|
|
|
|
হলদিয়া পেট্রোকেম |
চ্যাটার্জি গোষ্ঠীর আবেদন খারিজ শীর্ষ আদালতে |
নিজস্ব প্রতিবেদন |
হলদিয়া পেট্রোকেমিক্যালসের অন্যতম প্রধান অংশীদার হওয়ার আইনি লড়াইয়ে চ্যাটার্জি গোষ্ঠীর আবেদন খারিজ করে দিল সুপ্রিম কোর্ট। তবে সংশ্লিষ্ট মহলের অভিমত, এই লড়াই ছিল পূর্বতন বাম সরকারের সঙ্গে বিবাদের জের। নতুন সরকার যে শিল্প সংস্থা চালাতে আগ্রহী নয়, তা ইতিমধ্যেই জানিয়ে দিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। একই সঙ্গে, রাজ্য সরকারের সঙ্গে চ্যাটার্জি গোষ্ঠীর আলোচনা যে ভাবে এগোচ্ছে, তাতে তাদের বিবাদ সুষ্ঠু মীমাংসার দিকেই এগোচ্ছে বলে তাঁদের ধারণা।
এ বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে শিল্প মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় বলেন, “রায়ের কপি হাতে পাইনি। আগে তো পড়ি।” চ্যাটার্জি গোষ্ঠীর পক্ষ থেকে অনিরুদ্ধ লাহিড়ি বলেন, “সুপ্রিম কোর্টের
এই রায়ে রাজ্য সরকার ও
চ্যাটার্জি গোষ্ঠীর আলোচনা ব্যাহত হবে না। নতুন সরকার সমস্যা মিটিয়ে ফেলতে আগ্রহী।”
সমস্যার সূত্রপাত হলদিয়া পেট্রোকেমের শেয়ার চ্যাটার্জি গোষ্ঠীর মতের বিরুদ্ধে বিক্রি করা নিয়ে। তদানীন্তন বামফ্রন্ট সরকার ১৫০ কোটি টাকার শেয়ার (১০ টাকা দামের ১৫ কোটি শেয়ার) আইওসি-কে বিক্রি করতে চেয়েছিল। এই বিক্রিতে শর্ত সাপেক্ষে মত দিয়েছিল চ্যাটার্জি গোষ্ঠী। তাদের দাবি ছিল, নিজেদের হাতে থাকা শেয়ার মূল্যায়ন করাক রাজ্য সরকার। এবং ওই মূল্যায়ন অনুযায়ী নির্ধারিত দামে সেই শেয়ার চ্যাটার্জি গোষ্ঠীর হাতে তুলে দিক তারা। গোষ্ঠীর লক্ষ্য ছিল, হলদিয়া পেট্রোকেমিক্যালসের মূল মালিক হিসেবে নিজেদের অস্তিত্বকে ধরে রাখা। যাতে পরিচালন পর্ষদে আইওসি ও সরকার হাত মিলিয়ে তাদের কোণঠাসা করতে না পারে।
কিন্তু রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে এই শর্ত পূরণ না-করার অভিযোগ তুলে কোম্পানি ল বোর্ডের দ্বারস্থ হয় চ্যাটার্জি গোষ্ঠী। যার পরিপ্রেক্ষিতে সংস্থাটি থেকে রাজ্য সরকারকে মালিকানা বেচে দিয়ে বেরিয়ে আসতে বলে ল বোর্ড। এই রায়ের বিরুদ্ধে আবার কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয় রাজ্য। কলকাতা হাইকোর্ট রায় দেয় যে, এই সংক্রান্ত বিবাদে বিচার করার অধিকার নেই ল বোর্ডের। এ বার এই রায়কে চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয় চ্যাটার্জি গোষ্ঠী। তাঁদের সেই আবেদনই শুক্রবার খারিজ করে দিল সর্বোচ্চ আদালত।
সংশ্লিষ্ট মহলের মতে, এই রায়ের সঙ্গে সঙ্গেই হলদিয়া পেট্রোকেমের মালিকানা নিয়ে বিবাদ যেখান থেকে শুরু হয়েছিল, ঠিক সেখানেই ফিরে গেল। এ বার এই বিবাদ ফের পুরনো তিক্ততার চেহারা নেবে কিনা, তা নির্ভর করবে দু’পক্ষের মধ্যে আলোচনার সুর কোন স্তরে বাঁধা থাকবে, তার উপর। তবে এখনও পর্যন্ত তৃণমূল সরকারের সঙ্গে আলোচনা যে জায়গায়, তাতে হলদিয়া পেট্রোকেমিক্যালসের মালিকানা বিবাদ সুষ্ঠু সমাধানের দিকেই এগোচ্ছে বলে মনে করা হচ্ছে।
ইতিমধ্যেই শেয়ার মূল্যায়নের জন্য এসবিআই ক্যাপিটালের সঙ্গে কথা শুরু করে দিয়েছে বর্তমান সরকার। সংশ্লিষ্ট মহলের মতে, চ্যাটার্জি গোষ্ঠীর সঙ্গে বিবাদ মেটাতেই এই পথে হাঁটা শুরু করেছে তারা। কারণ, শেয়ার বিক্রি করতে হলে অন্য আর চারটি সম্পত্তির মতোই বিশেষজ্ঞদের দিয়ে তার দাম নির্ধারণ করাতে হয়। বিশেষ করে সেই শেয়ারের, যা বাজারে কেনা-বেচা হয় না। তাই তাঁদের মতে, এর থেকে পরিষ্কার যে, এ বার মালিকানা থেকে বেরিয়ে আসতে চাইছে রাজ্য সরকার। তবে কতটা মালিকানা কাকে বিক্রি করা হবে, তা নিয়ে কোনও স্পষ্ট ইঙ্গিত এখনও দেয়নি তারা।
সংশ্লিষ্ট মহলের একটি অংশের ধারণা, হলদিয়া পেট্রোকেমে একক ভাবে চ্যাটার্জি গোষ্ঠীর সিংহভাগ শেয়ার যাতে থাকে, তা দেখবে রাজ্য সরকার। তবে অন্য মহলটি শেষ না দেখে আঁচাতে রাজি নয়। শিল্প মন্ত্রী অবশ্য এ দিন বলেছেন যে, রায় পড়ার পর মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেবে তাঁর দফতর। এবং সাম্প্রতিক আলোচনার পরিপ্রেক্ষিতে এতে আশার আলো দেখছে চ্যাটার্জি গোষ্ঠী। |
|
|
|
|
|