ঠাকুরদালানে অষ্টমী

কয়েকটা পদ্ম ফোটাব
খুব ভোরে ঘুম ভাঙবে মল্লিকবাড়ির। অষ্টমী হল পুজোর প্রধান দিন। স্নানটান সেরে নতুন কাপড় পরে ঠাকুরদালানে গিয়ে বসা, পুজোর জোগাড় করা একটা বিরাট কাজ। সেই কাজের আনন্দই আলাদা। উপোস থেকে মায়ের পায়ে অঞ্জলি দিতে দিতে সারা বছর ধরে যা যা চাই, তা গভীর ভাবে প্রার্থনা করার মস্ত সুযোগ। বারবার ‘নমো নমো’ বলে চোখ বুজে মায়ের কাছে আশীর্বাদ চেয়ে নেব। চাওয়ার লিস্টি এত বিরাট যে লিখে নিয়ে গেলে ভাল হয়!
পুজোর সময় মা উলু দেবেন। বাবা কাঁসর ঘণ্টা বাজাবেন। আর আমি বাজাব শাঁখ। ছোটবেলা থেকেই শাঁখ বাজানো শিখেছি যে! অঞ্জলি দিয়ে পুজো সারার পর ভোগ বিতরণের কাজটাও আমরা ভাইবোনেরা করে থাকি। যে সব ঠাকুরদা, ঠাকুমা বয়সের কারণে নীচে নামতে পারেন না, তাঁদের গিয়ে ভোগ-প্রসাদ দিয়ে আসি।
দুপুরে ভোগ খাওয়ার পালা। জমিয়ে খাব লুচি, ফুলকপির তরকারি, ছানার পায়েস, ছানার ডালনা।
অষ্টমী শেষ হবে নবমীতে গিয়ে সন্ধিপুজো দিয়ে। সেই সময়টাও খুব ভাল লাগে। ১০৮টা পদ্ম ফোটাতে হয়। তার কয়েকটা তো আমি ফোটাবই। ১০৮টা প্রদীপ যখন জ্বলবে, আমিও জ্বালাব প্রতি বছরের মতো। পুজোর সঙ্গে মনেপ্রাণে জড়িয়ে থাকতেই ভাল লাগবে। কেন না, পুজোর অনেকটাই আমার কাছে স্পিরিচুয়াল কানেকশন।

ঠাকুমাদের আমলের সোনা জরির ব্লাউজ
অষ্টমীর সাজ সকালে যতটা ছিমছাম হয় ততটাই ভাল। তাঁতের শাড়ি পরব। টাঙাইল বা সাউথ কটন। সঙ্গে হাল্কা গয়না। আর চোখে থাকবে কাজলের মোটা রেখা। ইংরেজিতে যাকে বলে ডেফিনিট লাইন। ঠোঁটে হালকা গোলাপি বা ন্যাচেরাল লিপস্টিক। সন্ধ্যায় পরব সিল্কের শাড়ি। উজ্জ্বল রঙের। সঙ্গে ঠাকুমাদের আমলের সোনার জরি দিয়ে কারুকাজ করা ব্লাউজ। ঠাকুুমা খুব খুশি হন সাবেক আমলের ব্লাউজ পরলে। খুব সুন্দর দেখতে তো। রাতে চোখে থাকবে স্মোকি লুক। কালো কাজলের সঙ্গে মানানসই করে লাগাব কালো আর বাদামি আই শ্যাডো। চোখে যদি গাঢ় সাজ হয় লিপস্টিক হবে হালকা। আর যদি চোখে হালকা ভাবে কাজলের রেখা টানা থাকে তা হলে ঠোঁটে গাঢ় রং থাকতেই পারে।


ঠাকুরদালানে জমিয়ে আড্ডা
না, ল্যাপটপ বা মোবাইলে ট্যুইট করার সময় থাকবে না। তার জন্য পুজোর পরে অনেক সময় পড়ে আছে। আমার ফোনটাও তো আমার কাছে থাকে না এই সময়। খেয়ালই থাকে না ফোনের কথা। হুজ্জুতে মেতে হয়তো দেখা গেল ফোন এক জায়গায় তো আমি আর এক জায়গায়। তার পর খুঁজতে খুঁজতে বাবার পকেট থেকে ফোনটা উদ্ধার করা গেল। এই ক’দিন বাড়ির পুজো ছেড়ে বন্ধুদের সঙ্গে ঠাকুর দেখতে বেরনো হয় না। অনেক সময় ওরাই চলে আসে আড্ডা দিতে। ইন্ডাস্ট্রির কাউকে আলাদা করে নেমন্তন্ন করি না। যাদের আসার তারা এমনিই চলে আসে। সকলেই তো জানে মল্লিকবাড়ির পুজোর কথা। কেউ এলে খুব ভাল লাগে।

হাত ডুবিয়ে মেটের চচ্চড়ি খাব
পুজোর সময় নো জিম, নো এক্সারসাইজ। এই সময়টা রাতে ঘুমোতে গেলেও মনে হয় সময় নষ্ট! তা হলে ফিটনেসের কথা কখন ভাবব? এমনিতে পুজোর চার দিন আমাদের বাড়িতে নিরামিষ খাওয়া হয়। সে সব তো পেট ভরে খাবই। দশমীর দিন ঠাকুর ভাসানের পর কব্জি ডুবিয়ে খাব খাসির মাংস, মাছের কাটলেট, এবং মাছের নানা পদ। আমাদের মল্লিকবাড়ির বিখ্যাত রান্না হল মেটে চচ্চড়ি। সেটা তো খাবই।
মোট কথা ভরপেট খেয়ে দেয়ে ফুর্তিতে চারটে দিন কাটাব।
খাওয়া-দাওয়ায় নো নিয়মনিষেধ।
নো রেসট্রিকশন।
স্ট্রং ডায়েট শুরু করব একাদশী থেকে। স্যালাড আর প্রোটিন ছাড়া কিছুই খাব না। জিমে থাকার সময়টা বাড়াব। টোনিং আপের জন্য ওয়েট লিফটিং আর ট্রেড মিল করা বাড়িয়ে দেব খানিকটা। ফ্রি হ্যান্ড ব্যায়ামের মধ্যে অবশ্যই করব সূর্যপ্রণাম আর ভুজঙ্গাসন।

ফিটনেস এক্সপার্টের সাবধানবাণী
কোয়েল, আপনি নিরাপদ জোনে আছেন কেন না আপনার চেহারাটা রোগার দিকে। আপনার শারীরিক ফ্রেমে একটু ফ্যাট নেওয়াই যায়। তা ছাড়া, পুজোয় সেই দশমীতে গিয়ে আপনি আমিষ খাবেন। অর্থাৎ টক্সিক কনটেন্ট আপনার শরীরে কম জমবে, কেন না আপনি মূলত নিরামিষ খাবেন। তবে একেবারে ওয়ার্ক-আউট না করার আইডিয়াটা সাপোর্ট করতে পারছি না।

ছবি: সোমনাথ রায়
শাড়ি: সায়ন্তন সরকার
মেক আপ: নবীন দাস
স্টাইলিং: স্যান্ডি
ফিটনেস এক্সপার্ট: চিন্ময় রায়


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.