মারা গেলেন সিপিএমের মুর্শিদাবাদের প্রাক্তন জেলা সম্পাদক মধুসূদন বাগ। বয়স হয়েছিল ৮৪ বছর। ২০০৪ সাল পর্যন্ত তিনিই ছিলেন জেলা সিপিএমের প্রায় শেষ কথা। বার্ধক্যজনিত কারনে ওই বছর তিনি সরে গিয়েছিলেন। তবে কাগজে কলমে ২০০৮ সাল পর্যন্ত তিনিই জেলা সম্পাদক ছিলেন। বেলডাঙা সম্মেলনে ২০০৮ সালে তাঁর জায়গায় জেলা সম্পাদক নির্বাচিত হয়েছিলেন নৃপেণ চৌধুরী। প্রসঙ্গত, সোমবারই দলের রাজ্য সম্পাদকের উপস্থিতিতে নৃপেণবাবুকে সরিয়ে জেলা সম্পাদক করা হয়েছিল মৃগাঙ্ক ভট্টাচার্যকে।
এ দিন মৃগাঙ্কবাবু বলেন, “বেশ কয়েক বছর ধরে তিনি বার্ধক্য জনিত কারণে ভুগছিলেন। দিন কয়েক আগে অবস্থার অবনতি হয়। সোমবার ১টা ৫৫ মিনিটে দলের জেলা কার্যালয়ের কমিউনে তিনি শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন।” ১৯৮০ সালে দলের মুর্শিদাবাদ জেলা সম্পাদকের দায়িত্ব গ্রহণ করেন মধুবাবু। দীর্ঘ ২৪ বছর ওই পদে ছিলেন তিনি।” তবে মৃত্যুর সময়ও তিনি দলের রাজ্য কমিটি ও জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য ছিলেন তিনি।
মঙ্গলবার বিকালে বহরমপুরের খাগড়া শ্মশানে তাঁর সৎকার হয়। তার আগে কংগ্রেস, বামফ্রন্টের শরিক দল-সহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও গণসংগঠনের পক্ষ থেকে তাঁকে শেষ শ্রদ্ধা জানানো হয়। তিনি রেখে গেলেন তিন ছেলে, এক মেয়ে, অসংখ্য রাজনৈতিক সহকর্মী।
মধুবাবুর জন্ম নবগ্রামের মাধুনিয়া গ্রামে। কৃষক আন্দোলনের মধ্য দিয়ে তাঁর রাজনীতিতে হাতেখড়ি। ১৯৫৩ সালে অবিভক্ত কমিউনিস্ট পার্টির সদস্যপদ লাভ করেন। ১৯৬২ সালে চিন-ভারত যুদ্ধের সময় এবং ১৯৬৫ সালে ভারত-পাকিস্থান যুদ্ধের সময় তাঁকে কারারুদ্ধ করা হয়। ১৯৬২ সালে কংগ্রেস জামানায় তিনি নবগ্রামের অমৃতকুণ্ড পঞ্চায়েতের প্রধান নির্বাচিত হয়েছিলেন। তার পর ১৯৭৮ সালে তিনি মুর্শিদাবাদ জেলাপরিষদের সভাধিপতি হন। মৃগাঙ্ক ভট্টাচার্য বলেন, “মধুদা বরাবর দলের জেলা কার্যালয়ের কমিউনে থাকতেন। ১৯৮০ সালে দলের তৎকালীন জেলা সম্পাদক সত্য চন্দ্রের মৃত্যু হয়। তার পরই জেলা সম্পাদক হন তিনি।” রাজ্যের পরিষদীয় প্রতিমন্ত্রী কংগ্রেসের মনোজ চক্রবর্তী বলেন, “মধুদা ছিলেন শিশুর মতো সরল। ওই সারল্যের গুণে তিনি বিরোধী মতাবলম্বীদেরও শ্রদ্ধা অর্জন করেছেন। তাঁর আচার-ব্যবহারে সকলেই মুগ্ধ। তিনি বিরল প্রকৃতির রাজনীতিক ছিলেন।” |