আনন্দ আর বেদনা

দশমীতে সঞ্জয়ের জন্মদিন পড়েছে
এ বার দশমীটা আমার কাছে স্পেশাল। ওই দিনটায় সঞ্জয়ের জন্মদিন পড়েছে। ও বলছে কাজ আছে, সিঙ্গাপুর ফেরত যেতে হবে। কিন্তু আমি প্রাণপণ চেষ্টা করছি আটকে রাখার। দশমীতে আমাকে সিঁদুর খেলতে যেতেই হবে। রবিনসন স্ট্রিটে মায়ের বাড়িতে। আরও কয়েক জায়গায় যাওয়ার কথা। তার পর বাড়ি ফিরে সঞ্জয়ের জন্য একটা ছোট গেট-টুগেদার করার কথা। সঞ্জয় চিংড়ি খেতে খুব ভালবাসে। ইচ্ছে আছে একটা চিংড়ির ডিশ রান্না করব নিজে। মায়ের বাড়িতে পুজো হয়। এ বারে বাবা নেই। ভাইরা পুজো করবে। সেটা অন্য রকম আকর্ষণ। কিন্তু বাবার না থাকাটা অন্য কিছু দিয়ে ভরাট হবে না। এই সকলে মিলে পুজো করাটা, একসঙ্গে দশমীর দিন খাওয়া-দাওয়া করাটা বাবা খুব পছন্দ করতেন। সেই সব কথা মনে পড়বে। মনটা একটু খারাপ তো থাকবেই। তাই হাজার কাজ থাকলেও মা’র বাড়িতে যাবই। এ ছাড়াও নিজের প্রোফেশনাল কাজও আছে গুচ্ছের। আমি অবশ্য মাল্টি টাস্কিং বেশ সহজেই করে ফেলি। আশা করছি এ দিনটাতেও অসুবিধে হবে না।

মুম্বই-কলকাতা করেই কাটবে
পুজোর ক’টা দিন শু্যটিং না থাকলেও ব্যস্ত থাকবই। মুম্বই-কলকাতা করতে হবে। ওখানকার আন্ধেরি সর্বজনীন পুজোর আমি ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসেডর। সুতরাং সপ্তমী আর অষ্টমীটা ওখানে থাকতেই হবে। ওদের ওখানে পুজোর কোনও একদিন ভোগ পরিবেশন করব নিজের হাতে। অষ্টমীর অঞ্জলিটাও মনে হচ্ছে ওখানেই দিতে হবে। প্ল্যান আছে, অষ্টমীর দিন সন্ধেবেলা কলকাতা ফেরার। কলকাতায় আমি যে সব এনডর্সমেন্টের সঙ্গে যুক্ত, তার জন্যেও শহরে ফিরে নানা জায়গায় যেতে হবে। অঙ্কনকে ঠাকুর দেখাতে নিয়ে যাবে ওর বাবা। মেয়ে এখন সবে চার মাস। তাই ওকে ঠাকুর দেখাতে নিয়ে যাওয়ার প্রশ্ন নেই। ওর জন্য আমি আলাদা করে পুজোতেও কিছু কিনিনি জানেন? ওর বাবা ওর জন্য আমেরিকা থেকে এত গিফট এনেছে, আর ঠাকুমা-দিদিমা মিলিয়ে ওর যা গিফট জমেছে যে আমাকে আলাদা করে আর কিছু কিনতে হয়নি। আর পুজোয় ‘ছেলে দেখা’? সেটা ছোটবেলায় বিরাট ব্যাপার ছিল, কিন্তু এখন কাজ আর ফ্যামিলি নিয়ে এত ব্যস্ত থাকি ও সব আর মাথায় থাকে না। তবে বুঝতে পারি ছেলেরা আমাকে দেখে। আর কেউ যদি এগিয়ে এসে কমপ্লিমেন্ট দেয় তা হলে এখনও দারুণ লাগে।


মেখলার সঙ্গে রুপোর গয়না
পুজোর সময়, বিশেষ করে দশমীর দিন শাড়ি পরতেই পছন্দ করি। আমার মনে হয় এই একটা দিন অন্তত শাড়িটাই সবচেয়ে ভাল যায়। অথবা অন্য কোনও ট্র্যাডিশনাল পোশাক। এ বারে যেমন ঠিক করেছি মেখলা পরব। এটা আমায় আমার ‘চারুলতা’-টিম উপহার দিয়েছে। লাল-সাদা কম্বিনেশনে ভীষণ ট্র্যাডিশনাল।
সারা বছর ব্যস্ততার মধ্যে তো আজকাল শাড়ি-টারি পরাই হয় না। তাই মনে হয়, পুজোর ক’টা দিন শাড়ি বা অন্য ট্র্যাডিশনাল পোশাক পরাই ভাল।
এই চারটে দিন ওয়েস্টার্ন আউটফিট থেকে একদম দূরে থাকব। আমি যেমন শাড়ির বাইরে খুব পছন্দ করি আনারকলি সালোয়ার-কুর্তা। তার সঙ্গে সাবেকি গয়না। একটু কোঅর্ডিনেট করে পাথরের গয়নাও পরা যায়। এ বারে জয়পুর থেকে প্রচুর রুপোর গয়না এনেছি। সেগুলোও পরব।

ভোগ খাব, কিন্তু হিসেব করে
পুজোর সময় খাওয়া-দাওয়াটা একটু বেহিসেবি হয়ে যায়ই। ভোগ, পোলাও, বেগুনভাজা। তবে বছরে এই এক বারই তো এই সব খাওয়া যায়। আর সারাটা বছর তো ক্যালরি, ফ্যাট, প্রোটিন আর ফাইবার কনটেন্ট-এর হিসেব রেখে খাওয়া-দাওয়া করতে হয়। সুতরাং ফিগার রাখতে ভোগ থেকে একেবারে দূরে-দূরে থাকব, এটা মনে করি না। ভোগের সব পদই খাব। তবে পরিমিতি রেখে। আমি বলব, পুজোতে পরিমিতি রেখেই খাওয়া উচিত। খেতে ভাল বলে খুব খানিকটা খেয়ে নিলাম, তারপর হাঁসফাঁস অবস্থা, এমন যেন কখনও না হয়। আর যদি একান্তই লোভ সামলানো না যায়, তা হলে আমার টিপ্স হল প্রচুর পরিমাণে গরম জল খেতে হবে আর খেয়াল রাখতে হবে পরের মিলটা যেন একেবারে হাল্কা হয়।

ব্যায়ামে ফাঁকি দেব না
আর একটা ব্যাপার মাথায় রাখতেই হবে। পুজোর সময় জিম ইন্সট্রাক্টরদের ছুটি থাকবে। আর আমি মনে করি ইন্সট্রাক্টর ছাড়া জিম করা উচিত নয়। তাই বলে অনিয়মে ভেসে যাওয়াও উচিত নয়। অষ্টমীর অঞ্জলি, বা দশমীর সিঁদুরখেলা, সব কিছুর আগে সকালে ঘুম ভেঙেই ব্যায়ামটা জরুরি। শেপে থাকতে। সেটা ফ্রি-হ্যান্ড হতে পারে। যোগব্যয়াম হতে পারে। হেড-টু-টো এক্সারসাইজ যেগুলো হয়, সেগুলো হতে পারে। স্ট্রেচিং এক্সারসাইজ-ও হতে পারে। মোট কথা পুজো বলে ব্যায়ামে কামাই দেব না। একটু হলেও খাওয়া-দাওয়ার অনিয়ম তো হবেই। সেটাকে সামাল দিতে ব্যায়ামটা জরুরি।

ট্যুইট করব
সারা বছর যেটা করা হয়ে ওঠে না, পুজোর পাঁচ’টা দিন সেটাই করা যায় বন্ধুবান্ধবদের সঙ্গে ‘ক্যাচ-আপ’ করা। সেটা ফোনে হতে পারে। ফেসবুকেও হতে পারে। তবে আমার তো কোনও ফেসবুক অ্যাকাউন্ট নেই। তাই আমার কাছে এক সঙ্গে বসে নির্ভেজাল আড্ডা দেওয়ার কোনও বিকল্প নেই। সেটা আমি করবও। এ ছাড়া আমার যোগাযোগ রাখার পন্থাটা হল ফোন। ব্ল্যাকবেরিতে পুজোর ক’টা দিন বন্ধুদের অনেক ‘কল’ আসবে। ওরা সবাই ফেসবুক, ই-মেল-এ ইতিমধ্যেই কোঅর্ডিনেট করা শুরু করে দিয়েছে। আমায় জানিয়ে দেবে কারা কারা সে সময় কলকাতায় থাকবে। বা বিদেশ থেকে আসবে। পুজোর মধ্যে প্রোগ্রাম বানিয়ে আড্ডা-খাওয়া-দাওয়া হবে ওদের সঙ্গে। ভাবছি এ বার ট্যুইট করা শুরু করব। পুজোর আগেই। এটাই এ বার পুজোয় আমার জীবনে নতুন মাত্রা। ল্যাপটপ লাগবে না, ব্ল্যাকবেরি আছে তো! ফ্যানেদের বিজয়ার শুভেচ্ছাটাও ট্যুইট করেই জানাব।

ফিটনেস এক্সপার্টের পিঠ চাপড়ানি
আপনি তো রোল মডেল! পরিমিত খাওয়া, এমনকী ভোগটাও-- এটাই সকলের টার্গেট হওয়া উচিত। সকালে উঠে যে হাল্কা ফ্রি-হ্যান্ড আর যোগব্যায়ামের কথা বলেছেন সেটাও দারুণ আইডিয়া। মাত্র কুড়ি মিনিটের এক্সসারসাইজে যে ‘হ্যাপি হরমোন’ অর্থাৎ এনডরফিন আপনার শরীর থেকে নিঃসৃত হবে তাতে পুজোর আনন্দ বাড়তে বাধ্য।

ছবি:সনৎ ঘোষ
শাড়ি: জ্যোতি খৈতান
মেকআপ: ডায়মন্ড
স্টাইলিং: অভিষেক
হেয়ারস্টাইল: ইসরত
ফিটনেস এক্সপার্ট: চিন্ময় রায়


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.