ফুটবলারদের বিরুদ্ধে চাঞ্চল্যকর গোপন রিপোর্ট দেওয়ার দায়ে অভিযুক্ত মোহনবাগান কোচ স্টিভ ডার্বি। আরও দুটি অভিযোগও আপাতত তাঁর বিরুদ্ধেব্ল্যাকমেলিং এবং ধৈর্যহীনতা।
একা একা প্র্যাক্টিস চালিয়ে যাওয়া ডার্বির সঙ্গে কেন আর যোগাযোগ রাখছেন না বড় কর্তারা, এই প্রশ্ন নিয়ে রহস্য ছিল। এখন পরিষ্কার, কোচের ওই গোপন বার্তাই কর্তাদের উপেক্ষার প্রধান কারণ।
এই চরম-তিক্ত পরিস্থিতিতে আজ বা কাল ইউ বি প্রতিনিধির সঙ্গে বৈঠকে বসছেন মোহনবাগান কর্তারা। ইউ বি-কে বোঝাতে, যাতে ডার্বিকে কোনওমতেই রাখা না হয়। তাতে তিক্ততা বাড়বে। ইউ বি রাজি হলে আপাতত একমাত্র বিকল্প সুব্রত ভট্টাচার্য। পুণের তিনটি ম্যাচের পরেই কর্তাদের তিনটি রিপোর্ট দিয়েছিলেন ডার্বি। রয়্যালের কাছে হারের পরে বলেছিলেন, তাঁর নিকটাত্মীয় খুব অসুস্থ। “তেমন হলে আমি ২৮ তারিখের পরে নাও থাকতে পারি।” লাজংয়ের কাছে দ্বিতীয় ম্যাচে হারের পরে গোটা চারেক ফুটবলারের মানসিকতা নিয়ে প্রশ্ন তুলে দেন। দলগঠন, টিমস্পিরিট নিয়েও সূক্ষ্ম প্রশ্ন ছিল। গোলকিপার থেকে স্ট্রাইকার, সবাইকে নিয়ে অসন্তুষ্টি ছিল। কর্তারা ওই ঘটনায় তাজ্জব। কোনও বিদেশি কোচ যে শুরুতেই ফুটবলারদের বিরুদ্ধে আঙুল তুলতে পারেন, তা ভাবতেও পারেননি তাঁরা। তার পর থেকেই তাঁরা বিকল্প কোচের সন্ধান শুরু করেন।
তৃতীয় ম্যাচে মোটামুটি ভাল খেলে ড্র করার পরে পুরোপুরি পাল্টে যান মোহনবাগান কোচ। তিনি কর্তাদের জানান, অসুস্থতা নিয়ে অত চিন্তা নেই। কর্তারা এ বার অবাক হন তাঁর বারবার মতবদলের জন্য। আরও দৃঢ়প্রতিজ্ঞ হয়ে পড়েন, ইউ বি-কে রাজি করাতে হবে কোচ বদলানোর জন্য। ডার্বি তিনটি বার্তাই পাঠান ইউ বি কর্তাদের। কর্তাদের ধারণা, ইউ বি সমস্যার কথা বুঝবে। এ সব নানা অভিযোগের জন্যই কি ডার্বিকে এত দ্রুত সরানোর কথা চলছে? সহ সচিব সাংসদ সৃঞ্জয় বসুকে এ নিয়ে প্রশ্ন করলে তিনি বলেন, “প্লেয়ারদের নিয়ে উনি রিপোর্ট দিয়েছেন কি না জানি না। যদি দিয়ে থাকেন, তা হলে সেটা দুর্ভাগ্যজনক। তবে জানি না, ম্যাচে হারের পরেই চলে যাওয়ার কথা বলাটা কীসের পেশাদারিত্ব? যদি উনি ২৮ তারিখের পরে সত্যিই চলে যেতেন, কী হত তা হলে? আমাদের তো বিকল্প কোচের কথা ভাবতেই হত। শুধু কর্মকর্তাদের অপেশাদারিত্ব নিয়ে লেখালেখি হয়। কিন্তু কোচের দিক থেকে এটা কীসের পেশাদারিত্ব দেখানো হল?”
মোহন সচিব অঞ্জন মিত্রও স্পষ্ট ইঙ্গিত দিলেন, তাঁরা ডার্বিকে আর চান না। সে যতই তিনি প্র্যাক্টিস চালিয়ে যান। মোহনবাগানে কোচ প্র্যাক্টিস চালাচ্ছেন, আর কর্তারা সেখানে না এসে অন্যত্র গজরাচ্ছেন, এমন দৃশ্য দেখা যায়নি আগে। সম্ভবত ফেডারেশন কাপ ফাইনালে ইস্টবেঙ্গল বনাম সালগাওকরের দিনই সম্পূর্ণ পরিষ্কার হয়ে যাবে, মোহনবাগান কোচের দায়িত্ব কার হাতে থাকবে। |