দুই থানার জাঁতাকলে জেরবার পুত্রহারা বাবা
কোন থানা?
এক কিশোরের দেহ পড়েছিল দুই থানার সীমানা এলাকায়। পুত্রহারা বাবা অভিযোগ জানাতে গিয়ে দুই থানায় ছুটে বেড়ালেন। বুধবার সকাল থেকে রাত পর্যন্ত চলল পুলিশের টালবাহানা। ঘটনাস্থল আসলে কোন থানার অধীন, সে ব্যাপারে স্পষ্ট ধারণা ছিল না কোনও থানারই। সেই জন্যই এই অকারণ হয়রানি।
মঙ্গলবার বিকেলে দক্ষিণ ২৪ পরগনার বারুইপুর থানার অর্জুনা গ্রামের বাড়ি থেকে সাইকেল নিয়ে স্থানীয় একটি দোকানে সার কিনতে গিয়েছিল সিরাজ খান (১৫)। অর্জুনা গ্রামটি বারুইপাড়া থানা এলাকায়। পরের দিন সকালে একটি পুকুরে তার দেহ ভাসতে দেখা যায়। এই পুকুরটি ট্যাংরাবেড়িয়া গ্রামে। এই গ্রামটি জীবনতলা থানার অধীনে। আবার বারুইপুর থানা এলাকারও সীমান্তে। বুধবার সকালে ওই সারের দোকানের উল্টোদিকের পুকুরে মৃতদেহ ভাসতে দেখে স্থানীয় বাসিন্দারা জীবনতলা থানার অধীনে ঘুটিয়ারিশরিফ ফাঁড়িতে খবর দেন। ঘুটিয়ারিশরিফ ফাঁড়ির তদন্তকারী অফিসাররা গিয়ে সিরাজের মৃতদেহ উদ্ধার করে ক্যানিং মহকুমা হাসপাতালে ময়না-তদন্তে পাঠান। প্রাথমিক ভাবে হাসপাতালের চিকিৎসকেরা জানান, মৃতের পেটে কোনও জল পাওয়া যায়নি। শরীরেও কোনও আঘাতের চিহ্ন মেলেনি। পরে সারের দোকান থেকে সিরাজের সাইকেলটি উদ্ধার করে পুলিশ। এর পরেই মৃতের বাবা আকবর আলি খান ছেলের অস্বাভাবিক মৃত্যুর ঘটনায় সারের দোকানের মালিক মোহন বণিককে দায়ী করেন। তাঁর অভিযোগ, মোহনই তাঁর ছেলেকে মেরে পুকুরে ফেলে দিয়েছে। এ ব্যাপারে তিনি অভিযোগ দায়ের করতে গেলেই সমস্যা শুরু হয়।
ঘুটিয়ারিশরিফ ফাঁড়ির তদন্তকারী অফিসাররা আকবরকে জানান, অর্জুনা গ্রাম ও ট্যাংরাবেড়িয়া গ্রাম বারুইপুর থানার অধীনে। তাই বারুইপুর থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করতে হবে। তবে মোহনকে ক্যানিং থানাতেই আটকে রাখেন ঘুটিয়ারিশরিফ থানার অফিসাররা। এর পরে আকবর বারুইপুর থানায় অভিযোগ দায়ের করতে গেলে সেখানে কতর্ব্যরত পুলিশকর্মী আকবরকে জানান, ট্যাংরাবেড়িয়া গ্রাম জীবনতলা থানার অধীনে। তাই জীবনতলা থানায় অভিযোগ দায়ের করতে হবে। আকবর জীবনতলা থানায় অভিযোগ দায়ের করতে গেলে থানা থেকে তাঁকে বলা হয়, কোনওমতেই অভিযোগ নেওয়া যাবে না। কারণ এটা বারুইপুর থানা এলাকার ঘটনা। বারুইপুর থানাই ওই ঘটনার তদন্ত করবে।
শেষ পর্যন্ত কোন থানায় অভিযোগ দায়ের করা হবে তা ঠিক করতে করতে সন্ধে হয়ে যায়। এ দিকে, নিদিষ্ট অভিযোগ দায়ের না হওয়ার জন্য দোকানমালিক মোহনকেও পুলিশ গ্রেফতার করতে পারছিল না। সন্ধের পর ফের অভিযোগ দায়ের করতে বারুইপুর থানায় হাজির হন আকবর। কিন্তু সেখান থেকে সাফ জানিয়ে দেওয়া হয়, অভিযোগ নেওয়া হবে না। স্থানীয় কয়েক জন রাজনৈতিক নেতার হস্তক্ষেপে বিষয়টি জেলা পুলিশের বড় কর্তাদের জানানো হয়। শেষ পর্যন্ত রাতে জীবনতলা থানায় অভিযোগ দায়ের করেন আকবর। অভিযোগ পেয়ে রাতেই মোহনকে গ্রেফতার করা হয়।
কেন পুত্রহারা পিতাকে দিনভর ছুটতে হল? জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (গ্রামীণ) কঙ্করপ্রসাদ বারুই তার কোনও সদুত্তর দেননি। তিনি বলেন, “এলাকাটি কোন থানা এলাকায় সেটা বুঝতে একটু দেরি হয়। পঞ্চায়েত প্রধানদের সঙ্গে আলোচনায় জানা যায়, যে পুকুর থেকে দেহটি উদ্ধার হয়েছে সেটি জীবনতলা থানা এলাকায় পড়ে। এর পরেই জীবনতলা থানায় অভিযোগ দায়ের করতে বলা হয়। জীবনতলা থানাই এখন ঘটনার তদন্ত করবে।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.