁড়ি ঘোল আনিয়া আমাকে সাধিতেছে, ‘চক্রবর্তী মশাই, দুঃখ করিও না, দুগ্ধের দিন গত হইয়াছে, এই ঘোলটুকু আনিয়াছি ইহার দাম দিতে হইবে না।’ |
|
|
|
|
|