টাইগার পটৌডিকে কখনও খেলতে দেখিনি, কিন্তু দেখা হয়েছে বহু বার। বরাবরই মনে হয়েছে আভিজাত্যে মোড়া দারুণ মানুষ। সব সময় ভারতীয় ক্রিকেটের ভাল চেয়ে এসেছেন এবং এ জন্য কোথাও কখনও আপস করেননি। ২০০৭-এর পরে ২০১১-তেও ভারত-ইংল্যান্ড সিরিজের জন্য বরাদ্দ পটৌডি ট্রফি রেখে দিতে পারলে অবশ্যই তাঁর ভাল লাগত, কিন্তু সেটা হয়নি। চার বছর আগে আমরা পটৌডি ট্রফি জেতার পরে তাঁর উজ্জ্বল মুখের অভিব্যক্তি এখনও মনে করতে পারি। যেমন মনে পড়ছে এ বার ইংল্যান্ডে ট্রফি দেওয়ার সময় তাঁর চোখ-মুখের বিষণ্ণতা। পটৌডি ট্রফিটা ধোনিরা জিতলে নিশ্চয়ই খুব খুশি হতেন। ভারতে তো বটেই, গোটা পৃথিবীতে ক্রিকেটের সঙ্গে জড়িত সবাই তাঁর জন্য শ্রদ্ধায় অবনত দেখে দারুণ অনুভূতি হচ্ছে। তাঁর আত্মার শান্তি কামনা করি আর পরিবারকে জানাই শুভেচ্ছা।
চ্যাম্পিয়ন্স লিগের কথায় আসি। এই মরসুমে কলকাতা নাইট রাইডার্স ভাল খেলছে এমন একটা কথা শুনছি। প্রশ্ন হল, এই মুহূর্তে কি আমরা সেটা বিচার করার জায়গায় আছি? আইপিএল-৪-এ ওরা ৫০ শতাংশ ম্যাচ জিতেছে। আর চ্যাম্পিয়ন্স লিগে তিনটে ম্যাচে দু’টো হার। রেডব্যাকসের এই ম্যাচটা যাই হোক না কেন, আরও কয়েকটা ম্যাচ বাকি আছে। যা করার কেকেআর-কে তাড়াতাড়ি করতে হবে।
এ বারের টুর্নামেন্টের একটা দিক হল, বেশির ভাগ ভারতীয় টিম একই কেন্দ্রে বেশি ম্যাচ খেলার সুযোগ পাচ্ছে। যেমন হায়দরাবাদে কেকেআর, বেঙ্গালুরুতে মুম্বই ইন্ডিয়ান্স। বেশি ম্যাচ হচ্ছে বলে উইকেট শুকনো হচ্ছে আর স্পিনাররা সাহায্য পাচ্ছে। যাতে বিদেশি ক্রিকেটারদের ব্যাট করা কঠিন হচ্ছে। এই ব্যাপারটা ভারতীয় দলগুলোকে কাজে লাগাতে হবে। বড় বাজেটের টুর্নামেন্ট। কিন্তু ব্রডকাস্টাররা কিছুটা খুশি হবে কারণ বড় আর্থিক ক্ষতি এবং দর্শক দূরে থাকা সত্ত্বেও ক্রিকেটের মানটা বেশ ভাল হচ্ছে। বেশি লোক না হওয়ার কারণ ইংল্যান্ডে ভারতের খারাপ পারফরম্যান্স আর বেশির ভাগ ফ্র্যাঞ্চাইজির ঘরের মাঠে না খেলা। তাই দর্শকদের সেই আগ্রহ নেই। এখন পর্যন্ত চ্যাম্পিয়ন্স লিগে কম বাজেটের টিমগুলো মুশকিলে ফেলে দিচ্ছে নামী টিমগুলোকে। ছোট টিমগুলো বুঝেছে এই ফর্ম্যাটে দরকার ডাকাবুকো ক্রিকেট। আউট বা মার খাওয়ার ভয়ও পাচ্ছে না, কারণ ম্যানেজমেন্টের কাছ থেকে সে রকম চাপ নেই। অন্য দিকে নামী টিমগুলো কম সাফল্য পাচ্ছে এবং হারলেও বড় ব্যবধানে হারছে। এর থেকে কী বোঝা যাচ্ছে? এক, একই প্লেয়ারকে রেখে দেওয়া কি এই ফর্ম্যাটে সাফল্যের চাবিকাঠি, যাতে অনেক খোলা মনে তারা খেলতে পারে? সে দিক দিয়ে দেখলে তো চেন্নাই সুপার কিংস ছাড়া সব ফ্র্যাঞ্চাইজিগুলোই একটা সাধারণ মরসুমের পর টিম আমূল পাল্টে ফেলেছে। প্রশ্ন হল, বারবার বদল কী ঠিক? না কি একই টিম ধরে রাখা? যেমন আমি নিশ্চিত প্রথম ম্যাচটা হারলেও ধোনি ও ছেলেরা অনেক খোলা মনে খেলবে। মুম্বই ইন্ডিয়ান্সের কথায় আসি। বড় ক্রিকেটারদের ছাড়া প্রথম দু’টো ম্যাচ বেরিয়ে গেলেও শেষ চারে যেতে অনেক লড়তে হবে। পাঁচটা বিদেশি ক্রিকেটার খেলার অনুমতি পেয়েছে ওরা। যাতে অন্য সবার মতো আমিও অবাক। চোটের জন্য টুর্নামেন্টের নিয়ম বদল করা কি যুক্তিসঙ্গত? দেখব গভর্নিং কাউন্সিল ভবিষ্যতে অন্য টিমের কাছ থেকে এই অনুরোধ পেলে কী করে। |