দেখা নেই তফসিলি ছাত্রদের
জয়েন্টের প্রশিক্ষণে অনিয়মের নালিশ
ফসিলি ছাত্রছাত্রীদের জন্য জয়েন্ট এন্ট্রান্সের বিশেষ কোচিংয়ের ব্যবস্থা করেছে রাজ্য সরকার। এ জন্য ছাত্রছাত্রীদের উৎসাহ ভাতা ও শিক্ষকদের সাম্মানিকও দেওয়া হয়। তা সত্ত্বেও পশ্চিম মেদিনীপুরের মতো তফসিলি সম্প্রদায়ভুক্ত মানুষের বাস যেখানে যথেষ্টই, সেখানেও ছাত্রের দেখা নেই। উল্টে ভুয়ো ছাত্র দেখিয়ে সরকারি কোষাগার থেকে টাকা পেয়ে যাচ্ছে দায়িত্বপ্রাপ্ত বেসরকারি সংস্থা। জেলা অনগ্রসর শ্রেণিকল্যাণ দফতরেও এ নিয়ে অভিযোগ এসেছে।
পশ্চিম মেদিনীপুর জেলায় এই ধরনের কোচিং সেন্টার রয়েছে দু’টি। একটি ঝাড়গ্রামে ও অন্যটি মেদিনীপুরে। এখানে জয়েন্ট এন্ট্রান্সের জন্য পদার্থবিদ্যা, রসায়ন, গণিত ও জীববিদ্যা পড়ানো হয়। তফসিলি সম্প্রদায়ভুক্ত পরিবারে ছেলেমেয়েদের স্কুলের পড়াশোনা চালাতেই হিমসিম অবস্থা। ডাক্তারি-ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ার জন্য জয়েন্টের প্রস্তুতি নেওয়া সেখানে খানিকটা কষ্ট-কল্পনাই। তফসিলভুক্ত সেই গরিব পরিবারের সন্তানদের জন্যই বিশেষ এই কোচিং। অভিজ্ঞ শিক্ষকদের দিয়েই পড়ানোর কথা। পড়ুয়াদের খরচ তো লাগবেই না, উল্টে ছাত্রছাত্রীদের মাসে ৩০০ টাকা করে উৎসাহ ভাতাও দেওয়ার কথা। কোচিং সেন্টারে যাতায়াতের ভাড়া, টিফিনের খরচ বাবদই এই সাহায্য।
কিন্তু আদতে হচ্ছেটা কী?
মেদিনীপুরের কোচিং সেন্টারটি হয়েছে কলেজিয়েট স্কুলে। গত বছর সেপ্টেম্বর মাস থেকে শনি-রবি, সপ্তাহে দু’দিন করে ক্লাস হচ্ছে। কিন্তু ক্রমেই কমছে ছাত্র-সংখ্যা। প্রথমে নিয়মিত ২০-২৫ জন আসত। এখন তা কমে দাঁড়িয়েছে ৬-৭ জনে। ঝাড়গ্রামে কোচিংয়ের ব্যবস্থা হয়েছে একলব্য স্কুলে। সেখানেও ছাত্রছাত্রীরা অনিয়মিত।
এর পিছনে বেশ কয়েকটি কারণ রয়েছে। ছাত্রছাত্রীদের ভাতার টাকা দেওয়া হয় না। শিক্ষকরাও সাম্মানিক পাননি। জয়েন্ট এন্ট্রান্সের উপযোগী নোটস্ও দেওয়া হয়নি। মেদিনীপুর কলেজিয়েট স্কুলের শিক্ষক মধুসূদন গাঁতাইত এই কোচিং সেন্টারে ক্লাস নেন। তিনি বলেন, “যে সংস্থাটি দায়িত্ব নিয়েছে, তাদেরই সব দেওয়ার কথা। কিন্তু সব কিছুতেই বড্ড গরমিল। আগে অনেকেই দূরদূরান্ত থেকে পড়তে আসত। এখন আর আসে না।”
তবে এখনও পড়তে যায় শুভম বিশুই, সোহম বিশুইরা। তবে তাদেরও বক্তব্য, “আমাদের ভাতা দেওয়া হয় না। শিক্ষকদেরও সাম্মানিক দেয় না বলে শুনেছি। পড়াতে গিয়ে অনেকেই বলেন, ‘জানিস তো টাকাই দিচ্ছে না’। ফলে শিক্ষকেরাও উৎসাহ হারাচ্ছেন। তা ছাড়াও পরীক্ষার উপযোগী নোটস দেওয়ারও কথা। তাও পাচ্ছি না। তাই হতাশ হয়ে অনেক ছাত্রছাত্রীই আর আসে না।” কোচিং সেন্টারে হাজিরা খাতা পর্যন্ত নেই। নথিভুক্ত নেই ছাত্রছাত্রীর নাম-ঠিকানাও। প্রশাসনিক এক আধিকারিকের কথায়, “হাজিরা খাতা থাকলেই ছাত্র সংখ্যা পাওয়া যাবে। হাজিরার হিসাবও মিলবে। তা হলেই তো তত্ত্বাবধানকারী ওই বেসরকারি সংস্থার মুনাফা কমে যাবে! তাই নথিপত্রের হদিস মেলে না। বেশি ছাত্রছাত্রী দেখিয়ে সমস্ত খরচ সরকারের কাছ থেকে নিয়ে নেবে।” যাতে এ বার থেকে এই ধরনের অব্যবস্থা না হয়, ছাত্রছাত্রীদের যথাযথ কোচিং দেওয়া যায়--তার জন্য রাজ্য অনগ্রসর শ্রেণিকল্যাণ দফতরের দৃষ্টি আকর্ষণ করা হয়েছে বলে জানিয়েছে জেলা প্রশাসন। আবার কোনও কোনও মহলের মত হল, জেলা প্রশাসনের হাতে এই কোচিং সেন্টারের ‘রাশ’ থাকলে পরিদর্শনের একটা ভীতি থাকবে, সে ক্ষেত্রে অনিয়ম কমবে।


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.