বাড়ির মধ্যেই এক যুবককে গুলি করে খুনের ঘটনায় চাঞ্চল্য দেখা দিয়েছে রায়গঞ্জে। সোমবার রাতে রায়গঞ্জ থানার উকিলপাড়ার পিরপুকুর এলাকায় ঘটনাটি ঘটেছে। পুলিশ জানিয়েছে, মৃতের নাম সোনাই ক্ষেত্রী (২০)। তাঁর বাড়ি হেমতাবাদের বাঙালবাড়ি এলাকায় হলেও পীরপুকুরে তিনি বাবা-মা’র সঙ্গে ভাড়া বাড়িতে থাকতেন। তিনি পেশায় সেল্সম্যান ছিলেন। রাত ৯টা নাগাদ কাজ শেষ করে বাড়ি ফেরেন। তার পরে দুষ্কৃতীরা বাড়িতে চড়াও হয়ে পেটে গুলি করে পালায়। আশঙ্কাজনক অবস্থায় প্রথমে রায়গঞ্জ জেলা হাসপাতাল পরে শিলিগুড়ির উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পথে ওই যুবকের মৃত্যু হয়।
এই খুনের ঘটনায় জড়িত সন্দেহে মৃতের বাড়ির মালিক তথা স্পিনিং মিলের কর্মী জয়া ভৌমিক এবং তাঁর মেয়ে সুদীপাকে পুলিশ গ্রেফতার করেছে। ঘটনার মূল অভিযুক্ত বীরনগর এবং উকিলপাড়ার দুই যুবককে পুলিশ খুঁজছে। সুদীপা রায়গঞ্জ কলেজের প্রথম বর্ষের ছাত্রী। ধৃতদের এদিন আদালতে তোলা হলে বিচারক ১১ অক্টোবর পর্যন্ত জেল হেফাজতে রাখার নির্দেশ দিয়েছেন।
উত্তর দিনাজপুরের জেলা পুলিশ সুপার দীপঙ্কর ভট্টাচার্য বলেন, “প্রেমঘটিত কারণে ওই যুবককে খুন করা হয়েছে বলে প্রাথমিক তদন্তের পরে মনে হচ্ছে। মৃত যুবক যে বাড়িতে ভাড়া থাকতেন সেই বাড়ির কর্ত্রী এবং তাঁর মেয়েকে গ্রেফতার করা হয়েছে। মূল অভিযুক্ত দুই যুবককে দ্রুত গ্রেফতার করা হবে।”
মৃতের বাবা অরুণ ক্ষেত্রী জেলা হাসপাতালের চতুর্থ শ্রেণির কর্মী। মা অঞ্জু দেবীও হাসপাতালের অস্থায়ী কর্মী। অরুণবাবুরা কর্মসূত্রে রায়গঞ্জে থাকেন। ধৃত জয়দেবীর স্বামী রাজেন ভৌমিক কয়েক বছর আগে মারা যান। ১৯ বছর বয়সী মেয়ে সুদীপা নিয়ে ওই বাড়িতে থাকেন। ওই বাড়িতেই অরুণবাবু স্ত্রী, ছেলেকে নিয়ে ভাড়া থাকেন। প্রাথমিক তদন্তের পরে পুলিশ জানিয়েছে, সুদীপার সঙ্গে বীরনগর এলাকার এক যুবকের সম্পর্ক রয়েছে। সম্প্রতি তাঁদের বিয়ের কথাবার্তা হয়। সোনাই সম্প্রতি সুদীপাকে প্রেমের প্রস্তাব দেন। ওই কলেজ ছাত্রী তা প্রত্যাখ্যান করায় গত শুক্রবার যুবক তাঁকে কটুক্তি এবং শ্লীলতহানির চেষ্টা করেন বলে অভিযোগ।
পুলিশের অনুমান, ওই তরুণীর প্রেমিক বিষয়টি জানার পরেই ওইদিন রাতে এক সঙ্গীকে সোনাই-এর উপর চড়াও হয়ে গুলি করে বলে অভিযোগ। মা ও মেয়ের সামনে ঘটনাটি ঘটেছে বলে অভিযোগ। মৃতের মা অঞ্জুদেবী বলেন, “সমস্ত মিথ্যা অভিযোগ। আমার ছেলে কারও কটুক্তি বা শ্লীলতাহানি করেনি। পুলিশ তদন্ত করলেই সব স্পষ্ট হয়ে যাবে।” ধৃত জয়াদেবী এবং তাঁর মেয়ে সুদীপা পুলিশের কাছে দাবি করেছেন, তাঁদের ফাঁসানো হয়েছে। জয়া দেবীর সন্দেহ, সোনাইয়ের সঙ্গে কারও পুরানো শত্রুতার জেরেই ঘটনাটি ঘটেছে। |