দলের অন্তর্কলহ দ্রুত মেটানোর চেষ্টার পাশাপাশি সরাসরি মনমোহন সিংহকে কাঠগড়ায় দাঁড় করানোর কৌশল নিলেন বিজেপি নেতৃত্ব। জাতীয় কর্মসমিতির বৈঠকের প্রথম দিনে অরুণ জেটলি এবং নিতিন গডকড়ী তারই রূপরেখা রচনা করলেন।
বিজেপির এক শীর্ষ নেতার বক্তব্য, প্রধানমন্ত্রীর দৌড় নিয়ে দলের মধ্যে বিরোধ শুরু হয়েছে ঠিকই। কিন্তু ভুলে গেলে চলবে না, বিজেপি প্রয়োজনীয় সংখ্যা নিয়ে ক্ষমতা দখল করলে তবেই প্রধানমন্ত্রী হওয়ার সুযোগ আসবে। তাঁর কথায়, “সে জন্য কংগ্রেস এবং মনমোহন সিংহ সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলনের সুস্পষ্ট কর্মসূচি নেওয়া প্রয়োজন।” সেই লক্ষ্যেই দুর্নীতি ও দেশের বেহাল আর্থিক পরিস্থিতি প্রশ্নে কোন পথে সরকারকে আক্রমণ করা হবে, আজ জেটলি এবং গডকড়ী তার দিশা দেখালেন। জেটলি বলেন, দুর্নীতির কারণে শুধু দেশের বিনিয়োগের ভাবমূর্তি নষ্ট হচ্ছে তা-ই নয়, এ জন্য আম-আদমির উপরেও নিরন্তর বোঝা চাপাচ্ছে ‘হৃদয়হীন’ মনমোহন সরকার। পাশাপাশি, বিজেপি সভাপতি নিতিন গডকড়ী স্পষ্ট করে দেন, টু-জি কেলেঙ্কারি নিয়ে আপাতত স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী পি চিদম্বরম লক্ষ্য হলেও ভোট যত এগিয়ে আসবে, প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংহকেও একই ভাবে কাঠগড়ায় দাঁড় করানো হবে। তিনি বলেন, “উপযুক্ত সময়ে প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধেও একই ভাবে তদন্ত করানোর দাবি তুলব।” বিজেপি নেতা রবিশঙ্কর প্রসাদের বক্তব্য, টু জি নিয়ে যা হয়েছে, তা প্রধানমন্ত্রীও জানতেন। নিজে যাতে এখনই বিরোধীদের আক্রমণের মুখে না পড়েন, সে জন্য চিদম্বরমকে বাঁচাতে মরিয়া হয়ে উঠেছেন তিনি।
বিজেপি নেতৃত্ব বুঝতে পারছেন, দলের মধ্যে কোন্দলে আখেরে লাভ হচ্ছে কংগ্রেসেরই। কারণ, কংগ্রেসের বিরুদ্ধে আন্দোলনে ভাঁটা পড়ছে। আর কেন্দ্রে ক্ষমতা পেতে গেলে বিজেপির ঐক্যবদ্ধ চেহারা সামনে আনতেই হবে। দলের সকলকে কথা বলতে হবে একই সুরে। সে জন্য দলের নীতিও স্পষ্ট করা দরকার। গডকড়ী এবং জেটলি সেই নীতিই বেধে দেওয়ার চেষ্টা করেছেন। জেটলির অভিযোগ, “মনমোহন সিংহ দুর্নীতি রুখতে যেমন ব্যর্থ, তেমনই নিজে অর্থনীতির লোক হয়েও মূল্যবৃদ্ধি নিয়ন্ত্রণ করতে পারেননি। ইউপিএর প্রথম জমানায় বামেদের দোহাই দিয়ে আর্থিক সংস্কার করেননি। এখন বামেরা না থাকলেও তা করতে পারছেন না।” |