এনজেপি স্টেশনে প্রশ্ন শুধু একটাই, কখন ট্রেন ছাড়বে
ময়সূচির সমাধি ঘটেছে!
প্রায় আড়াই দিন পেরিয়ে গেলেও গুয়াহাটি-কলকাতা রেলপথে ট্রেনের সময়সূচি শুক্রবার রাতেও স্বাভাবিক হয়নি। নির্দিষ্ট সময়ের ৩ থেকে ১৪ ঘন্টা দেরিতে, প্রায় ধুঁকতে ধুঁকতে ট্রেনগুলি কলকাতা থেকে নিউ-জলপাইগুড়ি পৌঁছলেও তাদের কোনটা কখন ফের কলকাতার দিকে রওনা দেবে, তা নিয়ে সারা দিন ধন্দ কাটেনি যাত্রীদের। বুধবার, ইসলামপুরের কাছে ডিজেল ট্যাঙ্কারে আগুন লাগার জের এ দিনও অব্যাহত।
নিউ-জলপাইগুড়ি স্টেশনের ৬টি প্ল্যাটফর্ম থেকে বিশ্রামাগার কিংবা কোথাওই জায়গা না পেয়ে গামছা-চাদর পেতে ওভারব্রিজের সিঁড়িতেই তাই ঠিকানা গেড়েছেন অসংখ্য যাত্রী। তাঁরা কেউ পুজোর ছুটিতে উত্তরবঙ্গের কর্মস্থল থেকে পাড়ি দিচ্ছিলেন কলকাতার দিকে, কেউবা হস্টেল থেকে বাড়ি-মুখো। ট্রেনের সময়সূচি অনিশ্চিত হয়ে পড়ায় কিংবা একের পর এক ট্রেন বাতিলের খবরে দিশাহীন যাত্রীদের ভিড়ে নিউ-জলপাইগুড়ি স্টেশনের চেনা চেহারাটাই বদলে গিয়েছে গত দু’দিনে।
ট্রেনের অপেক্ষা। এনজেপি স্টেশনে সন্দীপ পালের তোলা ছবি।
রেল কর্তৃপক্ষ অবশ্য দাবি করেছেন, গুয়াহাটি-কলকাতা, আপ এবং ডাউন লাইন দু’টিতেই মেরামতির কাজ শেষ। তাদের আশা, আজ, শনিবার বিকেলের মধ্যে ট্রেন চলাচল ফের স্বাভাবিক ছন্দে ফিরবে। উত্তর পূর্ব সীমান্ত রেলের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক সুব্রত হাজং বলেন, “ট্রেন চলাচলে বিঘ্ন ঘটায় যাত্রীদের হয়রানির জন্য আমরা দুঃখিত। তবে, শনিবারের মধ্যে ট্রেন চলাচল নিশ্চয়ই স্বাভাবিক হয়ে যাবে।”
কিন্তু তাঁর আশ্বাসটুকু বাদ দিলে চুম্বকে বাকি ছবিটা এইরকমশুক্রবারও বাতিল করা হয়েছে, কলকাতাগামী পদাতিক এবং উত্তরবঙ্গ এক্সপ্রেস। বৃহস্পতিবার কলকাতাথেকে ছাড়া দার্জিলিং মেল এ দিন বেশ রাতে শেষ পর্যন্ত নিউ-জলপাইগুড়ি (এনজেপি) পৌছয়। আর, এনজেপি থেকে কাঞ্চনকন্যা, কামরূপ এক্সপ্রেস এ দিন ছাড়ার প্রতিশ্রুতি থাকলেও তা যে কখন ছাড়বে, তা শুক্রবার রাতেও নির্দিষ্ট করে বলতে পারেননি রেল কর্তারা। তাঁদের জবাব, “কী করে বলি বলুন! হাওড়া কিংবা শিয়ালদহ থেকে ছেড়ে আসা ট্রেনগুলি ৩ থেকে ১২ ঘন্টা দেরিতে চলছে। সেগুলি না পৌঁছনো পর্যন্ত এ দিক থেকে ট্রেন ছাড়া যায়?”
যাত্রীদের পাশাপাশি, স্টেশনের অনুসন্ধান কেন্দ্রের দায়িত্বে থাকা কর্মীদের নাজেহাল অবস্থা। কাউন্টারের সামনে থিকথিকে ভিড়। যাত্রীদের অজস্র প্রশ্ন, ক্ষোভ, বিরক্তি সামাল দিয়ে চলেছেন তাঁরা। বিকেলের দিকে আর সামাল দিতে না পেরে বোর্ড ঝুলিয়ে দিয়েছেন তাঁরাকোন ট্রেন কখন ছাড়ার সম্ভাবনা। সেই সঙ্গে টিকিট-কাউন্টারে একই সঙ্গে চলেছে টিকিট কাটা এবং বাতিলের হিড়িক।
উদ্বেগ। নিউ জলপাইগুড়ি স্টেশনের অনুসন্ধান কেন্দ্রের সামনে যাত্রীদের ভিড়। ছবি: সন্দীপ পাল।
গুয়াহাটিতে কাজে যোগ দিতে যাচ্ছিলেন অসম রাইফেলসের জওয়ান বিজয় কুজুর এবং প্রসন্ন অভিজিৎ। সন্ধে সাড়ে ৬টায় কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেস ছাড়ার কথা থাকলেও কখন ছাড়বে কেউ জানে না। প্রসন্ন বলেন, “শনিবারের মধ্যে গুয়াহাটি পৌঁছে কাজে যোগ দিতে না পারলে কী হবে কে জানে!” তাঁর গলায় স্পষ্ট উদ্বেগ। কালিম্পঙের বাসিন্দা পেশায় শিক্ষিকা নিপুণা রায় এবং তাঁর স্বামী তপনবাবু মেয়েকে নিয়ে পুজোয় কলকাতায় বাড়ি ফিরছিলেন। নিপুণাদেবী বলেন, “দুপুরে কালিম্পং থেকে এসে পৌঁছেছি। এখন দার্জিলিং মেল ছাড়লে হয়!”


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.