ঢাকে পড়ল কাঠি
বাড়ি-ধারা

তালতলা পালবাড়ি
বর্গি-হাঙ্গামার সময় হুগলির পোলবা গ্রাম থেকে কলকাতায় এসে তালতলা অঞ্চলে বসবাস আরম্ভ
করেন নকুড়চন্দ্র পাল। পরিবারসূত্রে জানা যায়, নকুড়চন্দ্রের পুত্র রঘুনাথ দুর্গাদালান (বর্তমান ৯৬সি
সুরেন্দ্রনাথ ব্যানার্জি রোড) তৈরি করে ১৭৭৫-এ দুর্গাপুজো আরম্ভ করেন। ওই পরিবারের
রাইচরণ পাল ১৯২৩-এ ‘এস্টেট রাইচরণ পাল’ নামে দাতব্য ঔষধালয় গড়েন। তার আয়
থেকেই পুজো হয়। একচালা মহিষাসুরমর্দিনী বাংলা শৈলীর প্রতিমা। আশ্বিনের
শুক্লা-প্রতিপদ তিথিতে বোধন আরম্ভ হয়। নবমীর দিন সধবা ও কুমারী পুজো হয়।
 
কলুটোলা শীলবাড়ি
ঊনবিংশ শতাব্দীর প্রথম ভাগে ব্যবসায়ী মতিলাল শীল সাবেক কলুটোলা অঞ্চলে নিজের ভদ্রাসনে
(এখন ৬০এ মহম্মদ শওকত আলি স্ট্রিট) দুর্গাপুজো আরম্ভ করেন। একচালা সাবেকি মহিষাসুরমর্দিনী
প্রতিমা। বোধন আরম্ভ হয় আশ্বিনের শুক্লা-প্রতিপদ তিথিতে। নবমীর দিন পিতলের থালায় চিনি ও দক্ষিণা
দিয়ে ব্রাহ্মণ-বিদায় দেওয়া এ বাড়ির পুরনো প্রথা। বর্তমানে পুজোটি করেন দৌহিত্র বংশ মল্লিক-পরিবার।
 
খিদিরপুর সাহাবাড়ি
শতবর্ষে পা দিল এ পুজো। ১৯১১-য় ব্যবসায়ী ভূষণচন্দ্র সাহা ৫ রমানাথ পাল রোডের
ভদ্রাসনে পুজো আরম্ভ করেন। একচালা ডাকের সাজের মহিষাসুরমর্দিনী প্রতিমা।
পঞ্চমীতে ঘট স্থাপন করে বোধন হয় ষষ্ঠীর দিন।
 
শ্যামপুকুর মল্লিকবাড়ি
হুগলি জেলার ঘুটিয়াবাজার গ্রাম থেকে যোগেন্দ্রনাথ মল্লিক ১৮৮৭তে কলকাতায় এসে প্রথমে
কলুটোলা অঞ্চলে বসতি স্থাপন করেন ও পুজো আরম্ভ করেন। ১৯১৬-য় পুজোটি ২৮ এ
বলরাম ঘোষ স্ট্রিটের বাড়িতে স্থানান্তরিত হয়। বৃষ-সহ সপরিবার শিবদুর্গা প্রতিমা।
বোধন আরম্ভ হয় আশ্বিনের শুক্লা-প্রতিপদ তিথিতে।
 
ভবানীপুর দেবাড়ি
অসুরকে কোট-বুট পরিয়ে পুজোর মাধ্যমে যে ব্রিটিশ-বিরোধিতার ধারা চালু করেছিল ভবানীপুরের
২৬ই চন্দ্রনাথ চ্যাটার্জি স্ট্রিটের দে-পরিবার, আজও সে ধারা বহন করে চলেছেন উত্তরপুরুষেরা।
শয্যাদ্রব্যের ব্যবসায়ী রামলাল দে ঊনবিংশ শতাব্দীর গোড়ার দিকে গোবরডাঙা থেকে
কলকাতায় এসে পুজো আরম্ভ করেন। অসুরকে আজও কোট-বুট পরানো হয়।
 
বড়িশা বন্দ্যোপাধ্যায়বাড়ি
এ পরিবারের আদি পুজোটি হত বরিশালের পিংলাকাঠি গ্রামে। দেশভাগের পরে পুজোটি কলকাতায়
নিয়ে আসেন বিরাজমোহন বন্দ্যোপাধ্যায়। ৯ প্রশান্ত রায় রোডের ‘দুর্গাবাড়ি’র প্রতিমা একচালা
অতসীবর্ণা মহিষাসুরমর্দিনীরূপী। পূর্ববঙ্গের রীতি অনুসারে এখানেও লক্ষ্মীর পাশে কার্তিক
ও সরস্বতীর পাশে গণেশ থাকে। নবমীতে চালকুমড়ো বলি দেওয়া হয়।




অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.