থানায় ‘মারধরে’ মৃত্যু, সাসপেন্ড এএসআই
ন্দেহের বশে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল থানায়। সেখানে ‘পুলিশের মারে’ অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন। বালুরঘাট জেলা সদর হাসপাতালে ভর্তি করানো হলেও সোমবার সন্ধ্যায় মারা গেলেন দক্ষিণ দিনাজপুরের কুমারগঞ্জের যুবক রাজু রায় (২৪)। ‘পুলিশের মারেই’ রাজুর মৃত্যু হয়েছে বলে বাড়ির লোক অভিযোগ করায় বালুরঘাট থানার এক অ্যাসিস্ট্যান্ট সাব ইন্সপেক্টরকে সাসপেন্ড করেছেন পুলিশ সুপার চিরন্তন নাগ। প্রশান্ত বর্মন নামে ওই অফিসারের বিরুদ্ধে অনিচ্ছাকৃত খুনের মামলাও রুজু হয়েছে। তবে অভিযোগ মানেননি প্রশান্তবাবু।
পুলিশ সুপার বলেন, “যে অফিসার ওই যুবককে মারধর করেছেন বলে অভিযোগ মিলেছে, তাঁকে সাসপেন্ড করা হয়েছে। অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ঘটনার তদন্ত করছেন। মেডিক্যাল-বোর্ড গড়ে মৃত যুবকের ময়না-তদন্ত করানো হয়েছে।” পাশাপাশি, বালুরঘাট থানার আইসি-র ভূমিকাও খতিয়ে দেখার নির্দেশ দিয়েছেন জেলা পুলিশ কর্তৃপক্ষ। পুলিশ সুপারের বক্তব্য, “তদন্তে সব স্পষ্ট হয়ে যাবে।”
মৃত রাজু রায়ের শোকাহত বাবা। ছবি: অমিত মোহান্ত
গোয়ায় শ্রমিকের কাজ করতেন রাজু। সেখান থেকেই কুমারগঞ্জের মাঝিনা এলাকার বাড়িতে ফিরছিলেন। ২২ সেপ্টেম্বর, বৃহস্পতিবার রাতে বালুরঘাট বাসস্ট্যান্ডে বাস থেকে নামেন ওই যুবক। কিন্তু কুমারগঞ্জ যাওয়ার গাড়ি না পেয়ে ঘোরাঘুরি করছিলেন। সেই সময় সন্দেহের বশে পুলিশ তাঁকে গ্রেফতার করে থানায় নিয়ে গিয়ে একপ্রস্ত মারধর করে বলে অভিযোগ। বাড়ির লোকের দাবি, রাজুর সঙ্গে থাকা মোবাইল, ৫০ হাজার টাকা এবং অন্যান্য জিনিসপত্র বাজেয়াপ্ত করা হয়। শুক্রবার আদালত থেকে জামিন পান রাজু। শনিবার তিনি থানায় যান বাজেয়াপ্ত হওয়া জিনিসপত্র চাইতে এলে তাঁকে ফের ‘মারধর’ করা হয়। মৃতের বাবা দ্বিজেন্দ্রনাথ রায়ের অভিযোগ, “ছেলেই আমাকে বলেছে, ওই সময়ে এএসআই প্রশান্তবাবু ওকে ফের মারধর করেন। খবর পেয়ে থানায় গেলে ‘রাজুকে আমরা সুস্থ ভাবে নিয়ে যাচ্ছি’, এই মর্মে উনি আমাদের দিয়ে মুচলেকা লিখিয়ে তাড়িয়ে দেন। বাড়ি ফিরে রাজু বমি করতে শুরু করে। বুকের যন্ত্রণায় ও ছটফট করছিল।” রবিবার রাজুকে হাসপাতালে ভর্তি করান বাড়ির লোকেরা। বালুরঘাট হাসপাতালের সুপার বুদ্ধদেব মণ্ডল বলেন, “চোট, আঘাতের কথা বলায় সার্জিকাল ওয়ার্ডে ওই যুবকের চিকিৎসা চলছিল। উনি বুকে যন্ত্রণার কথা বলছিলেন।”
থানা ঘেরাও তৃণমূলের। —নিজস্ব চিত্র
রাজুর মৃত্যুর খবর চাউর হতেই এ দিন তাঁর আত্মীয়, পড়শিরা থানায় গিয়ে বিক্ষোভ দেখান। হাসপাতালে যান তৃণমূলের জেলা সহ-সভাপতি প্রবীর রায়। তাঁর নেতৃত্বই পরে দফায় দফায় বিক্ষোভ হয়। প্রবীরবাবু বলেন, “মুখ্যমন্ত্রী পুলিশকে সংবেদনশীল এবং নিরপেক্ষ ভাবে কাজ করতে বলেছেন। অথচ এক নিরীহ যুবককে সন্দেহের বশে ধরে মারধর এবং তার জেরে মৃত্যুর ঘটনা মেনে নেওয়া যায় না। দোষীদের শাস্তির দাবিতে আন্দোলন চলবে।” জেলা কংগ্রেস সভাপতি নীলাঞ্জন রায়ের বক্তব্য, “প্রকৃত দুষ্কৃতীদের বিরুদ্ধে বালুরঘাট থানা কী ব্যবস্থা নেয়, আমরা জানি। অথচ, রাজুর মত নিরীহ যুবককে পিটিয়ে মারার অভিযোগ উঠেছে। আমরা আন্দোলনে নামছি।’’
অভিযুক্ত এএসআই প্রশান্তবাবু অবশ্য দাবি করেছেন, “সন্দেহজনক ভাবে ঘোরাঘুরি করায় ওই যুবককে ধরা হয়েছিল। উনি বাড়ির ঠিকানাও ঠিক বলেননি। পরে ওই যুবককে তাঁর মোবাইল, ৯ হাজার টাকা এবং জিনিসপত্র ফেরত দিয়ে দেওয়া হয়। মারধর করার বা অন্য অভিযোগ আদৌ ঠিক নয়।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.