দিনেদুপুরে দোকানে ঢুকে এক স্বর্ণ ব্যবসায়ীকে গুলি করে খুন করল দুষ্কৃতীরা। দোকানের সামনে তখন বেশ কয়েক জন লোক ছিলেন। তাঁদের সামনেই আগ্নেয়াস্ত্র উঁচিয়ে দোকানের সিন্দুক গাড়িতে তুলে চম্পট দেয় তারা। পরে গাড়িটি আটকায় পুলিশ। অক্ষত অবস্থায় উদ্ধার হয়েছে সিন্দুকটিও। দু’জনকে আটক করা হয়েছে।
মঙ্গলবার বেলা সাড়ে ১০টা নাগাদ হুগলির চণ্ডীতলার কুমিরমোড়া স্টেশন এলাকা তখন দিব্যি জমজমাট। কিছু ক্ষণ আগেই দোকান খুলেছিলেন ভগবতীপুর মোল্লাচকের বাসিন্দা শেখ সামসুল (২৮)। হাওড়ার দিক থেকে একটি ট্যাক্সি এসে দাঁড়ায় দোকানের সামনে। হাতে বোমা-আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে নেমে আসে জনা পাঁচেক দুষ্কৃতী। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, দোকানে ঢুকে সামসুলের কাছ থেকে সিন্দুকের চাবি চায় তারা। দুষ্কৃতীদের সঙ্গে কথা কাটাকাটি শুরু হয়। আশপাশে লোক জমে যায়। দুষ্কৃতীরা তাদের বন্দুক দেখিয়ে বলে, টাকা নিয়ে ঝামেলা চলছে। কেউ যেন এর মধ্যে না জড়ায়। নিহতের ভাই শেখ আসরাফুলও ছিলেন দোকানে। তিনি বলেন, “তর্কাতর্কির সময়ে হঠাৎই এক দুষ্কৃতী গুলি চালিয়ে দেয়। দাদার বুকের বাঁ দিকে গুলি লাগে।” সিন্দুক তুলে নিয়ে দুষ্কৃতীরা দৌড়ে ওঠে ট্যাক্সিতে।
দুর্গাপুর এক্সপ্রেসওয়ে ধরে দুষ্কৃতীদের ট্যাক্সি চলে যায়। খবর যায় চণ্ডীতলা থানায়। কিছু ক্ষণের মধ্যেই ডানকুনিতে দুর্গাপুর এক্সপ্রেসওয়ের সার্ভিস রোড থেকে গাড়িটিকে আটক করে পুলিশ। গাড়িতেই সিন্দুকটি পাওয়া যায়। সেখান থেকে দুই দুষ্কৃতীকে পুলিশ আটক করে। তাদের কাছ থেকে গুলিভর্তি দু’টি ওয়ান শটার পাওয়া গিয়েছে। এ দিনই সামসুলের দেহ ময়না-তদন্ত করা হয় শ্রীরামপুর ওয়ালশ হাসপাতালে।
পুলিশি নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগ তুলে বিক্ষোভে ফেটে পড়ে জনতা। সামসুলের দোকানের সামনে এবং চণ্ডীতলা থানার সামনে অহল্যাবাঈ রোডে অবরোধ শুরু হয়। একদল লোক থানায় ঢুকে বিক্ষোভ শুরু করে। অভিযোগ, এলাকায় দুষ্কৃতীদের দৌরাত্ম্য বেড়েই চলেছে। পুলিশ নির্বিকার। এলাকায় পুলিশ ফাঁড়ি তৈরির দাবি উঠেছে। বিক্ষোভ সামলাতে ঘটনাস্থলে আসেন হুগলির অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (শিল্পাঞ্চল) অমিতাভ বর্মা এবং শ্রীরামপুরের এসডিপিও রাজনারায়ণ মুখোপাধ্যায়। অভিযোগ খতিয়ে দেখা হবে বলে পুলিশকর্তারা আশ্বাস দেন। বেলা পৌনে ৩টে নাগাদ অবরোধ ওঠে। গুরুত্বপূর্ণ এই রাস্তায় দীর্ঘ সময় অবরোধে বিশাল যানজট তৈরি হয়। |