|
|
|
|
|
|
|
পুস্তক পরিচয় ২... |
|
‘আকাশের নীচে পাতা ট্রামের তারের গলিঘুঁজি’ |
‘নিজের কথা’ লিখেছেন সুরঞ্জনা দাশগুপ্ত আর প্রবীর গুহ। স্যাস নাট্যপত্র-এর (সম্পা: সত্য ভাদুড়ি) ‘প্রবন্ধ’ বিভাগটি বাদল সরকারের থিয়েটার ঘিরে, তাতে বাদল সরকার-সহ বিশিষ্ট জনেদের রচনা। ‘নাটক’-এর সঙ্গে রয়েছে ‘গ্রন্থ ও ‘নাট্য-সমালোচনা’। ‘সাক্ষাৎকার’-এ স্লোভেনিয়ার চিন্তাবিদ-নাট্যকার এভাল্ড ফ্লিসার জানিয়েছেন ‘সমাজতান্ত্রিক কাঠামো বলতে যা দেখেছি তাতে আমার বিন্দুমাত্র সায় নেই। কারণ আমি বরাবরের মতই ব্যক্তির স্বাধীন মতামত, গণতান্ত্রিক পদ্ধতি, নির্বাচনের অধিকার ইত্যাদির দ্বিধাহীন সমর্থক।’
পূর্ব পশ্চিম (সম্পা: সৌমিত্র মিত্র) বার্ষিক নাট্যপত্রে বঙ্গরঙ্গমঞ্চে শিশির ভাদুড়ি আর বাদল সরকারের অনস্বীকার্য ভূমিকা নিয়ে অবশ্যপাঠ্য দু’টি নিবন্ধ প্রভাত দাস দেবাশিস মজুমদারের। রমাপ্রসাদ বণিককে নিয়ে ক্রোড়পত্রে একগুচ্ছ রচনা, তাঁর জীবনপঞ্জিও। এক দীর্ঘ সাক্ষাৎকারে দেবতোষ ঘোষ জানালেন ‘বহুরূপীর রবীন্দ্রনাটক ইতিহাস এই জন্যে যে শম্ভু মিত্র নিজেকে রবীন্দ্রনাথের থেকে কম ক্ষমতার অধিকারী মনে করতেন। এটা এখনকার নির্দেশকরা মনে করেন না।’ চিত্রা সেন শাঁওলী মিত্র স্বাতীলেখা সেনগুপ্ত অনসূয়া মজুমদারের সঙ্গে সাক্ষাৎকার-ভিত্তিক রচনা সীমা মুখোপাধ্যায়ের ‘চার দুয়ার-এক উঠোন’।
মায়া ঘোষ এক সাক্ষাৎকারে জানিয়েছেন তাঁর ‘অভিনয় শিক্ষাগুরু’ অজিতেশ বন্দ্যোপাধ্যায়ের কথা। এ ছাড়াও প্রবন্ধ, নাটক, নাট্য সমালোচনা ইত্যাদি নিয়ে নাট্যসৃজনী-র (সম্পা: অন্তিকা চট্টোপাধ্যায়) শারদ সংখ্যা।
‘নানা বাংলা, নানা বাঙালি’ নিয়ে বেরল অগ্রবীজ। এই সংখ্যার সম্পাদক সৌম্য দাশগুপ্ত জানিয়েছেন বিষয়টির ঐতিহাসিক রাজনৈতিক সামাজিক ভাষাতাত্ত্বিক জাতীয় ও আন্তর্জাতিক গুরুত্বের কথা। এই নিক্তিতেই নেওয়া কবি ফরহাদ মজহার ও নবারুণ ভট্টাচার্যের সাক্ষাৎকার, সঙ্গে সুধীর চক্রবর্তী-সহ বাংলা ভাষা ও সাহিত্যের চর্চাকারীদের নিবন্ধাদি।
কবিতা-গল্প-প্রবন্ধ-জীবনী-স্মৃতিকথা-ভ্রমণ-রম্যরচনা ইত্যাদি নিয়ে শারদীয় কথাসাহিত্য (সম্পা: সবিতেন্দ্রনাথ রায়)। বদলে-যাওয়া কলকাতার পুরনো স্মৃতি নিয়ে আশ্চর্য রচনাটি অনিতা অগ্নিহোত্রীর: ‘স্বপ্নে দেখছি হাজরার মোড়ে আকাশের নীচে পাতা ট্রামের তারের গলিঘুঁজি... ট্রামলাইনটা কেমন যেন ধনুকের মতো উঠে মিশে গেছে আদি গঙ্গার ব্রিজে, ওরই উপরকার আকাশে সূর্য অস্ত যায় রোজ।’
‘ধর্ম সাধনার প্রায় সমস্ত প্রচলিত পথেই শ্রীরামকৃষ্ণ বিচরণ করেছিলেন। ফলত, কোনও একটি বিশেষ ধর্মীয় বা দার্শনিক মতবাদকে তিনি প্রাধান্য দেননি। যে ধর্মে গান নেই, সূক্ষ্ম সৌন্দর্য ভাবনা নেই, কান্তিবিদ্যা নেই, মানুষের প্রতি অনুরাগ নেই সে ধর্মে রামকৃষ্ণের রুচি ছিল না।’ রমাকান্ত চক্রবর্তীর এ-লেখার সঙ্গে শ্রীরামকৃষ্ণকে নিয়ে আরও নানা প্রবন্ধে ঋদ্ধ কোরক (সম্পা: তাপস ভৌমিক) শারদ সংখ্যা। এবং এই সময়-এরও ‘শ্রীরামকৃষ্ণ প্ল্যাটিনাম শতবর্ষ বিশেষ সংখ্যা’। সম্পাদক অরুণ বন্দ্যোপাধ্যায় জানাচ্ছেন: ‘যত মত তত পথ’-এর ধর্মীয় দর্শন নিয়ে মানববিশ্ব এগিয়ে চলতে চাইছে। ১৮৩৬-এ আবির্ভূত রামকৃষ্ণ পরমহংস এই তত্ত্বকে প্রচার করেছেন। এ ধর্ম পৌত্তলিক পূজা-ধর্ম নয় এ ধর্ম মানবধর্ম।
জন্মশতবর্ষে অর্থনীতিবিদ্ ভবতোষ দত্তকে নিয়ে লিখেছেন সম্পাদক অশোক সেন, শারদীয় বারোমাস-এর ‘স্মরণ’-এ। ‘আবার রামমোহন’-এ পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের নতুন চিন্তা: ‘রামমোহন-দ্বারকানাথের সময় কলকাতায় একটা বিশিষ্ট নাগরিক সমাজ তৈরি হয়েছিল যার প্রধান রাজনৈতিক কর্মসূচি ছিল ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির সার্বিক একচেটিয়া ক্ষমতার বিরোধিতা করে মুক্ত বাণিজ্য, নাগরিক অধিকার আর ইওরোপিয়ান অভিবাসনের পথ প্রশস্ত করা।’ ষাট-সত্তরের দশকে বাঙালির মার্কসবাদী হয়ে-ওঠার ইতিহাস দীপেশ চক্রবর্তীর লেখায়: ‘বিধি বাম? কলকাতায় মার্কস, ১৯৬৫-১৯৭৫’, তাতে তিনি জানিয়েছেন ‘কলকাতায় আমি মার্কসকে গভীরভাবে ইংরিজিতে যাকে বলে, critically পড়তে শিখিনি। সেই ঐতিহ্যের স্বাদ পরে পেয়েছি পশ্চিমে।’ চিত্তরঞ্জন দাশের চিন্তাভাবনা, রাজনৈতিক কার্যক্রমের ভিতর দিয়ে ‘বাঙালি জাতীয়তা’র যে উজ্জ্বল প্রকাশ ঘটেছিল তার পূর্ণতা-অপূর্ণতার বিশ্লেষণ সেমন্তী ঘোষের কলমে। পরাধীন বাংলা থেকে স্বাধীনতা-উত্তর পশ্চিমবঙ্গের প্রান্তিকতায় অবসিত হওয়ার ইতিহাস অমিতাভ গুপ্তের রচনায়। উন্নয়নের নৈতিকতা নিয়ে অভিরূপ সরকারের রচনার পাশাপাশি উন্নয়নে গরিবের যোগদানের বিষয়টিকে নিয়ে ইতিহাস ও তত্ত্বের মিশোলে লিখেছেন স্বাতী ভট্টাচার্য। স্থবির দাশগুপ্তের ‘ক্যানসার-চর্চা এবং সন্ত্রাসবাদ একটি রূপরেখা’ অত্যন্ত জরুরি রচনা। ‘প্রসঙ্গ রবীন্দ্রনাথ’-এ ভিন্ন ভাবনা অমিয় দেব শেফালী মৈত্র বিশ্বজিৎ রায় সোমেশ্বর ভৌমিকের রচনায়। বাংলা ছবি নিয়ে মৈনাক বিশ্বাসের তত্ত্ব-রচনা: নিও-ভদ্রলোক দর্পণ। ‘বিশেষ রচনা’-য় পড়তেই হবে মণীন্দ্র গুপ্ত পরিমল ভট্টাচার্য সুধীর চক্রবর্তী রংগন চক্রবর্তী রামকুমার মুখোপাধ্যায়ের লেখা। এ ছাড়াও গল্প, কবিতা, বই নিয়ে আলোচনা।
ই বি হ্যাভেলের জন্ম ইংল্যান্ডে, ১৮৬১, তাঁরও সার্ধশতবর্ষ। তেইশ বছর বয়সে প্রথম তিনি ভারতে আসেন। ‘তখনই তাঁর মনে হয়েছিল যে ভারতীয় শিল্পীদের প্রকৃত বিকাশ সম্ভব তাঁদের নিজস্ব রীতির ও আদর্শের শিল্পকলার ধারায় ইউরোপীয় রীতির অনুকরণে নয়।’ তাঁকে নিয়ে লিখেছেন অশোক ভট্টাচার্য, শারদীয় পরিচয়-এ (সম্পা: বিশ্ববন্ধু ভট্টাচার্য)। পত্রিকার শুরুতেই সৌরীন ভট্টাচার্যের প্রবন্ধ ‘কেবলই শব্দের জন্ম হয়’, বাংলাদেশের নাট্যপ্রতিভা সেলিম আল দীনকে নিয়ে অরুণ সেনের রচনা। বিভিন্ন বিষয়-সহ রবীন্দ্রনাথ নিয়েও বিশিষ্ট প্রাবন্ধিকদের রচনা। |
|
|
|
|
|