পিতৃপক্ষের অবসান হয়ে সূচনা হয়েছে দেবীপক্ষের। কাউন্ট ডাউন শুরু হয়ে গিয়ে পুজোর। হাতে গোনা কয়েকটা দিন। সেজে উঠছে মণ্ডপ। প্রতিমার সাডসজ্জাতেদম ফেলার ফুরসত নেই। এত হাঁকডাকের মাঝে তবু পুজোর বাজার কেমন যেন মিইয়ে রয়েছে বসিরহাটে। এই সময় দোকানে দোকানে ভিড়ে ঠেলাঠেলির পরিবর্তে ফাঁকায় ফাঁকায় ঘুরছেন ক্রেতারা। আশানুরূপ ভিন না হওয়ায় দোকানদারও ম্রিয়মান।
এমনটা হওয়ার কারণ বর্তমান জিনিসপত্রের আকাশছোঁয়া বাজারদর। অনন্ত দোকানদার থেকে ক্রেতা সকলেই এ ব্যাপারে একমত। তার উপর পুজোর মাস খানেক আগে থেকেই অসুরের ভূমিকায় অবতীর্ণ হওয়া ঘন ঘন বৃষ্টি। হিঙ্গলগঞ্জ, সন্দেশখালিতে আয়লার ক্ষত, স্বরূপনগরে প্লাবিত গ্রামের মানুষজনের কেনাকাটা করার মতো অবস্থা নেই। বসিরহাট শহরের বাজারে ক্রেতার ভিড় না থাকার এটাও অন্যতম প্রধান কারণ বলে মনে করচেন দোকানদারেরা। দিনভর খদ্দেরের আশায় রাস্তার দিকে তাকিয়ে থাকা। পুজোর প্রাক্কালেও আক্ষরিক অর্থেই মনমরা মহকুমার ব্যবসায়ীরা। ক্রেতা না থাকায় তাঁরা চিন্তিত। পুজোর খরচ উঠবে কি না তা নিয়েই সংশয়ে। তবে, সব দোকানের অবস্থা সমান নয়।
কয়েক বছর আগে ঘটে যাওয়া আয়লার ক্ষত এখনও দগদগে হয়ে রয়েছে সুন্দরবন-সহ বসিরহাট মহকুমার মানুষের মনে। আজও অনেক পরিবারের দিন গুজরান হয় পলিথিনের নীচে। প্রথমে নোনা জল জমে থাকা এবং পরে অতিরিক্ত বৃষ্টির কারণে এ বার সুন্দরবনের অধিকাংশ এলাকায় ফসল হয়নি। কাজের খোঁজে সেখানকার বহু মানুষ ভর ছেড়ে ভিন্ রাজ্যে পাড়ি দিয়েছেন। সুন্দরবনের প্রত্যন্ত এলাকায় এখনও হাহাকার। এঁদের কাছে এ বারের উৎসব তাই অনেকটাই মলিন। দু’বেলা পেট পুরে খাবার জুটছে না অনেকের। নতুন পোষাক তাঁদের কাছে এখন দুরাশা।
গত দু’মাস ধরে জল জমে থাকায় স্বরূপনগরের বেশ কয়েকটি গ্রামের মানুষের অবস্থাও একই রকম। অনেক গ্রামে কোনও রকমে পুজোর আয়োজন করা হয়েছে। অনেক জায়গায় তা-ও হচ্ছে না। ফলে গ্রাম-গঞ্জ থেকে কেনাকাটা করতে আসার ভিড়টাও অনেকটাই কমেছে এ বার। ব্যবসায়ী অবশ্য এখনও আশায় রয়েছেন, সেষ ক’টা দিনে নিশ্চয়ই ভিড়ে উপছে পড়বে দোকান।
|