পাক-মার্কিন চাপানউতোর
সন্ত্রাস-প্রশ্ন পাশে রেখেই উত্তেজনা কমানোর চেষ্টা
ক্কানি গোষ্ঠীর কার্যকলাপ নিয়ে পাকিস্তান ও আমেরিকার চাপানউতোর অব্যাহত। আইএসআই-এর সঙ্গে হক্কানি গোষ্ঠীর যোগ নিয়ে মার্কিন সেনাপ্রধানের বক্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে গত কাল সর্বদল বৈঠক ডেকেছিলেন পাক প্রধানমন্ত্রী ইউসুফ রাজা গিলানি। উদ্দেশ্য ছিল আন্তর্জাতিক মহল, বিশেষ করে ওয়াশিংটনকে বার্তা দেওয়া যে বাইরের অভিযোগ বা হুমকির সামনে পাকিস্তান রাজনৈতিক ভাবে এককাট্টা। দীর্ঘ ৯ ঘণ্টার বৈঠকের পর সেই বার্তা দিতে মোটামুটি সফল গিলানি প্রশাসন। বৈঠকের শেষে একটি প্রস্তাব পাশ করে পাকিস্তানের ৩০টি ছোট-বড় রাজনৈতিক দল, সেনা ও আইএসআই জানিয়ে দিয়েছে যে কোনও ‘বাইরের চাপের’ কাছে নতি স্বীকার করে তারা অভ্যন্তরীণ নীতি নির্ধারণ করবে না। পাক সেনার তরফেও জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, পাকিস্তানের মাটিতে ড্রোন আক্রমণ বরদাস্ত করা হবে না। আমেরিকা যদি সে দেশের মাটিতে কোনও ভাবে সামরিক হস্তক্ষেপ করার চেষ্টা করে, তা হলে পাল্টা জবাব দেওয়া হবে তাদের তরফেও। আমেরিকার উচিত পাক-আফগান সীমান্তের উপজাতিগুলির সঙ্গে আলোচনায় বসা, এমন প্রস্তাবও উঠে আসে বৈঠকের শেষে।
মুলেনের বক্তব্য নিয়ে জলঘোলা শুরু হওয়ার পর, গিলানি প্রশাসন প্রথম থেকেই চেষ্টা করছিল সামরিক উত্তেজনার পারদ নামিয়ে পুরো বিষয়টিকে রাজনৈতিক মঞ্চে নিয়ে আসার। গত কালের বৈঠকের পর পাকিস্তানের পক্ষ থেকে একটি ‘রাজনৈতিক বার্তা’ দেওয়ার মাধ্যমে সেই প্রক্রিয়াকেই বাস্তবে রূপ দেওয়ার চেষ্টা করা হল। আমেরিকাও ইতিমধ্যেই সুর নরম করে আলোচনার পুরনো জায়গাটি তৈরি করতে সচেষ্ট। মার্কিন বিদেশসচিব হিলারি ক্লিন্টন আজ ওয়াশিংটনে স্পষ্ট ভাষাতেই জানিয়েছেন, ওবামা প্রশাসন পাকিস্তানের সঙ্গে আরও মজবুত দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক তৈরিতেই আগ্রহী। তবে পাকিস্তানকেও জঙ্গি ঘাঁটি ভাঙার চেষ্টায় আরও আন্তরিক হতে হবে বলেও জানান তিনি। অন্য দিকে, সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে পেন্টাগনের এক মুখপাত্রও আজ জানিয়েছেন, জঙ্গি ঘাঁটি ভাঙার বিষয়ে পাক প্রশাসনের সদিচ্ছা নিয়ে তাদের সংশয় না থাকলেও, এ ব্যাপারে পাকিস্তানকে আরও কঠোর হতে হবে। গত কাল গিলানি বলেছিলেন, সন্ত্রাস ঠেকাতে আর ‘বেশি’ কিছু করা সম্ভব নয় পাক প্রশাসনের পক্ষে। সে ব্যাপারে প্রশ্ন করা হলে ওই মুখপাত্র সরাসরি জবাব এড়িয়ে যান। সব মিলিয়ে এটা পরিষ্কার যে ওয়াশিংটনও সামরিক ভাবে পাকিস্তানের উপর চাপ সৃষ্টি করার পাশাপাশিই রাজনৈতিক যোগাযোগ আগের মতোই রাখার পক্ষপাতী।
সন্ত্রাস নিয়ে আমেরিকার অভিযোগের জবাব দেওয়ার ক্ষেত্রে পাক রাজনৈতিক মহল এককাট্টা হলেও, তা যে পাকিস্তানের অভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক দ্বন্দ্ব একটুও কমাতে পারেনি তা অবশ্য দিনের আলোর মতোই পরিষ্কার। গত কালের বৈঠকে প্রাক্তন পাক প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফ সেনাবাহিনীর উদ্দেশে সরাসরি আঙুল তোলেন। প্রসঙ্গত, ১৯৯৯ সালে সেনা অভ্যুত্থানেই গদি ছাড়তে হয়েছিল শরিফকে। তাঁর অভিযোগ, পাক সেনার আচরণে ভুল বার্তা পৌছচ্ছে আন্তর্জাতিক মহলে। ওসামা-হত্যার প্রসঙ্গ তুলে তিনি বলেন, এই ধরনের ঘটনা রাষ্ট্র হিসেবে পাকিস্তানের দুর্বলতাকেই তুলে ধরে। শরিফের প্রশ্নবাণের সামনে এক সময় সেনাপ্রধান আশফাক পারভেজ কিয়ানি উঠে কিছুটা উত্তেজিত ভাবেই বলেন, সব প্রশ্নের জবাব দেওয়া হবে। শরিফ ছাড়াও সেনার ভূমিকা নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেন বালুচিস্তানের পিএমএপি ও এমকিউএমের মতো দলগুলির প্রতিনিধিরা।
এর মধ্যেই আজ হক্কানি গোষ্ঠীর সঙ্গে নানা ভাবে জড়িত সন্দেহে পাঁচ পাক নাগরিকের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে ওয়াশিংটন। এর ফলে ওই পাঁচ নাগরিকের সঙ্গে আমেরিকার নাগরিকদের সব রকমের লেনদেন বন্ধ হয়ে যাবে। বিদেশে ওই পাঁচ জনের কোনও ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট বা সম্পত্তি থাকলে, তা-ও বাজেয়াপ্ত করা হবে বলে জানিয়ে দিয়েছে আমেরিকা।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.