|
|
|
|
হবে পরীক্ষা |
হাড়গোড় সিপিএম কর্মীরই, থানায় ‘শনাক্ত’ করলেন স্ত্রী |
নিজস্ব সংবাদদাতা • ইলামবাজার ও দুবরাজপুর |
অজয়ের চর থেকে উদ্ধার হওয়া হাড়গোড় ‘নিখোঁজ’ সিপিএম কর্মী সুনীল হেমব্রমের বলেই দাবি করল তাঁর পরিবার। শুক্রবার বীরভূমের ইলামবাজার থানায় গিয়ে ওই হাড়গোড় এবং তার সঙ্গে থাকা জামা ও বারমুডার অংশবিশেষ দেখে সেগুলি তাঁর স্বামীর বলে ‘শনাক্ত’ করলেন ‘নিখোঁজ’ সুনীলবাবুর স্ত্রী বাসন্তী হেমব্রম।
সুনীলবাবু দুবরাজপুরের পদুমা পঞ্চায়েতের সিপিএম সদস্য তথা পার্টি সদস্যও ছিলেন। ২০১০ সালের ২১ জানুয়ারি থেকে তিনি নিখোঁজ। পরের দিন ইলামবাজার থানায় দায়ের করা অভিযোগে বাসন্তীদেবী দাবি করেছিলেন, তাঁর স্বামীকে গুলি করে খুন করে দেহ লোপাট করে দেওয়া হয়েছে। বীরভূমের পুলিশ সুপার নিশাত পারভেজ বলেন, “দুবরাজপুর থানা এলাকার বাসিন্দা বাসন্তীদেবী ওই হাড়গোড় ও কাপড়ের টুকরো তাঁর স্বামীর বলে দাবি করেছেন। প্রয়োজনীয় সব পরীক্ষা করা হবে।”
পুলিশ সূত্রের খবর, বৃহস্পতিবার বিকেল ৫টা নাগাদ বর্ধমানের কাঁকসা ও ইলামবাজার থানার মাঝামাঝি অজয় নদের নারকেলবাগান বালিঘাট থেকে বালি তোলার সময় স্থানীয় শ্রমিকেরা কিছু হাড়গোড় দেখতে পান। খবর যায় দুই থানাতেই। ইলামবাজারের ওসি ত্রিদিব প্রামাণিক রাতে ঘটনাস্থলে গিয়ে হাড়গোড় ও জামাকাপড়ের অংশ উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যান।
এ বার হাড়গোড় উদ্ধারের খবর জানাজানি হতেই এ দিন এলাকার মানুষ থানায় ভিড় করেন। পদুমা পঞ্চায়েতের কাঁঠালডাঙা আদিবাসীপাড়ার বাসন্তীদেবী থানায় এসে হাড়গোড় ও জামাকাপড় ‘শনাক্ত’ করেন। তাঁর দাবি, গত বছর ২১ জানুয়ারি সকালে সুনীলবাবু সর্ষে খেতে কাজের জন্য লাল রঙের বারমুডা, টি-শার্ট ও ফুলহাতা জামা পরে বাড়ি থেকে বেরিয়েছিলেন। সে দিনই লাগোয়া কড়কড়ি গ্রামে একটি পুকুরে মাছচাষকে ঘিরে সিপিএম-তৃণমূল সংঘর্ষে একাধিক ব্যক্তি জখম হন। দুই গ্রামের বেশ কিছু সিপিএম সমর্থকের বাড়ি ভাঙচুর হয়।
সিপিএমের অভিযোগ ছিল, তৃণমূলের দুষ্কৃতীরা প্রথমে কড়কড়ি ও পরে কাঁঠালডাঙায় হামলা চালায়। সুনীলবাবুকে সামনে পেয়ে তাঁকে গুলি করে খুন করে। দলের পক্ষ থেকে দুবরাজপুর থানায় ৭৮ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ হয়। বাসন্তীদেবীও খুন করে দেহ লোপাটের পৃথক অভিযোগ দায়ের করেন। তৃণমূল সিপিএমের বিরুদ্ধে পাল্টা অভিযোগ করে। পুলিশ কয়েক জনকে গ্রেফতারও করেছে। অভিযুক্তদের অন্যতম দাসপুর-খণ্ডগ্রামের দুষ্কৃতী রেজাউল খানকে জেরা করে এর আগে অজয়ের চরে যৌথ ভাবে খোঁড়াখুঁড়ি চালিয়েছে দুবরাজপুর ও ইলামবাজার থানার। কিন্তু কিছু মেলেনি।
হাড়গোড় উদ্ধারের খবর পেয়ে সিপিএমের বীরভূম জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য সাধন ঘোষের প্রতিক্রিয়া, “যে হাড়গোড় উদ্ধার হয়েছে, তা সুনীলের স্ত্রী শনাক্ত করেছেন। আমরাও সে ব্যাপারে নিশ্চিত।” তৃণমূলের জেলা সহ-সভাপতি মলয় মুখোপাধ্যায় বলেন, “এর আগেও সিপিএম কাঁকসায় উদ্ধার হওয়া একটা দেহাবশেষকে সুনীল হেমব্রমের বলে দাবি করেছিল। কিন্তু ফরেন্সিক বা ডিএনএ পরীক্ষায় তা প্রমাণিত হয়নি।” |
|
|
|
|
|