|
|
|
|
জাগো অসুরবিনাশিনী... |
কুমোরটুলি হোক বা পুজোমণ্ডপ, সাজ সাজ শহর জুড়ে |
নিজস্ব সংবাদদাতা |
এক দিকে কুমোরটুলিতে কাজ শেষ করার চূড়ান্ত ব্যস্ততা, অন্য দিকে মণ্ডপ গড়ার দায়িত্বে থাকা শিল্পী-কারিগরদের দৌড়। মঙ্গলবার, দেবীপক্ষের শুরুর দিনে এ ভাবেই পুজো-প্রস্তুতির শেষ পর্যায়ে সামিল হল শহর কলকাতা।
নিম্নচাপ ও লাগাতার বৃষ্টিতে মার খেয়েছিল মণ্ডপ ও প্রতিমা গড়ার কাজ। কুমোরটুলির শিল্পীরা জানিয়েছেন, ফ্যান চালিয়ে ও ব্লো-ল্যাম্পের সাহায্যে প্রতিমা শুকোতে হয়েছে। তার পরে হয়েছে রঙের কাজ। তা সত্ত্বেও এ দিন কুমোরটুলি থেকে একের পর এক প্রতিমা বেরিয়ে কাঁধে বা ট্রাকে চেপে রওনা দিয়েছে মণ্ডপের উদ্দেশে। তবে এখনও কিছু প্রতিমার কাজ বাকি। সেগুলি শেষ করতে উঠেপড়ে লেগেছেন কুমোরটুলির শিল্পীরা। তাঁদেরই এক জন, স্বপন পাল বলেন, “এ বছর গোটা পনেরো প্রতিমা গড়েছি। তার মধ্যে দশটি আজই মণ্ডপে চলে গিয়েছে।” অন্য কয়েকটি স্টুডিওয় অবশ্য এ দিনও ফ্যান চালিয়ে প্রতিমা শুকোতে দেখা গিয়েছে।
মঙ্গলবার থেকে বৃষ্টি আর ভয় না দেখালেও প্রতিমা নিয়ে যাওয়ার পথে সাবধানতার খামতি রাখেননি পুজো উদ্যোক্তারা। অনেকগুলি প্রতিমা এ দিন রওনা দিয়েছে প্লাস্টিকের চাদরে মুড়ে। এ দিন কুমোরপাড়ায় হাজির হয়েছিলেন বহু সাধারণ মানুষ। টালা থেকে এসেছিল বছর বিশ-বাইশের একটি দল। ইতিউতি ঘোরার ফাঁকে তাঁরা ধরে রাখছিলেন নানা খণ্ডচিত্র। ছিলেন ক্যামেরা হাতে বিদেশিরাও। |
|
তুমি জাগো: নিয়ম মেনে মহালয়ার সকালে প্রতিমার চোখ আঁকা চলছে।
কুমোরটুলিতে, মঙ্গলবার। ছবি: দেশকল্যাণ চৌধুরী। |
লাগাতার বৃষ্টিতে ক্ষতি হয়েছে বিভিন্ন পুজো মণ্ডপেরও। কিন্তু সে সমস্যা কাটিয়ে উঠতে এ দিন যুদ্ধকালীন তৎপরতায় কাজ শুরু হয়েছে। মঙ্গলবার বাগবাজার সর্বজনীনের পুজো মণ্ডপে গিয়ে দেখা গেল, কাজ চলছে। ভিতরে চলছে প্রতিমা রঙ করার কাজও। মণ্ডপ চত্বরে বিভিন্ন দোকান তৈরির কাজ প্রায় শেষের পথে। একই ছবি দেখা গিয়েছে উত্তর কলকাতার অন্যান্য পুজো মণ্ডপেও। তবে, দক্ষিণ কলকাতার যোধপুর পার্কের মতো কয়েকটি পুজো মণ্ডপের কাজ অবশ্য মহালয়ার দিনই শেষ হয়ে গিয়েছে। আর কিছু জায়গায় বৃষ্টিতে কাজ নষ্ট হয়ে যাওয়ায় ফের রঙের কাজ করতে হচ্ছে বলে মণ্ডপ শিল্পীদের একাংশ জানিয়েছেন। শেষ পর্যায়ের কাজ চলছে নিউ আলিপুর সুরুচি সঙ্ঘের মণ্ডপেও।
মহালয়ার ভোরে শহরের বিভিন্ন এলাকায় প্রভাতফেরি বেরিয়েছিল। দক্ষিণ কলকাতার ত্রিধারা সম্মিলনীর উদ্যোগে ছ’টি ট্যাবলো ও ঘোড়ার গাড়ি নিয়ে প্রায় ৫০০ জন প্রভাতফেরিতে বার হন। ঢাক বাজিয়ে প্রভাতফেরি করেন সল্টলেকের বিএ ব্লকের বাসিন্দারাও।
অন্যান্য বছরের মতো এ দিন ভোর থেকেই তর্পণ ও গঙ্গাস্নানের জন্য ভিড় জমেছিল গঙ্গার ঘাটগুলিতে। কলকাতার বিভিন্ন বাজারেও এ দিন ঢল নেমেছিল ক্রেতাদের। হাতিবাগান থেকে গড়িয়াহাট, বিভিন্ন দোকানের বাইরে পর্যন্ত লাইন পড়ে গিয়েছিল সাধারণ মানুষের। ভিড় সামলাতে অনেক ক্ষেত্রেই নাজেহাল হয়েছেন পুলিশকর্মীরা। সন্ধের পর, ভিড়ের দাপটে এ দিন মধ্য কলকাতায় যানজটও হয় বলে ট্রাফিক পুলিশ সূত্রের খবর। |
|
|
|
|
|