কোচের কথা অমান্য করায় বৃহস্পতিবারই কার্লোস তেভেজকে শাস্তি এবং জরিমানা করেছে তাঁর ক্লাব ম্যাঞ্চেস্টার সিটি।
হাজার হাজার মাইল দূরে পেন ওরজির ক্ষেত্রেও কি একই রাস্তায় হাঁটবে ইস্টবেঙ্গল?
শুক্রবার পর্যন্ত এ ব্যাপারে কোনও সিদ্ধান্ত না হলেও, ফেড কাপ ফাইনালের পর দলের কোচ ট্রেভর মর্গ্যানের স্ট্র্যাটেজি নিয়ে প্রশ্ন তোলায় পেনের উপর ক্ষুব্ধ লাল-হলুদ কর্তারা। ফুটবল সচিব সন্তোষ ভট্টাচার্য বলে দিলেন, “পেন ঠিক কী বলেছে সেটা নিশ্চয়ই ক্লাব জানতে চাইবে। কোচের স্ট্র্যাটেজি নিয়ে ও যদি মিডিয়ায় কিছু বলে থাকে তা হলে সেটা অন্যায় করেছে। ওর কিছু বলার থাকলে টিম মিটিংয়ে বা ক্লাবকে বলা উচিত ছিল।” মর্গ্যানের সঙ্গে ফেড কাপের হার নিয়েও এ দিন সকালে কথা বলেন ইস্টবেঙ্গল ফুটবল সচিব। সেখানে অবশ্য পেন-প্রসঙ্গ ওঠেনি।
ক্লাবের ফুটবল সচিবের সঙ্গে অবশ্য একমত নন ইস্টবেঙ্গল সচিব কল্যাণ মজুমদার। তিনি বরং মর্গ্যানেরই ‘ভুল স্ট্র্যাটেজি’ নিয়ে সমালোচনায় মুখর। চোট পাওয়া মেহতাবকে নামানো কোচের ‘চূড়ান্ত ভুল ও বোকামি’ বলার পাশাপাশি কল্যাণবাবুর মন্তব্য, “পেনকে ওই সময় বসিয়ে দেওয়াটা ঠিক হয়নি। সালগাওকরের বিরুদ্ধে খেলতে নামলেই আমাদের যেন কী হয়! কেমন যেন একটা কুসংস্কার হয়ে গেছে। ওদের সামনে পড়লেই হেরে যাচ্ছি। পেন কোচের বিরুদ্ধে কিছু হয়তো বলেছে, যা বলার কোচই বলবে ওকে। আমরা বলব কেন?”
শুক্রবার রাত পর্যন্ত পেনের সঙ্গে কথা বলেননি ইস্টবেঙ্গল কর্তারা। পেন অবশ্য নিজের বক্তব্য থেকে এখনও একচুলও সরেননি। এ দিন ফের বলে দিলেন, “আমাকে ওই সময় কোচের বসিয়ে দেওয়াটা সঠিক সিদ্ধান্ত নয়। মেহতাব নেই। আমি বসে গেছি। মাঝমাঠে বল বাড়ানোর লোক কোথায়?” যাঁর বিরুদ্ধে পেনের অভিযোগ সেই মর্গ্যানের কোনও প্রতিক্রিয়া এ দিন পাওয়া যায়নি। এ দিন ছিল তাঁর ৫৫তম জন্মদিন। ফোনে ধরা হলে লাল-হলুদ কোচ বললেন, “আজ আমার জন্মদিন। কিছু বলতে চাই না।” শুক্রবার টোলগে-গাওদের অনুশীলন ছিল না। মেহতাব হোসেন-সহ বহু ফুটবলার কোচকে জন্মদিনের শুভেচ্ছা জানালেও পেন তাঁর কোচের সঙ্গে যোগাযোগ করেননি।
দলের বিদেশি মিডিওর উল্টো রাস্তায় হেঁটে মেহতাব অবশ্য সকালেই কোচকে ফোন করে দুঃখপ্রকাশ করেছেন। ইস্টবেঙ্গলের সবথেকে ধারাবাহিক ফুটবলার বলছিলেন, “আমার মনে হয়েছিল খেলতে পারব। সে কথাই কোচকে বলেছিলাম। বুঝতে পারিনি একটা বল ধরতে লাফিয়ে উঠে পড়ে যাওয়ার পর এ রকম অবস্থা হবে। কোচের কোনও দোষ নেই। দোষ আমার। কোচের কাছে ফোন করে সে জন্য দুঃখপ্রকাশ করেছি।” সঙ্গে তাঁর মন্তব্য, “দলের সবাই খারাপ খেলেছে বলেই হেরেছি। এটা নিয়ে হইচই করে লাভ নেই।”
জোর করে নেমে ফেড কাপ ফাইনালে মাত্র চার মিনিট খেলেছিলেন বর্ষসেরা ভারতীয় ফুটবলার মেহতাব। তাতেই কুচকিতে চোট বেড়ে যাওয়ার গুনাগার অবশ্য দিতেই হচ্ছে তাঁকে। ডাক্তাররা মেহতাবকে দু’সপ্তাহ বিশ্রাম নিতে বলেছেন। পুজোর মধ্যেই ভিয়েতনামে একটি টুর্নামেন্ট খেলতে যাচ্ছে ইস্টবেঙ্গল। আই লিগের প্রস্তুতি হিসাবে। সেই দলের সঙ্গে যেতে পারছেন না মেহতাব। তবে আই লিগের শুরু থেকেই খেলতে পারবেন তিনি।
এ দিকে শনিবারই আই লিগের দল পৈলান অ্যারোজের সঙ্গে ফ্রেন্ডলি ম্যাচ খেলবে ইস্টবেঙ্গল। মূলত যাঁরা সালগাওকরের বিরুদ্ধে খেলেননি, তাঁদের নামানো হবে বলে ঠিক করে রেখেছেন মর্গ্যান। |